মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো পুজোর উপহার ফিরিয়ে দিলেন বিজেপির মহিলা বিধায়কেরা
নিউজ ডেস্কঃ বাংলার শাসক – বিরোধী তরজা দীর্ঘ সময় ধরে চলছে। এক টেবিলে বসে কথা বলার জায়গা পর্যন্ত নেই। শাসক বিরোধী আক্রমণ প্রতি আক্রমণে সরগরম থাকে রাজ্য রাজনীতি। দুর্গাপুজোর উপহার নিয়েয়াও দেখা গেল রাজনীতি। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপহার ফিরিয়ে দিলেন বিজেপি বিধায়করা।
দুর্গাপুজো বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব। সেই উৎসবে মাতোয়ারা থাকে বাঙালিরা। পরিজন, পরিচিত, প্রিয়জনদের মধ্যে উপহার দেওয়া নেওয়ার প্রথম দীর্ঘ সময় ধরে চলে আসছে। এবার মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে সেই উপহার বিজেপি বিধায়কদের কাছে গিয়েছিল। কিন্তু পরে সেই উপহার ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এই ঘটনা ফের রাজ্য রাজনীতিতে সৌজন্য ও অসৌজন্যতার বার্তা তুলে ধরল। কিন্তু ঘটনাটা কী? জানা গিয়েছে, দুর্গাপুজো উপলক্ষে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিধানসভার মহিলা বিধায়কদের উপহার পাঠিয়েছিলেন। মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে প্রত্যেক মহিলা বিধায়কের কাছে শাড়ি পাঠানো হয়েছে। তৃণমূলের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য দলের বিধায়ক, মন্ত্রীদের উদ্দেশ্যে সেই শাড়ি নিয়ে গিয়েছিলেন। বিধানসভায় সেই শাড়ি তিনি দলের বিধায়কদের কাছে তুলে দিয়েছেন।
বিজেপি বিধায়কদের জন্যেও শাড়ি উপহার হিসেবে পাঠানো হয়েছিল। রাজ্যের সাত জন বিজেপির মহিলা বিধায়ক রয়েছেন। তাদের জন্য উপহার নিয়ে গিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। কিন্তু পরে জানা যায়, বিজেপির তরফ থেকে সেই উপহার গ্রহণ করা হয়নি। মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া শাড়ি ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
গত সপ্তাহে মুখ্যমন্ত্রী তরফ থেকে এই উপহার পাঠানো হয়। বিধানসভায় বিরোধীদের ঘরে গিয়ে এই উপহার সামগ্রী রেখে এসেছিলেন ববি হাকিম। কিন্তু কেন এই উপহার ফিরিয়ে দিলেন বিজেপি নেতৃত্ব? বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথাতেই কি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হল? বিজেপি কেন এমন অসৌজন্যের রাজনীতি করল? এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
পুজোর উপহার দেওয়া নেওয়া তো সৌজন্যের রাজনীতি। এখানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সৌজন্য দেখাচ্ছেন। তাহলে শাড়ি ফিরিয়ে কোন বার্তা দিতে চাইল বিজেপি শিবির? এই নিয়ে তৃণমূলের অন্দরেয়াও যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। বিধানসভায় অতীতে এমন ঘটনা ঘটেনি। তাও বলা হচ্ছে।
বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, বাংলার মুখ্যমন্ত্রী সৌজন্যের রাজনীতি করেন না। বিধানসভায় বিরোধীদের কথা বলার অধিকারটুকু নেই। কোনওভাবেই বিজেপি বিধায়কদের সঙ্গে সৌহার্দের সম্পর্ক এই সরকার রাখে না। সে কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দেওয়া উপহার গ্রহণ করা হচ্ছে না। শুধু তাই নয়, বিজেপি বিধায়করা সেই সময় ঘরে উপস্থিত ছিলেন না। ফিরহাদ হাকিম কিছু না বলেই ওই শাড়ি তাদের ঘরে রেখে আসেন বলে বিজেপির তরফে বলা হয়েছে। এই নিয়েও ক্ষুব্ধ বিজেপি বিধায়করা।
কামদুনি কাণ্ডে রাজ্যে রীতিমত চর্চা শুরু হয়েছে। সরকারের ব্যর্থতার জন্যই নিম্ন আদালতে শাস্তি পাওয়া দোষীরা হাইকোর্টে ছাড়া পেয়ে গেল। বিজেপির তরফ থেকে একথা অভিযোগ করা হচ্ছে। এছাড়াও বহু বিজেপি কর্মীদের মারা হচ্ছে। মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে। এইসব চলার পর মুখ্যমন্ত্রীর তরফ থেকে শাড়ি নেওয়া যায় না। এ কথাও বিজেপির পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে।