শারীরিক নির্যাতন নয়, মৌখিক অপমানই প্রিয়াঙ্কার ‘লজ্জা’
নিউজ ডেস্ক ::শারীরিক নির্যাতন নয়। কোনও কোনও ক্ষেত্রে কথার বিষও যন্ত্রণা দেয় মানুষকে। এবার সেই যন্ত্রণারই গল্প তুলে ধরা হয়েছে হইচইয়ের নতুন ওয়েব সিরিজ ‘লজ্জা’তে। ২২ মার্চ হইচইয়ের ওটিটি প্ল্যাটফর্মে মুক্তি পেয়েছে প্রিয়াঙ্কা সরকার ও অনুজয় চট্টোপাধ্যায় অভিনীত ওয়েব সিরিজ ‘লজ্জা’। অদিতি রায় পরিচালিত এই সিরিজে ব্যবহার করা হয়েছে এমন কিছু কথা যা বর্তমান যুগের আধুনিক মনুষ্য জাতির কাছে জলভাত। কিন্তু এই কথাই কখনও কখনও যে দাম্পত্য জীবনে কাঁটা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তারই উদাহরণস্বরূপ এই সিরিজ।
আপাত দৃষ্টিতে সুখী দাম্পত্য জীবন জয়ার। বাড়ি, গাড়ি, টাকা, স্বামী, সন্তান, শাশুড়ি-সংসারে সব রয়েছে। নেই শুধু শান্তি। স্বামী র কথা অসহনীয় হয়ে ওঠে জয়ার কাছে। আর তাই সিদ্ধান্ত নেয় আলাদা থাকার। স্বামী স্ত্রীর এই অশান্তির মাঝে চলে আসে জয়ার মেয়ে শ্রুতি। ঘটে যায় এক অঘটন। তারপর আরও অসহনীয় হয়ে ওঠে জয়ার জীবন। রাস্তার মাঝে, ঘরে, বাইরে সর্বত্র পার্থ অশ্লীল ভাষায় অপমান করে জয়াকে। সকলের সামনে স্ত্রী জয়াকে ‘বেশ্যা’ সম্বোধনও করে স্বামী পার্থ। এদিকে, বাপের বাড়িতেও বাতিলের তালিকায় পড়ে যায় জয়া। বৌদি ছাড়া তাঁকে বোঝার কেউ থাকে না। কিন্তু সহ্যের সীমা পেরিয়ে গেলে ঘুরে দাঁড়ায় জয়া। সম্মান বাঁচাতে তাই পার্থর বিরুদ্ধে মামলা করে জয়া।
মৌখিক অপমান, অশ্লীল ভাষা যদি বারে বারে বিদ্ধ করে কোনও মানুষের ব্যক্তিত্বকে, সেটা কি নির্যাতন নয়? হিংসা নয়? এই প্রশ্নই তুলেছে ‘লজ্জা’।
হইচইয়ের এই নতুন সিরিজে জুটি বেঁধেছেন প্রিয়াঙ্কা সরকার ও অনুজয় চট্টোপাধ্যায়। জয়ার চরিত্রে প্রিয়াঙ্কার সাবলীল অভিনয় দর্শকের নজর কাড়তে বাধ্য। পার্থর চরিত্রে অনুজয়ের অভিনয়েরও জুড়ি মেলা ভার। খলনায়ক নয় আবার নায়কও নয়। এক অদ্ভূত বাস্তবতাকে এই চরিত্রটিতে তুলে ধরেছেন পরিচালক অদিতি রায়।
এছাড়াও, এই সিরিজে ইন্দ্রাশিস রায়, শাওলি চট্টোপাধ্যায়, স্নেহা চট্টোপাধ্যায়, খেয়ালি দোস্তিদার, ইন্দ্রজিৎ মজুমদার, নমিতা চক্রবর্তীর অভিনয়ও দর্শকের মন জয় করবেই। বিশেষ চরিত্রে কনীনিকা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকাটাও দর্শকবৃন্দের নজর এড়াবে না। নির্দ্বিধায় এই সিরিজ একটানা দেখে ফেলতে মন চাইবে দর্শকের।
একজন মেয়ে ডিভোর্সি নাকি স্বামী-সন্তান নিয়ে সুখে ঘর করছে তা অনেকাংশে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে বহুক্ষেত্রেই। সেই ট্যাবু ভেঙে বেরিয়ে একজন মানুষ যখন নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখে তখনই এমন নানা ধরনের মন্তব্যও ধেয়ে আসে। বিশেষ করে অ্যাডজাস্টমেন্ট শব্দটা কোথাও একটা জড়িয়ে যায় তাঁর সঙ্গে। এমনই এক মেয়ের জীবনের নানা ওঠা-পড়ার গল্পই ওয়েব সিরিজ ‘লজ্জা’য় বুনেছেন পরিচালক অদিতি রায়। এই সিরিজের যে আরও অংশ দেখার সুযোগ মিলবে দর্শকের, তা ‘লজ্জা’র শেষে গিয়ে স্পষ্ট হয়েছে। আপাতত ‘লজ্জা’-র পরের পার্টটার অপেক্ষায় থাকতে হবে দর্শককূলকে।