কেন ভূত চতুর্দশীতে ১৪ শাক খাওয়া হয় , ১৪ প্রদীপ জ্বালানো হয়?
নিউজ ডেস্কঃ ভূত চতুর্দশীর দিন কেন প্রদীপ জ্বালানো হয়? কোন কোন শাককে বলে ১৪ শাক? কেন এই তিথিকে ‘নরক চতুর্দশী’ বলে? জেনে নিন এখান থেকে।
এই ভূত চতুর্দশী কিন্তু বাঙালিদের কাছে বিশেষভাবে এক পার্বণ| মহালয়ায় যেমন পিতৃপুরুষদের উদ্দেশ্যে জল দান করা হয় এইদিন চৌদ্দপুরুষ এর উদ্দেশ্যে প্রদীপ জ্বালানো হয়। এদিন পরলোকগত পূর্বপুরুষদের জন্য ১৪ প্রদীপ জ্বলবে গৃহস্থের বাড়ির দরজায়। ঘর বাড়ি উঠোন এবং সর্বত্রই প্রদীপ জ্বলবে এই দিন।
ভূত অর্থাৎ অতীত, এবং চতুর্দশী অর্থাৎ কৃষ্ণপক্ষের ১৪ তম দিন। পিতৃ এবং মাতৃকুলের সাত পুরুষের উদ্দেশ্যে বাতি প্রদান করা হয় এদিন। পুরাণ মতে, এইদিন মহাকালী ধীরে ধীরে জাগ্রত হতে শুরু করেন। অশুভ শক্তির বিনাশের পূর্বক্ষণ এই ভূত চতুর্দশী। হিসেবমত সমস্ত প্রদীপ ঘিয়ের হওয়া উচিত কিন্তু বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে তেলের শিখা ব্যবহার করা হয়।
দীপাবলি উপলক্ষে যেমন চারিদিকে অন্ধকার ঘুঁচে গিয়ে আলোয় ভরে ওঠে তেমনই ভূত চতুর্দশী— এই বিশেষ দিনে আত্মা প্রেতাত্মার বিনাশের শুরু। কথিত রয়েছে, চামুণ্ডারূপী চোদ্দ ভূত দিয়ে অশুভ শক্তিকে ভক্তের বাড়ি থেকে তাড়ানোর জন্যে মা কালী নেমে আসেন মর্ত্যে৷
এটা মূলত বাঙালি হিন্দুর উৎসব। কারণ বাংলা ছাড়া ভারতের অন্যান্য রাজ্যে হিন্দুরা সেভাবে এই ‘ভূত চতুর্দশী’ উদযাপন করে না। পশ্চিম ভারতে এই তিথিকে ‘নরক চতুর্দশী’ বলে।এই নরক চতুর্দশীতে অকাল মৃত্যু থেকে মুক্তি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্য পূজা করা হয়। একটি পৌরাণিক বিশ্বাস অনুসারে, ভগবান শ্রী কৃষ্ণ কার্তিক মাসের কৃষ্ণপক্ষের চতুর্দশীতে নরকাসুরকে বধ করেন । তাই এই দিনটিকে ‘নরক চতুর্দশী’ও বলে।
মর্ত্যবাসীর মাকালীর সঙ্গে আসা ভূতপ্রেতদের দূরে রাখতে ১৪ শাক খেয়ে, ১৪ প্রদীপ জ্বালিয়ে এবং ১৪ ফোঁটা দিয়ে এই তিথিকে উদযাপন করে থাকে। এই ১৪ শাক হল- ওল, বেতো, সরষে, নিম, গুলঞ্চ, শুষণী, হিলঞ্চ, জয়ন্তী, শাঞ্চে, কালকাসুন্দে, পলতা, ভাটপাতা, কেঁউ, এবং শৌলফ।
প্রদীপ উদযাপন মন্ত্র:-
নমঃ পিতৃভ্যঃ প্রতেভ্যো নমো ধর্মায় বিষ্ণবে।
নমো ধম্রায় রুদ্রায় কান্তারপতয়ে নমো নমঃ।।