সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের ডেপুটেশন নির্বাচন কমিশনে
নিউজ ডেস্ক::রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে ৮ জুলাই। মনোনয়নপত্র তোলা ও জমা দেওয়া নিয়ে শাসক দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারপিটের ঘটনা যেমন ঘটছে, তেমনই আক্রান্ত হচ্ছে বিরোধী রাজনৈতিক দল।
এই আবহে ভোটার ও ভোটকর্মীদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানাল সংগ্রামী যৌথ মঞ্চ। রাজ্য সরকারি কর্মচারী সংগঠনের প্রতিনিধিরা আজ গেলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশন দফতরে। আট দফা দাবিতে ডেপুটেশনও জমা দিলেন।
২০১৩ ও ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত নির্বাচনে যে অশান্তির বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল সেই একই অভিজ্ঞতার সাক্ষী যাতে এবার হতে না হয় সেই দাবিই জানালেন রাজ্য সরকারি কর্মীরা। রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা অন্য কাজে ব্যস্ত থাকায় যুগ্ম সচিবের কাছেই ডেপুটেশন জমা দেন তাঁরা।
রাজীব সিনহা সরকারি কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে আশ্বাস মিলেছে। সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের তরফে ভাস্কর ঘোষ বলেন প্রায় ৭৪ হাজার বুথের সুরক্ষার জন্য রাজ্যে পর্যাপ্ত পুলিশকর্মী নেই। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় সশস্ত্র বাহিনী এনে তাদের থানায় বসিয়ে না রেখে সক্রিয় ভূমিকা পালনের বন্দোবস্ত করার দাবি জানানো হয়েছে।
রাজকুমার রায়ের হত্যার উদাহরণ টেনে রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা বলেন, আমরা পরিবারকে তো ভেসে যেতে দিতে পারি না। ভোটগ্রহণ পর্ব, এমনকী ভোটের ফলাফল বেরিয়ে যাওয়ার পরেও সরকারি কর্মচারীদের নানারকম হামলা, হুমকি, হেনস্থার মুখে পড়তে হয়েছে। সবমিলিয়ে রাজ্য পুলিশের প্রতি অনাস্থাই দেখান সরকারি কর্মচারীরা।
সরকারি কর্মচারী সংগঠন বুঝিয়ে দিয়েছে, রাজ্য পুলিশে আপত্তি নেই, কিন্তু পর্যাপ্ত নিরাপত্তা প্রদানের জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী দরকার। রাজ্য পুলিশ নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে কিনা তা নিয়েও সংশয় রয়েছে সংগ্রামী যৌথ মঞ্চের। তাঁদের দাবি মানা না হলে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন সংগঠনের সদস্যরা।
কেন্দ্রীয় বাহিনীর দাবির পাশাপাশি ডেপুটেশনে আরও যে দাবিগুলি জানানো হয়েছে তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো, প্রিসাইডিং অফিসারের ডায়েরি ইত্যাদি জমা করার সময় আরসিতে তার পিডিএফ কপি জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। নয়তো অতীতে আরসিতে তথ্য বিকৃতির ঘটনা দেখা গিয়েছে। পিডিএফ কপি পোর্টালে তুলে তবেই প্রিসাইডিং অফিসারকে রিলিজ করতে হবে।
এসএমএস বেসড রিপোর্টিং ফরম্যাট চালু করতে হবে যাতে তা সরাসরি কমিশনের কেন্দ্রীয় সার্ভারে জমা হয়। এতে প্রিসাইডিং অফিসার ভোট চলাকালীন নিরাপত্তার অভাব বোধ করলে অভিযোগ জানাতে পারবেন। যাতে সংশ্লিষ্ট সকলের কাজে দ্রুত বার্তা যায়।
ভোটকেন্দ্রে রাত্রিবাসের উপযুক্ত পরিবেশ, স্বাস্থ্যকর খাবার ও পানীয় জলের বন্দোবস্ত রাখতে হবে। বুথে যেন পর্যাপ্ত আলো থাকে। পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের ক্ষেত্রে যেন অনিয়মিত কর্মচারীরা যুক্ত হতে না পারেন। অবৈধ অনুপ্রবেশকারীর গতিবিধি নিয়ন্ত্রণে ভোট গণনা কেন্দ্রে ত্রিস্তরীয় নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার দাবিও জানানো হয়েছে।