খুনের শাস্তি ৩০২ এ নয়, হবে ১০১-এ!

0 0
Read Time:6 Minute, 35 Second

নিউজ ডেস্ক ::আরও এক বড় বদল ভারতের ইতিহাসে! ব্রিটিশ আমল থেকে চলে আসা তিনটি ফৌজদারি আইন আজ ১ জুলাই থেকে বদলে গেল। গত বছর ডিসেম্বর মাসে নয়া তিন আইন অর্থাৎ ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (Bharatiya Nyaya Sanhita 2023-BNS), ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা (Bharatiya Nagarik Suraksha Sanhita-BNSS) এবং ভারতীয় সাক্ষ্য অধিনিয়ম (Sakshya Adhinium-BSA)।-এ অনুমোদন দেন রাষ্ট্রপতি।

আজ থেকে দেশজুড়ে তা কার্যকর হল। নয়া এই আইন (New Crime Laws) নিয়ে যাতে কোথাও কোনও বিভ্রান্তি না থাকে সে জন্য একাধিক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ভারতীয় দণ্ডবিধিতে ৫১১টি ধারা ছিল, কিন্তু ভারতীয় ন্যায় সংহিতায় ৩৫৮টি ধারা (New Crime Laws) আছে। সংশোধনের মাধ্যমে এতে ২০ টি নতুন অপরাধ যুক্ত করা হয়েছে। ৩৩টি অপরাধে শাস্তির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। ৮৩ টি অপরাধের ক্ষেত্রে জরিমানার অঙ্ক বাড়ানো হয়েছে।

২৩টি অপরাধের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক ভাবে শাস্তির বিধান করা হয়েছে। ছয়টি অপরাধে কমিউনিটি সার্ভিসের শাস্তির বিধান রয়েছে নয়া ন্যায় সংহিতায়।

ধারা ১২৪: আইপিসির ১২৪ ধারায় রাষ্ট্রদ্রোহ সংক্রান্ত মামলার শাস্তির বিধান বলা ছিল। কিন্তু নয়া আইন অনুযায়ী (New Crime Laws) ব্রিটিশ সময় থেকে চলে আসা রাষ্ট্রদ্রোহ শব্দ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতা (Bharatiya Nyaya Sanhita 2023-BNS)র অধ্যায় ৭ -এ রাষ্ট্রদ্রোহ’কে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অপরাধের বিভাগে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ধারা ১৪৪: ভারতীয় ফৌজদারি ব্যবস্থায় গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারা। কোথাও কোনও অশান্তি কিংবা গণ্ডগোলের আশঙ্কা থাকলে পুলিশ প্রশাসনকে বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। ভারতীয় ন্যায় সংহিতার অধ্যায় ১১ তে ধারাটি জনশান্তিবিরোধী অপরাধের বিভাগে রাখা হয়েছে।

ধারা ৩০২: আগে হত্যা কিংবা খুন করেছেন এমন ব্যক্তির বিরুদ্ধে এই ধারায় মামলা হতো এবং দোষী সাব্যস্ত করা যেত। এখন এই সমস্ত অপরাধের ক্ষেত্রে ১০১ ধারায় সাজা দেওয়া হবে। নতুন আইন অনুসারে, হত্যার ধারা অধ্যায় ৬-অনুযায়ী মানবদেহকে প্রভাবিত করে এমন অপরাধকে অপরাধ বলা হবে।

ধারা ৩০৭: হত্যার ষড়যন্ত্র, খুনের চেষ্টা এই সংক্রান্ত ক্ষেত্রে অপরাধীকে আইপিসি ৩০৭ এ সাজা দেওয়া হতো। কিন্তু এখন থেকে দোষীকে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ধারা ১০৯ অনুযায়ী সাজা দেওয়া হবে। অধ্যায় ৬ তে রাখা হয়েছে।

ধারা ৩৯৯ঃ প্রথমে মানহানি সংক্রান্ত মামলা আইপিসির ধারা ৩৯৯ ব্যবহার করা হতো। কিন্তু নতুন আইনের অধ্যায় ১৯ অনুযায়ী, ধকম, অপমান, মানহানির মতো ক্ষেত্রের বিচারের কথা বলা হয়েছে। ভারতীয় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার 356 ধারায় মানহানি রাখা হয়েছে।

ধারা ৪২০: ভারতীয় ন্যায় সংহিতা অনুযায়ী জালিয়াতি-ঠক সংক্রান্ত অপরাধ ৪২০ এ নয়, এখন থেকে ৩১৬ অনুযায়ী বিচার হবে। নতুন আইনের ১৭ অধ্যায়ে সম্পত্তি চুরিকে অপরাধের ক্যাটাগরিতে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

ধারা ৩৭৬: দুস্কর্ম সংক্রান্ত অপরাধে আগে ধারা ৩৭৬ অনুযায়ী দেখা হতো। ভারতীয় ন্যায় সংহিতাতে মহিলা এবং বাচ্চাদের সঙ্গে হওয়া অপরাধ যুক্ত করা হয়েছে। নতুন আইনে ধর্ষণ সংক্রান্ত অপরাধের শাস্তি ৬৩ ধারায় সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। গণধর্ষণের ক্ষেত্রে ২০ বছর থেকে আমৃত্যু জেলের শাস্তির বিধান রয়েছে নয়া আইনে।

অন্যদিকে ১৮ বছরের কম বয়সী নারীদের ধর্ষণ সংক্রান্ত বিধানের পরিবর্তন রয়েছে নয়া (New Crime Laws) আইনে। মহিলা পুলিশ স্টেশনে স্টেটমেন্ট নিতে হবে। এবং অভিভাবকের সামনে করতে হবে। মেডিক্যাল রিপোর্ট সাতদিনের মধ্যে করার কথা বলা হয়েছে। যে কোনও শিশু ক্রয়-বিক্রয়কে জঘন্য অপরাধ বলে গণ্য করা হয়েছে।

এছাড়াও নতুন আইন অনুযায়ী এখন থেকে অভিযোগ জানানোর ক্ষেত্রে সবসময় পুলিশ স্টেশনে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। ইলেকট্রনিক্স যোগাযোগের মাধ্যমেও অভিযোগ জানানো যাবে। অভিযোগকারী এবং অভিযুক্ত দুজনে এফআইআরের কপি পাওয়ার যোগ্য। পাশাপাশি ১৪ দিনের মধ্যে চার্জশিট সহ অন্যান্য নথি দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।

পাপাপাশি শুনানিতে অহেতুক বিলম্ব রুখতে আদালত সর্বোচ্চ দুইদিনের স্থগিতাদেশ দিতে পারবে। অন্যদিকে ক্রিমিনাল মামলায় ৪৫ দিনের মধ্যে রায় ঘোষণা করতে হবে। প্রথম ৬০ দিনের মধ্যে রায় চার্জ গঠন করতে হবে। একই সঙ্গে সাক্ষীদের নিরাপত্তারকথা বলা হয়েছে। হিট এন্ড রান মামলায় সর্বোচ্চ ১০ বছরের জেলের কথা বলা হয়েছে।

পাশাপাশি ‘ফৌজদারি কার্যবিধি’ অর্থাৎ CrPC এখন ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতায় বদলেছে। ভারতীয় সিভিল ডিফেন্স কোডে CrPC-এর ৪৮৪ ধারার পরিবর্তে ৫৩১টি ধারা রয়েছে।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!