প্রবাসের দুর্গাপুজো – লন্ডন
নিউজ ডেস্কঃ ব্রিটানের ৬৪টি দুর্গাপুজোর মধ্যে অন্যতম পুজো হিথরো বিমান বন্দর সংলগ্ন ‘হউনসলো ক্যানফোর্ড কমিউনিটির কলেজের আদিশক্তি পুজো’। ব্রিটিশরা ভারত ছাড়ার বহু আগের থেকে কিছু কিছু বাঙালি ভিড় জমাতে শুরু করে লন্ডনে। ১৯৪৭এর প্র এই যাত্রার গতি অনেক বেড়ে যায়। প্রবাসী বাঙালিদের উয়োগেই শুরু হয় প্রথম লন্ডনে দুর্গাপুজো। তারপর এক এক করে বৃদ্ধি পেতে পেতে এখন ব্রিটেনে মোট ৬৪টি দুর্গা পুজো হয়। দুর্গা পুজো মানেই বাঙালির আবেগ। আর সেই আবেগেই ভেসে যায় প্রবাসী বাঙালিরা।
ব্রিটেনের মাটিতে ৬৪টি দুর্গাপুজোর মধ্যে হিথরো বিমান বন্দরের কাছে হউনসলো ক্যানফোর্ড কমিউনিটির কলেজের আদিশক্তির এ বছরের পুজো সাত বছরে পা দিল। লন্ডনে আদিশক্তি কমিটির আরেক বিশেষত্ব হল এখানে শুধু বাঙালিই নয়, অবাঙালিরাও এই পুজো কমিটির এক বিশেষ অঙ্গ। বাঙালিরা দুর্গাপুজোর সাথে গড়বা, ডান্ডিয়া নৃত্যের আয়োজন আদিশক্তির পুজোর আনন্দকে আরো দ্বিগুন করে। বাঙালি অবাঙালি নয়, শুধু হিন্দুরাই নয়, এই পুজোতে অংশ নেয় অনেক খ্রিস্টানও। যা চাঁদা ওঠে তার একটা বড়ো অংশ দেয় লন্ডনের অন্যান্য ধর্মের মানুষেরা।
এই পুজোতে আসলে মনে হবে কোলকাতার কোনো পুজো মন্ডপে আছেন। কমবেশি সকলেই একটু ভাঙা বাংলায় কথা বলেন। এখানে এলে মায়ের বোধন, অঞ্জলি, প্রসাদ বিতরণ, সিঁদুর খেলা, সবই মনে করায় ফেলে আসা কলকাতার কথা। পাশাপাশি গড়বা, ডান্ডিয়া মনে করায় অখণ্ড ভারতবর্ষের কথা। এ বছর আদিশক্তির বিশেষ আকর্ষণ হল মা দুর্গা এসেছেন কুমারটুলি থেকে। ষষ্ঠী থেকে দশমী, মায়ের বোধন থেকে অঞ্জলি, ভোগ বিতরণ, সন্ধি পুজো, আরতি, সিঁদুর খেলা সবই হবে নিয়ম মেনে। এখনে পুজোর নিষ্ঠা বাংলা থেকে একটুও কম নয়।
এই পুজোর আরেকটি বড়ো বৈশিষ্ট্য সকলের বাড়িতে সপ্তমী থেকে দশমী পর্যন্ত অরন্ধন। সকালের প্রাতরাস থেকে একেবারে নৈশভোজ সবই হয় পুজো মন্ডপে। প্রতিদিন দরিদ্র মানুষের জন্য থাকে খাবার ব্যবস্থা। এই পুজো কমিটি অনেক সামাজিক কর্তব্য করে সাড়া বছর ধরে। পুজোর সময় তার ব্যতিক্রম হয় না। আদিশক্তির পুজোর মেনুতে থাকবে সারা ভারতের খাবার। নিয়ম মেনে মায়ের বিদায়বেলায় হবে ধুনুচি নাচ। সিঁদুরে রাঙা হবে বঙ্গতনয়াদের মুখ। এবছর অদিশক্তির পুজোতে সঙ্গীতানুষ্ঠান হবে বর্ণাঢ্য। এছাড়া নাটক, কবিতা সবই হবে আগের মতো। পুজোর শেষে পুজো কমিটির উদ্যোক্তারা গৃহহীনদের নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রী বিতরণ করার মধ্য দিয়ে সামাজিক দায়িত্ব পালনের একটা নজির রাখে প্রতিবাছর ।