‘ধর্ম যার যার, বড়মা সবার’
নিউজ ডেস্ক: কালী ভক্তের কাছে নৈহাটির বড়মা এক অন্যতম পীঠস্থান।লোকমুখে শোনা যায় অরবিন্দ রোডের ধর্মশালা মোড়ে আগে রক্ষাকালী পুজোর রীতি ছিল। এবং দিনের দিন পুজো শেষে গভীর রাতেই বিসর্জন দেওয়া হত মা কালী কে। কিন্তু কিছু অজানা কারণবশত সেই পুজো বন্ধ হয়ে যায়। পরে নদিয়া জুটমিলের কর্মী ভবেশ চক্রবর্তী এই কালী পুজোর প্রচলন করেন। সেই থেকেই প্রচলিত হয় নৈহাটির বড়মার পুজো। ২১ ফুট উচ্চতার হয় এই কালীমূর্তি। বড় মা পুজোর মূলমন্ত্র,‘ধর্ম যার যার, বড় মা সবার। ’নৈহাটির প্রচলিত বিশ্বাস বড়মার কাছে কোনও কিছু চাইলে তিনি ভক্তদের ফেরান না। প্রত্যেকের মনস্কামনা পূর্ণ করেন তিনি। ভক্তদের অনেকে আবার মনস্কামনা পূর্ন হলে বড়মার জন্য গয়নাও গড়িয়ে দেন।
অনেক ভক্তদের এই পুজোর দিন গণ্ডি কাটতেও দেখা যায়। দেশ বিদেশ থেকে বহু ভক্তরা মায়ের পুজোর দিন মায়ের দর্শন ও করতে আসেন। মায়ের পুজোর দিন নৈহাটির বাসিন্দারা ধুমধাম করে সকলে মিলে ভোর বেলা থেকেই শুরু করে দেয় মায়ের ভোগ নির্মাণের কাজ। প্রায় ৫ কিলোর বেশি ভোগ রান্না করা হয়। পুজোর ৫ দিনে মাকে পাঁচ রকমের ভোগের দেওয়া হয়। পুজোর রাতে বড়মার ভোগে থাকে পোলাও, খিচুড়ি, পাঁচ রকম ভাজা, তরকারি, লুচি, চাটনি ও পায়েস। তবে আরেকটি জিনিস বেশ আকর্ষণীয় সেটি হল বিসর্জনের আগের দিন রাতে মাকে লাড্ডু ভোগ দেওয়া হয়ে থাকে। বরমার বিসর্জনের আগেই মায়ের ও শিবের চক্ষু ছাড়া অন্য সমস্ত সোনার গয়না খুলে নেওয়া হয়। কিন্তু মাকে বিসর্জনের আগে ফুলের গয়নাও পরানো হয়।
অবশেষে বিশাল এই প্রতিমাকে ট্রলি করে নিয়ে গিয়ে গঙ্গায় বিসর্জন দেওয়া হয়। তবে অন্যান্য বারের তুলনায় এবার বড় মায়ের পুজো একটু বেশি বিশেষ। কারন এতো দিন শুধু কালি পুজো তে মাটির মূর্তি গড়ে পুজো করা হতো আর বছরের বাকি দিন মায়ের ফটো তেই পুজো করা হতো।এই বছর মায়ের নতুন মন্দির তৈরী করে কস্টি পাথরের মূর্তি বসিয়ে শুরু হয়েছে পূজার্চনা। এই নতুন মন্দির তৈরী হতেই ভক্তদের ঢল নেমেছে বড় মায়ের মন্দিরে। কালি পুজোর আগেই ভক্তরা আসছেন পুজো দিতে।এই বিষয়ে নৈহাটি পৌর প্রধান বলেন এবার ৫২ ফুটের বড় মায়ের মূর্তি গড়ে কালী পুজো করা হবে।