TV9 বাংলার নতুন নিউজ সিরিজ ‘সিঙ্গুর: শিয়রে সর্বনাশ!’, দেখুন ৫ নভেম্বর, রবিবার রাত ১০টায়
নিউজ ডেস্ক: ২০০৭ সাল। বিপুল সংখ্যা গরিষ্ঠতা নিয়ে বাম সরকারের মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধুদেব ভট্টাচার্য। তাঁর প্রচেষ্টায় হুগলীর সিঙ্গুরে ৯৯৭ একর জমি অধিগ্রহণ করা হয় শিল্প স্থাপনের জন্য।টাটাদের সঙ্গে চুক্তি হয়, ন্যানো কারখানা স্থাপিত হবে। প্রত্যক্ষ কর্ম সংস্থান হবে কয়েক হাজার। অনুসারী শিল্প মিলিয়ে আরো কয়েক হাজার কর্ম সংস্থানের সুযোগ। তখন বিরোধী নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুরু হয় রাজনৈতিক লড়াই – কৃষি বনাম শিল্প। সেই লড়াইয়ের পরিণতিতেই টাটারা সিঙ্গুর ত্যাগ করে চলে যান গুজরাটে। সেটা ছিল বাংলার রাজনীতির একটা অধ্যায়। তারপর ক্ষমতায় আসে নতুন সরকার। তার পর জমি অধিগ্রহণ অবৈধ ছিল বলে সুপ্রিম কোর্টের রায়, সেই জমিতে তৈরি কারখানা গুঁড়িয়ে দেওয়া, জমি প্রত্যর্পণ, সেখানে সর্ষে চাষ– গল্প যে ফুরোয়নি। তিন সদস্যের সালিশি ট্রাইবুনালের রায়ে তা স্পষ্ট হয়েছে সম্প্রতি। সম্প্রতি রায়ে স্পষ্ট যে টাটাদের প্রায় ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হওয়ার পরেও তাদের চলে যেতে হয়।
আর এখন ট্রাইবুনাল নির্দেশ দিয়েছে, টাটা মোটরস-কে ক্ষতিপূরণ দেবে পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগম। সুদে-আসলে অঙ্কটা ১৩৫০ কোটি টাকার কাছাকাছি। সম্ভবত মামলা-মোকদ্দামায় জল গড়াবে আরও। এই ট্র্যাজিক-কাহিনিতে সহজে পর্দাও পড়বে না। সেই কাহিনির কেন্দ্রীয় চরিত্র যে পশ্চিমবঙ্গ, বা বলা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে তাতে সংশয় নেই। সাধারণ মানুষের করের টাকা কি তাহলে শুধু শিল্পমেধ যজ্ঞেই বরবাদ হবে? প্রশ্ন উঠেছে নিজের রাজনৈতিক স্বার্থে টাটাদের তাড়ানো হয়েছে। এবার এই বিপুল ক্ষতি কেন দেবে রাজ্যের সাধারণ মানুষ।
সেদিনের মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন,কর্মসংস্থানের স্বার্থেই পশ্চিমবঙ্গে শিল্পস্থাপন জরুরি ছিল। কিন্তু সিঙ্গুর-পর্বে রাজ্যের স্বার্থ ছাপিয়ে সেই সময়কার বিরোধী নেত্রী এবং তাঁর দলের দম্ভ প্রধান হয়ে দাঁড়িয়েছিল। অন্যদিকে ক্ষমতারই দম্ভে রাজ্যের সর্বনাশ ও নিজেদের রাজনৈতিক ভরাডুবি ডেকে এনেছিল তখনকার শাসকদল সিপিএম। এই শিল্পমেধ যজ্ঞে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক লাভ হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু তার মূল্য পশ্চিমবঙ্গকে এখনও চোকাতে হচ্ছে। ভবিষ্যতেও হবে। এ কেমন রাজনীতি?
সালিশি ট্রাইবুনালের রায়ের পর দেড় দশকের এই ট্র্যাজেডি নিয়ে কী বলছেন সিঙ্গুরবাসী বা সেখানকার ইচ্ছুক-অনিচ্ছুক চাষিরা ? হাতেগরম প্রতিক্রিয়া জানতে তাঁদের কাছে গিয়েছিলেন TV9 বাংলার প্রতিনিধিরা। কর্মসংস্থানের হাহাকারেরই কারণে রাজ্য বড় শিল্প যে জরুরি, কোথাও কোথাও আয়োজন করা হলেও শিল্পের ভাগ্যে এখনও শিকে ছেঁড়েনি। সেই কাহিনিও তুলে ধরেছে TV9 বাংলা। সেই সময় বাম নেতা গৌতম দেব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে অনুরোধ করেছিলেন , কোর্টের বাইরে আপনারা সবাইকে নিয়ে বসে সিঙ্গুর সমস্যার সমাধান করুন। প্রয়োজনে অনিচ্ছুক কৃষকদের কিছু জমি ফেরৎ দিন। কিন্তু কারখানাটা হতে দিন। তা নাহলে ভবিষ্যত প্রজন্ম আপনাকে ক্ষমা করবে না। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হয় নি।
এখন বাঁকা হাসি হেসে সেই তৎকালীন শাসকদল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ঘাড়ে দোষ চাপাতে ব্যস্ত। এখনকার শাসকদলের অবশ্য চাঁদমারি শুধু সিপিএম। পরস্পরের ঘাড়ে দোষ চাপাতে ব্যস্ত দু’পক্ষই। বিজেপিও ঘোলা জলে মাছ ধরতে ব্যস্ত। পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতি বোধহয় শুধু দলেরই স্বার্থ চিনেছে! রাজ্যের স্বার্থ দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে ভাবা সেখানে কষ্টকল্পনা। এমন সব বিষয় নিয়েই TV9 বাংলার নতুন নিউজ সিরিজ 'সিঙ্গুর: শিয়রে সর্বনাশ!'। দেখুন ৫ নভেম্বর, রবিবার রাত ১০টায়। সিঙ্গুরবাসী মতামত ও অর্থনৈতিক বিশ্লেষকদের মতামত শুনুন, জানুন তৎকালীন আর্থ-সামাজিক- রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট।