কারাগার থেকে কি সরকার চালাতে পারবেন অরবিন্দ কেজরিওয়াল?
নিউজ ডেস্ক ::ইডি ন’টি সমন এড়িয়ে বৃহস্পতিবার দিল্লি হাইকোর্টে রক্ষা কবচের জন্য আবেদন করেছিলেন কেজরিওয়ালের আইনজীবী তথা কংগ্রেস নেতা অভিষেক মনু সিংভি। দিল্লি হাইকোর্ট দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী আবেদন খারিজ করার পরেই কেজরিওয়ালের ভবিষ্যত একরকম নিশ্চিত হয়ে যায়। এরপর সন্ধ্যায় বাড়িতে ইডির আধিকারিকরা দুই ঘন্টা জিজ্ঞাসাবাদের পরে তাঁকে গ্রেফতার করেন।
অরবিন্দ কেজরিওয়াল হলেন দ্বিতীয় বিরোধী মুখ্যমন্ত্রী যাঁকে দুই মাসের মধ্যে ইডি গ্রেফতার করল। এর আগে গত ৩১ জানুয়ারি ঝাড়খণ্ডের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেনকে গ্রেফতার করে ইডি। যদিও গ্রেফতারির আগে মুখ্যমন্ত্রী পদে ইস্তফা দিয়েছিলেন হেমন্ত সোরেন। যা করেননি অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তিনি জেল থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পদ সামলানোর কথা ঘোষণা করেছেন।
গত নভেম্বরে ইডি কেজরিওয়ালকে প্রথম সমন পাঠানোর পর থেকে আপ নেতারা জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী পদত্যাগ করবেন না। বরং কারাগারের ভিতর থেকে সরকার চালাবেন। এদিন কেজরিওয়াল মন্ত্রিসভার মন্ত্রী অতীশি জানিয়েছিলেন, গ্রেফতারের পরে কেজরিওয়াল মুখ্যমন্ত্রীর পদ-ত্যাগ করবেন না। কিন্তু একজন মুখ্যমন্ত্রী গ্রেফতার হওয়ার পরে কী ভাবে কারাগার থেকে সরকার চালাতে পারেন? আইন ঠিক কী বলে?
দেশের রাষ্ট্রপতি এবং রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের রাজ্যপাল এবং লেফটেন্যান্ট গভর্নররা হলেন তেমনই সাংবিধানিক পদাধিকারী, যাঁরা আইন অনুসারে মেয়াদ শেষ না হওয়া পর্যন্ত দেওয়ানি ও ফৌজদারি মামলা থেকে সুরক্ষা পেয়ে থাকেন। এব্যাপারে সংবিধানের ৩৬১ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, এইসব পদাধিকারীদের সরকারি দায়িত্ব পালনে করা কোনও কাজের জন্য কোনও আইন আদালতের কাছে জবাবদিহি করতে হবে না। কিন্তু সেই সুবিধা নেই প্রধানমন্ত্রী কিংবা মুখ্যমন্ত্রীদের ক্ষেত্রে।
সেক্ষেত্রে কারাগারের ভিতরে থেকে মুখ্যমন্ত্রীর অফিস চালানো অবাস্তব। কিন্তু এমন কোনও আইন নেই যা মুখ্যমন্ত্রীকে তা করতে বাধা দিতে পারে। দেসের আইন অনুযায়ী, একজন মুখ্যমন্ত্রীকে তখনই অযোগ্য বা পদ থেকে অপসারিত করা যায়, যখন তিনি কোনও মামলায় দোষী সাব্যস্ত হন। অরবিন্দ কেজরিওয়ালের ক্ষেত্রে তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে, দোষী সাব্যস্ত কবে হবেন কিংবা আদৌ হবেন কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন আছে।
জন প্রতিনিধিত্ব আইন ১৯৫১ অনুযায়ী, কিছু অপরাধের জন্য অযোগ্য ঘোষণার বিধান রয়েছে। তবে থাকা যে কারণে দোষী সাব্যস্ত হওয়া বাধ্যতামূলক। আর মুখ্যমন্ত্রী তাণর পদ তখনই হারাতে পারেন, যখন তার পিছনে বিধানসভায় সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকে বা মুখ্যমন্ত্রীর নেতৃত্বে ক্ষমতায় থাকা সরকারের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব পাশ হয়ে যায়।