কলকাতা হাইকোর্টে ধাক্কা রাজ্যের
নিউজ ডেস্ক::কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা-র হত্যাকাণ্ডের তদন্তভার সিবিআইকে দিল কলকাতা হাইকোর্ট। বেঁধে দেওয়া হলো সময়সীমাও। তদন্ত শেষ করে চার মাসের মধ্যে আদালতকে রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার।
রাজ্য সরকারের তরফে আদালতকে শুনানি চলাকালীন বলা হয়, খুনের ঘটনার কিনারা করার খুব কাছে রয়েছেন তদন্তকারীরা। এখন তদন্ত হস্তান্তর করা হলে তা বড় ধাক্কা খাবে। যদিও সেই যুক্তিকে মানতে চাননি বিচারপতি।
কয়লা পাচার মামলায় অভিযুক্ত রাজু ঝা ইডির কাছে হাজিরা দেওয়ার আগেই খুন হয়ে যান। তাঁর সঙ্গে একই গাড়িতে ছিলেন আবদুল লতিফ, যাঁর নাম কয়লা মামলার চার্জশিটেও রয়েছে। শক্তিগড়ে একটি ল্যাংচার দোকানের সামনে গুলিবিদ্ধ হন রাজু ঝা। পিছনের সিটে বসে থাকা ব্রতীন মুখোপাধ্যায়ের হাতে গুলি লাগে। তবে তারপর থেকে বেপাত্তা ছিলেন লতিফ।
ফলে কয়লা মাফিয়া রাজুর খুনে কয়লা মামলার যোগাযোগ থাকতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে। কলকাতা হাইকোর্ট রাজ্যের দুর্নীতিদমন শাখাকে অবিলম্বে নির্দেশ দিয়েছে সিবিআইয়ের হাতে দ্রুত কেস ডায়েরি তুলে দেওয়ার। চার মাসের মধ্যে সিবিআইকে এই তদন্ত শেষ করতেও বলেছে হাইকোর্ট।
বিচারপতি বলেছেন, রাজু ঝা কয়লা মামলায় চার্জশিটে অভিযুক্ত না হলেও ২০১৫ সাল থেকে নানা অভিযোগে অভিযুক্ত। যেহেতু কয়লা ও গরু পাচারের মামলা সিবিআই তদন্ত করছে, আর দুটি ঘটনায় রাজুর যোগ আছে তাই আদালত মনে করে রাজু ঝা খুনের তদন্ত সিবিআই করুক। আদালত নিশ্চিত, এই খুনের সঙ্গে কয়লা পাচার মামলার কিছু যোগ আছে।
বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এই তদন্ত সিবিআইয়ের হাতে না গেলে কয়লা পাচার মামলার তদন্তও ধাক্কা খাবে। কোনও কোনও অভিযুক্ত মনে করছেন সিবিআইয়ের হাতে তদন্ত গেলে আমি রক্ষা পাবো। কেউ আবার ভাবছেন রাজ্যের হাতে তদন্ত থাকলে আমার সুবিধা। সিবিআই জানায় তদন্তভার নিতে তারা প্রস্তুত।
রাজু ঝা-র স্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করেন, কয়লা ও গরু পাচারের তদন্তে খুনের তদন্ত প্রক্রিয়া না হারিয়ে যায়। উল্লেখ্য, খুনের ১৯ দিন পর অভিজিৎ মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়। অভিজিৎ আসানসোলের এক কুখ্যাত কয়লা মাফিয়ার গাড়ির চালক। ঘটনায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করার পাশাপাশি অভিজিৎকে জিজ্ঞাসাবাদে মেলে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য।
যে গাড়িতে করে দুষ্কৃতীরা এসে গুলি চালায় তার মালিক ইন্দ্রজিৎ গিরি ও লালবাবু কুমারকে গ্রেফতার করে সিট। এবার সিবিআই তদন্ত করতে নামলে আরও কারা গ্রেফতার হয় বা তদন্তের অভিমুখ কোনদিকে যায় সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।