পঞ্চায়েত বোর্ড গঠন ঘিরে জেলায় জেলায় অশান্তি অগ্নিগর্ভ পরিস্তিতি

0 0
Read Time:4 Minute, 34 Second

স্নেহা ঘোষ :পশ্চিমবঙ্গের ভোট পর্বে রক্ত ঝড়বে না এমনটা হয় না। কিন্তু এবছর রাজ্য রাজনীতিতে ভোটপর্বের শুরুটা অন্যান্য বছরের তুলনায় অন্যরকম ছিল । পঞ্চায়েত ভোটের ঘোষণার দিন থেকেই একের পর এক হিংসা এবং রাজনৈতিক মৃত্যুর খবর শিরোনামে উঠে এসেছে। মনোনয়ন পর্বেও দেখা দিয়েছে সেই একই ছবি। ভোটের দিনও উত্তর থেকে দক্ষিণ মৃত্যু মিছিল সর্বত্র। বিস্ফোরণ এ প্রাণ গেছে অনেকের । এমন রক্তক্ষয়ী পঞ্চায়েত নির্বাচন যে তৃণমূল সরকারের আমলে হবে,‌ তা কি কেউ ভেবেছিলেন? কিন্তু বাস্তবে সেটাই হয়েছে। আর বোর্ড গঠনকে ঘিরে জেলায় জেলায় অশান্তি তুঙ্গে।

প্রসঙ্গত , বিপক্ষের জয়ী সদস্যদের অপহরণের অভিযোগ উঠছে তৃণমূলের বিরুদ্ধে। যাতে বিরোধীরা বোর্ড গঠন করতে না পারে সেই কারণেই অপহরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
আর তেমনই একটি পরিস্থিতিতে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়লেন আইএসএফ বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকী। হুগলির ফুরফুরায় বোর্ড গঠনকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন তিনি। তার আগে ফুরফুরা জুড়ে ব্যাপক অশান্তি হয়। বোমাবাজির পাশাপাশি গুলি চলার অভিযোগ ওঠে। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে পথ অবরোধ করে বিরোধীরা। আইএসএফের অভিযোগ, “পুলিশ প্রশাসন তৃণমূলের হয়ে কাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে অভিযোগ উঠেছে ফুরফুরায় নওশাদ এক পুলিশকর্মীকে তুই তোকারি করে কথা বলেছেন।”

যে ঘটনায় অবাক সবাই। কারণ বরাবরই নওশাদকে শান্ত ধীরস্থির মেজাজে কথা বলতে দেখা যায়। কাউকে অসম্মান করেন না তিনি।

বলা বাহুল্য , নওশাদের দল ইতিমধ্যেই সংখ্যালঘু ভোটে ভাগ বসিয়েছে। রাস্তায় নেমে গণতান্ত্রিক আন্দোলন করতে গিয়ে নওশাদকে চল্লিশ দিনের বেশি জেলবন্দি থাকতে হয়েছিল। কিন্তু তখন ও তিনি ঠান্ডা মেজাজেই ছিলেন । নওশাদের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের করেছেন এক মহিলা, যিনি সক্রিয় তৃণমূল কর্মী।অভিযোগ, এটা একেবারেই ভিত্তিহীন । রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবেই এই অভিযোগ নওশাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে বলে আইএসএফের দাবি।

ভাঙড়ে অশান্তির পর দীর্ঘদিন নওশাদ নিজের বিধানসভা কেন্দ্রে ঢুকতে পারেননি। বার বার আবেদন করা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের কাছ থেকে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা পাননি তিনি। কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়ে নিরাপত্তা পেতে হয়েছে তাঁকে। কেন্দ্রীয় নিরাপত্তা পেয়েছেন তিনি। সব মিলিয়ে নওশাদের স্বল্প রাজনৈতিক কেরিয়ার যে অস্থিরতায় ভরা তা নিয়ে কোনও সন্দেহ নেই। তবে কি এই সব ঘটনার জন্যই তিনি এমন মেজাজি হতে বাধ্য হয়েছিলেন ?

তৃণমূল ক্ষমতায় আসার সময় বলেছিল, বদলা নয়, বদল চাই। কিন্তু কোথায় কী! সবমিলিয়ে এখনও যেভাবে বিভিন্ন জেলায় হিংসার আবহ রয়েছে তাতে উদ্বেগ বাড়ছে সব মহলে। সিপিএম আমলে পঞ্চায়েত নির্বাচনকে ঘিরে যে ব্যাপক হিংসা দেখা দিয়েছিল, তার বদল ঘটবে তৃণমূল আমলে, এটাই প্রত্যাশিত ছিল। সেখানে পঞ্চায়েত নির্বাচন ও ফলাফল প্রকাশকে ঘিরে হিংসার পাশাপাশি এবার বোর্ড গঠন নিয়েও অশান্তি হচ্ছে, যা কিনা সিপিএম আমলে দেখা যায়নি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!