সতেরো দিন অপেক্ষার করুণ পরিণতি!
নিউজ ডেস্কঃ উত্তরকাশীর সিল্কিয়ারা টানেলে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিক বেরিয়ে এসেছেন মঙ্গলবার রাতে। প্রাথমিকভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার পরে তাঁদের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নজরদারিতে রাখা হয়েছে। সবার বাড়িতেই খুশির হাওয়া, শুধু একজন বাদে।একচল্লিশজনের মধ্যে একজন এতটাই হতভাগ্য যে সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে আসার পরেই শোনেন তাঁর বাবা মারা গিয়েছেন। ভক্তু মুর্মু নামে ওই শ্রমিক ঝাড়খণ্ডের পূর্ব সিংভূম জেলার বাসিন্দা। বাবার মৃত্যুর সংবাদ শোনার সঙ্গে সঙ্গে ভক্ত কান্নায় ভেঙে পড়েন।
অন্য সবার মতোই ভক্তু মুর্মুই আশাবাদী ছিলেন, সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পরে বাবা-মা-সহ পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে দেখা হবে। কিন্তু তাঁর কপালে অন্য কিছু লেখা ছিল। প্রসঙ্গত সুড়ঙ্গে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিকের মধ্যে ঝাড়খণ্ডের ছিলেন ১৫ জন। আর এই ১৫ জনের মধ্যে পূর্ব সিংভূম জেলার ডুমারিয়া ব্লকের ছিলেন ছয় জন।
এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত খবর অনুযায়ী, ২৯ বছর বয়সী ভক্তু মুর্মু পূর্ব সিংভূম জেলার বঙ্কিশিল পঞ্চায়েতের বহদা গ্রামের বাসিন্দা। ৭০ বছর বয়সী বাবা বাসেত মুর্মু ছেলের সুড়ঙ্গে আটকে থাকার খবর পেয়েছিলেন এবং ছেলের ফিরে আসার অপেক্ষায় ছিলেন। পাশাপাশি নজর রাখছিলেন ছেলের মুক্তি পাওয়ার খবরেও।
জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার সকালের খাবার খাওয়ার পরে খাটের ওপরে বসে থাকা অবস্থাতেই পড়ে যান তিনি। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, বারে বারে তিনি ছেলের কথাই বলতেন। ছেলের চিন্তাতেই তাঁর মৃত্যু হয়েছে বলে জানাচ্ছেন পরিবারের অন্য সদস্যরা।
পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, ভক্তুর বন্ধু সোঙ্গা বান্দ্রাও সেই সুড়ঙ্গে কাজ করেন। কিন্তু দুর্ঘটনার সময় তিনি ছিলেন বাইরে। ছেলের বন্ধুর মাধ্যমেই ভক্তুর বাবা খোঁজখবর রাখছিলেন। কিন্তু মাঝে মধ্যেই তাঁকে অস্থির ও চিন্তিত দেখাত।
ভক্তুর পরিবারের সদস্য এবং গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ১২ নভেম্বর দুর্ঘটনার খবর তাঁরা পেয়েছিলেন বন্ধু সোঙ্গা বান্দ্রার থেকে। কোনও সরকারি আধিকারিক এই ক’দিনে খোঁজখবর করেননি। তাতেও চিন্তিত ছিলেন বাসেত মুর্মু।