আইপিএলে ইউসুফ পাঠান!
নিউজ ডেস্ক ::ইউসুফ পাঠান। ভারতের বিশ্বকাপজয়ী দলের সদস্য তথা দু-বারের আইপিএল চ্যাম্পিয়ন কেকেআরের প্রাক্তনীকে বহরমপুরে প্রার্থী করে চমক দিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
বহরমপুর পৌঁছনোর পর থেকেই কর্মী সম্মেলন থেকে শুরু করে নানাবিধ জনসংযোগ কর্সূচিতে ইউসুফ পাঠানকে ঘিরে আগ্রহ তুঙ্গে। রাজনীতির ময়দানে যত অভিজ্ঞতা বাড়ছে, ততটাই বাড়ছে আত্মবিশ্বাস।
এক সাক্ষাৎকারে ইউসুফ পাঠান বললেন, ভালো লাগছে। ভদোররা আমার জন্মভূমি। বহরমপুর, বাংলা আমার কর্মভূমি, এখানে কাজ করতে এসেছি। মানুষের সমস্যা শুনে সেই সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করব। দলীয় সভাতেও পজিটিভ পরিবেশ, পজিটিভ এনার্জি দেখে ভালো লাগছে।
পাঠানের কথায়, ২০১১ সালে কেকেআরে খেলা শুরুর সময় থেকেই কলকাতার মানুষ, বাংলার মানুষ আমাকে তাঁদের পরিবারের একজন ভাবেন। যখন খেলতাম তখন যে ভালোবাসা পেয়েছি, এখন মনে হচ্ছে তার চেয়েও ভালোবাসা পাচ্ছি। আমার বাবা, আমার পরিবারের শিক্ষা, মাটিতে পা রেখে মানুষের পাশে থেকে তাঁদের সাহায্য করা। রাজনীতিতে এসেই সেই লক্ষ্যেই অবিচল থাকব।
তৃণমূল কংগ্রেসকে বেছে নেওয়ার কারণ হিসেবে বললেন, এখানে মমতাদিদি যে পরিকাঠামো গড়েছেন তা প্রশংসনীয়। ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার জন্য নানাবিধ প্রকল্প, এসসি-এসটিদের জন্য প্রকল্প, স্কুলে ড্রপ আউট কমাতে পারা, এই বিষয়গুলি উল্লেখযোগ্য দিক। আমার মনে হয়, সঠিক সিদ্ধান্তই নিয়েছি। মানুষের পাশে থেকে কাজের সুযোগ মিলবে।
মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ইউসুফকে সবরকমের সহযোগিতা প্রদানের আশ্বাস দিয়েছেন। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বলেছেন, অধীর রঞ্জন চৌধুরী প্রতিপক্ষ হিসেবে পাঠানের কাছে ব্রেট লি। পাঠান তার প্রেক্ষিতে বলেন, আমার ওডিআই অভিষেক পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। বেঙ্গালুরুর পাশাপাশি সেঞ্চুরিয়নে সেঞ্চুরি করেছি, কঠিন পরিস্থিতিতে ম্যাচ জিতিয়েছি। দ্রুত রান তুলতে ভালোবাসি, শেষ ওভারে ছক্কা মারাও পছন্দের।
এরপরই পাঠান বলেন, প্রবীণ-প্রবীণারা এসে হাত মেলাচ্ছেন। তাঁদের চোখের দিকে তাকিয়ে আন্তরিকতা উপলব্ধি করছি। হৃদয়ের আত্মিক যোগ। তাঁরা বলছেন, তুমি এসেছো, আমাদের সমস্যাগুলিও মিটবে। তাঁরা আশীর্বাদ করছেন। সাংসদ নির্বাচিত হলে এখানেই থাকব। যে ভালোবাসা পাচ্ছি, তাতে কেউ আমাকে অন্যত্র যেতে দেবেন না।
ইতিমধ্যেই খোঁজ নিয়েছেন রাজ্য সরকারের নানা প্রকল্প থেকে শুরু করে কোন কোন শিল্পক্ষেত্রে কেমন সম্ভাবনা রয়েছে তা নিয়েও। পাঠান জানালেন, স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরি করতে চাই। এখানে প্রতিভার অভাব নেই। তাঁদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ দিয়ে সোনাজয়ীর সংখ্যা বাড়াতে হবে। এখানকার রেশম শিল্প, হস্তশিল্প বিশ্বখ্যাত। সেগুলির আরও প্রসার ঘটাতে চাই।
রমজান মাস চলছে। রোজা রাখছেন, নমাজ পড়ছেন। ফলে এখনও খুব বেশি বাঙালি খাবার খাওয়ার সুযোগ হয়নি। তবে পাঠানের পাতে পড়েছে বহরমপুরের বিখ্যাত মিষ্টি ছানাবড়া। পাঠান বলেন, আমার বরাবর বাংলার খাবার ভালো লাগে। এখন রমজান মাস চলায় সব কিছু খেতে পারছি না। এমনিতেও আমি কম খাই। তবে ডায়েট করলেও বাংলার রকমারি খাবার, কলকাতা তথা বাংলার মিষ্টি আমার খুব পছন্দের।
আইপিএলের মধ্যে পাঠানও তো আইপিএলে! শুনে কিছুটা অবাক হলেন পাঠান। বলা হলো, আইপিএল চলছে। আর এখন আপনার লড়াই তো আইপিএল, মানে ইন্ডিয়ান পার্লামেন্ট লিগে! শুনে সহাস্য পাঠান বললেন, কেয়া বাত!
বহরমপুরের পিচ কঠিন। ঘূর্ণি পিচে গুগলিও থাকতে পারে। কিন্তু পাঠানের চোখ এখন থেকেই সংসদে। বাবার কথা মেনে মানুষের জন্য কাজ করাই অগ্রাধিকার।