বনেদি বাড়ির দুর্গা পুজো
নিউজ ডেস্ক ::পারিবারিক স্তরে বাসন্তী ও দুর্গা দেবীর পূজা প্রধানত ধনী পরিবারগুলিতেই আয়োজিত হয়। আমাদের পশ্চিমবঙ্গের সবচেয়ে পুরনো ও ধনী বা এককালীন সেখানকার উচ্চ রাজবংশের পরিবারগুলিতে বাসন্তীপূজা “বনেদি বাড়ির পূজা” নামে পরিচিত। যোড়শ শতক থেকেই বাংলার রাজবাড়ি ও জমিদারবাড়িগুলোয় বসন্তকালে বাসন্তীপুজো অনুষ্ঠিত হয়।মহিষাসুর মর্দিনীর প্রাণপুরুষ বীরেন্দ্রকৃষ্ণ ভদ্রের পূর্বপুরুষ এর শেকড় বাংলাদেশের সাতক্ষীরা জেলার উথলী গ্রামের দুর্গা পুজার ইতিহাস :
অবিভক্ত ভারতের খুলনা জেলার কপোতাক্ষ তীরবর্তী একটি গ্রাম উথলী। বর্তমানে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরার তালা উপজেলার ইসলামকাটি ইউনিয়নের কর্দমাক্ত মেঠো পথে ঘেরা সুফলা সুজলা গ্রাম উথালী। মহিষাসুর মর্দিনীর প্রানপুরুষ স্বর্গীয় বীরেন্দ্র কৃষ্ণ ভদ্রের পারিবারিক বংসপজ্ঞী খুজতে যেয়ে কিছু প্রাচীন কাগজ পত্রের সন্ধান পাই। সেখান থেকে উথলীর সামান্য কিছু তথ্য আমাদের হাতে আসে। প্রাচীন কালে এক উন্নত সভ্যতা গড়ে ওঠে কপোতাক্ষের তীরে আজকের উথালী (প্রাচীন বুড়ন দ্বীপ)। এই গ্রামে কোঠাবাড়ি নামক স্থানে ১০৮ টি ঘরের সমন্বয়ে এক বিশাল অট্টালিকা গড়ে ওঠে। সেখানেই প্রথমে শুরু হয় দুর্গাপুজা। একটা তালপাতায় ১০৭৬ বঙ্গাব্দের বাৎসরিক দুর্গাপুজার হিসাব আবিস্কৃত হয়। সেখানে পুজার মোট খরচ আট আনা লিপিবদ্ধ আছে। উথালী (প্রাচীন বুড়ন দ্বীপ) এর দুর্গা পুজার সঠিক হিসাব জানা না গেলেও আপাতত এটা ৩৫৪ বছরের ও অধিক পুরাতন। পরবর্তীতে ১৩৪৭ বঙ্গাব্দে এটা পুনরায় নতুন করে তৈরি করা হয়। মার্কণ্ডেয় পুরাণ অনুসারে শত শত বছর ধরে প্রতিবদ থেকে দেবী শৈলপুত্রি, দেবী মহাগৌরি, দেবী কাত্যয়নী, দেবী স্কন্দমাতা, দেবী চন্দ্রঘণ্টা, দেবী ব্রহ্মচারিণী, দেবী কালরাত্রি, দেবী সিদ্ধিদাত্রী ও দেবী কুষ্মাণ্ডা এই নয় রুপে নবদুর্গা পুজিত হয়ে আসছেন। কালের বিবর্তনে বড় বড় দালানকোঠা ,হাজার হাজার বিঘা সম্পত্তি হারিয়ে গেলেও এখনো কালের সাক্ষী হয়ে ভদ্রবংসের অস্তমিত শেষ প্রদীপ উথালীর দুর্গা পুজা অলৌকিক ভাবে মাত্র ১১ জন সদস্য এর হাতে টিকে রয়েছে।