দেরিতে হলেও বড় সিদ্ধান্ত মমতার
নিউজ ডেস্কঃ দেরি হলো অনেকটাই। তবে অবশেষে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়কেই বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে বেছে নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটের মঞ্চ থেকেই চমক দিলেন তিনি।রাজ্যে পালাবদলের পর শাহরুখ খানকে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করেছিলেন মমতা। কয়েক মাস আগে সাংসদ দীপক অধিকারী (দেব)-কে ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হতে বলেন। আর আজ মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করলেন সৌরভের নাম।
শাহরুখ খানকে যখন বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাডের করা হয়েছিল তখন থেকেই প্রশ্ন উঠেছিল, বাংলায় সৌরভের মতো ব্যক্তিত্ব থাকতে কেন কিং খানকে বাংলার মুখ করা? ভোটবাক্সে বিশেষ সুবিধা লাভের পরিকল্পনা থেকেই সরকারের এমন পদক্ষেপ বলে অভিমত ব্যক্ত করেছিলেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হওয়ার পর শাহরুখকে বাংলার পর্যটনের প্রচারের বিজ্ঞাপনে দেখা গিয়েছিল। মুখ্যমন্ত্রীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে শাহরুখ অনেকবার এসেছেন কলকাতা চলচ্চিত্র উৎসবেও। শাহরুখ নিজেও বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কের কথা প্রকাশ করেন। এরই মধ্যে বিজেপি-শাসিত ত্রিপুরার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর করা হয় সৌরভকে।
বাংলা তথা দেশের সৌরভ-ভক্তরা তখন ফের সরব হন পড়শি ত্রিপুরা যদি সৌরভকে রাজ্যের মুখ করতে পারে, তাহলে কেন করছে না বাংলা? এরই মধ্যে একটি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, শাহরুখ বেশি সময় দিতে পারছেন না। তাই দেবকে বাংলার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হয়ে পর্যটনের প্রচার ও প্রসারে যুক্ত হতে বলছি।
তখনও মমতা সৌরভের নাম না নেওয়ায় অবাক হন সকলেই। তবে সৌরভকে যখন বিসিসিআই সভাপতির পদ থেকে সরানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছিল তখন সরব হন মমতা। এমনকী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে অনুরোধ করেছিলেন সৌরভ যোগ্যতম বলে তাঁকেই বোর্ড সভাপতি পদে রাখার জন্য। তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়, সৌরভ বিজেপির প্রস্তাব না মানাতেই তাঁকে অন্যায়ের শিকার হতে হচ্ছে।
যদিও রাজনীতি থেকে দূরত্ব বজায় রেখে বাংলার উন্নয়নের কাজে সব সময় নিজেকে নিয়োজিত রেখেছেন। তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে তিনি শালবনীতে ইস্পাত কারখানা গড়ছেন। রাজ্যে লগ্নি করায় তাঁকে কটাক্ষের মুখে পড়তে হয়। যদিও সোজা কথা সোজাভাবে বলা সৌরভ বাংলার শিল্পবান্ধব পরিবেশের কথা তুলে ধরেছেন স্পেন থেকে আজকের বিজিবিএসের মঞ্চেও।
কয়েক বছর আগে ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ছোট উদ্যোগকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল বিশ্ব বাংলা বাণিজ্য সম্মেলনে। তখন টিভি চ্যানেলে একটি অনুষ্ঠানের সঞ্চালনা করেছিলেন রাজ্য সরকারের প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে। সেই অনুষ্ঠানে হাজির করা হয়েছিল উঠতি শিল্পোদ্যোগীদের। তাঁরা নিজেদের অভিজ্ঞতা ভাগ করেছিলেন অন্যদের উৎসাহিত করতে।
আজ বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিটে নিজের বক্তব্যের শেষের দিকে মমতা বলেন, সৌরভ অত্যন্ত জনপ্রিয়। তরুণ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে খুব ভালোভাবে কাজ করতে পারবেন। তাঁকে ব্র্য়ান্ড অ্যাম্বাসেডর হিসেবে ঘোষণা করছি। এই প্রস্তাব গ্রহণ করতে বলব। সব সময় হ্যাঁ বলতে হবে। না নয়। ইতিবাচক ও গঠনমূলক মানসিকতা নিয়ে এগোতে হবে। পজিটিভ থাকতে হবে, ইচ্ছাশক্তি যেন স্ট্রং থাকে। নিজেদের ভাগ্য অন্যেরা যাতে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, সেই বার্তাও দেন মুখ্যমন্ত্রী।