ইন্ডিয়া জোটে থাকলেও, সমন্বয় কমিটিতে কোনও প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে না সিপিআইএম
ইন্ডিয়া জোটে থাকলেও, সমন্বয় কমিটিতে কোনও প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে না সিপিআইএম। দু’দিনের পলিটব্যুরোর বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলার সিপিআইএমের দাবিতেই পলিটব্যুরোর সিদ্ধান্ত বলে সূত্রের খবর। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য সমন্বয় কমিটিতে বামেদের প্রতিনিধি হিসেবে রয়েছে সিপিআই-এর ডি রাজা।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, পলিটব্যুরোর বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই আন্দোলনে থাকলেও কোনও কমিটির সঙ্গে থাকছে না সিপিআইএম। পাশাপাশি বাংলায় তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই-আন্দোলন আরও জোরদার করা হবে।
দেশে বিজেপি বিরোধী INDI অ্যালায়েন্স (INDIA) তৈরিতে সিপিআইএমের বড় ভূমিকা থাকলেও সমন্বয় কমিটির বৈঠকে তারা থাকছে না। ফলে শেষ পর্যন্ত এই জোটে ক’টি দলকে দেখা যাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ। তবে দুদিনের এই পলিটব্যুরোর বৈঠকের আগে হওয়া সিপিআইএম রাজ্য কমিটির বৈঠকে দেশব্যাপী বিরোধী জোটের প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কেউ প্রশ্ন তোলেনি।
জোটের প্রয়োজনীয়তার কথা মেনে নিলেও, রাজ্যে তৃণমূলের থেকে দূরত্ব বজায় রেখে চলার ভাবনা থেকেই সমন্বয কমিটিতে না থাকার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সিপিআইএম মনে করে এই জোটের ফলে বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলি এক জায়গায় আসছে। কিন্তু রাজ্যের ক্ষেত্রে দলের কর্মী-সমর্থকদের কাছে ভুল বার্তা যেতে পারে। ভুল ব্যাখ্যাও হতে পারে।
প্রসঙ্গত সম্প্রতি হওয়া ধূপগুড়ি উপনির্বাচনে দেখা গিয়েছে, সিপিআইএম পেয়েছে ৬ শতাংশের মতো ভোট। কিন্তু একই জায়গায় কিছুদিন আগের পঞ্চায়েত ভোটে তারা পেয়েছিল ১২ শতাংশের মতো ভোট। বিজেপি এই ভোটের প্রচারে পটনা ও বেঙ্গালুরুতে জোটের বৈঠক এবং একমঞ্চে মমতা-ইয়েচুরির থাকা নিয়ে ব্যাপক প্রচার চালায়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ বলছেন, রবিবার সিপিআইএম পলিটব্যুরোর সিদ্ধান্তে সিপিআইএম বার্তা দিল রাজ্যে তৃণমূলের থেকে তারা দূরত্ব বজায় রেখেই কাজ করছে। অন্যদিকে সারা দেশে বিজেপির বিরুদ্ধে তারা জোরদার আন্দোলনের পক্ষেই মত প্রকাশ করছে।
এই সিদ্ধান্ত নিয়ে সিপিআইএম নেতা সুজন চক্রবর্তী সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে যার বিরুদ্ধে তদন্ত হচ্ছে, ছেলেমেয়েরা রাস্তায় বসে আছে, টাকা পাচার ও অন্য নানা বিষয়ে যাঁরা যুক্ত তাঁদের সঙ্গে সিপিআইএম মঞ্চ শেয়ার করবে, একথা কেউ ভাবতে পারেন, কিন্তু তার সঙ্গে বাস্তবের কোনও মিল নেই।
তবে সমন্বয় কমিটি নিয়ে সিপিআইএমের সিদ্ধান্ত যে খানিকটা এইদিকে যাচ্ছে, তার ইঙ্গিত মিলেছিল রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিমের কথা। দিন চারেক আগে সমন্বয় কমিটিতে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্য চেয়ার ফাঁকা নিয়ে তিনি বলেছিলেন, তারা পাদুকা রাখতে পারত। রামায়নেও এমন দৃষ্টান্ত রয়েছে। তিনি বলেন, ভগবান রামের পাদুকা সিংহাসনে রাখা হয়েছিল, যখন তিনি ১৪ বছরের বনবাসে গিয়েছিলেন।