‘ক্ষয়িষ্ণু’ বিজেপিতে জোয়ার আনতে গোষ্ঠীকোন্দলই বাধা
নিউজ ডেস্ক ::কৈলাশ বিজয়বর্গীয়কে দায়িত্ব দিয়েও বাংলা দখলে আনতে পারেনি বিজেপি।
মুকুল রায়ের মতো নেতাকে তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগদান করিয়েও শেষ রক্ষা হয়নি। ২০১৯-এর লোকসভায় উত্থান হলেও একুশে মুখ থুড়ে পড়তে হয়েছে। তারপর বিজেপি বাংলায় ক্ষয়িষ্ণু হতে শুরু করে। এবার বাংলার ভূমিপুত্র অমিত শাহ ঘনিষ্ঠি সুনীল বনশল কি পারবেন রাজ্যে বিজেপির হাল ফেরাতে?
বাংলায় কৈলাশ যুগের অবস্থান ঘটেছে। এবার বাংলার দায়িত্বে এসেছেন সুনীল বনশল। বর্ধমানের দুর্গাপুরে তাঁর জন্ম। অর্থাৎ ভূমিপুত্রের হাতে বাংলার দায়িত্ব তুলে দিয়ে বিজেপি এবার কাজ হাসিল করতে চাইছে। লক্ষ্য ২০২৪। লোকসভা ভোটে বাংলা থেকে আরও আসন জেতাই প্রাথমিক লক্ষ্য বিজেপির। সেই গুরুদায়িত্ব কাঁধে সুনীল বনশলকে পাঠানো হল বাংলায়। তারপর ২০২৬-এ বাংলা জয়ের দায়িত্ব বর্তাবে তাঁর উপর।
তবে সবার থেকে আগে বাংলায় বিজেপির হাল ফেরাতে হবে। একুশে তৃণমূলের কাছে পর্যুদস্ত হওয়ার পর জয়ের খিদেটাই মরে গিয়েছে বিজেপির। তারপর থেকে পুরসভা ভোট হোক বা উপনির্বাচন, সবেতেই জুটেছে হার আর হার। এই অবস্থায় জয়ের রাস্তা দেখাতে হবে দলকে। বাংলায় হেরো দলের তকমা পাওয়া বিজেপিকে জয়ের সরণিতে ফিরিয়ে তৃণমূলের চ্যালেঞ্জার করে তুলতে হবে আবার।
সুনীল বনশল সংগঠনের কাজ খুবই দক্ষ। তিনি উত্তরপ্রদেশের দায়িত্বে ছিলেন। তখন থেকেউ তিনি অমিত শাহ ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত। উত্তরপ্রদেশের সাফল্য এনে দেওয়ার পর দল তাঁকে এবার তিনটি রাজ্যের দায়িত্ব দিয়েছে। বাংলার পাশাপাশি তাঁকে পাঠিয়েছে ওড়িশা ও তেলেঙ্গানায়। তিনটি রাজ্যে পর্যবেক্ষকের দায়িত্ব পালন করবেন সুনীল বনশল।
কৈলাশ বিজয়বর্গীয় চলে যাওয়ার পর থেকেই বাংলায় কোনও স্থায়ী পর্যবেক্ষক ছিলেন না। অরবিন্দ মেনন আর অমিত মালব্য এই কাজ সামলাচ্ছিলেন। এখন সুনীল বনশলকে সেই গুরুদায়িত্বে আনা হল। কেন বাংলায় বিজেপি দাঁত ফোটাতে পারল না, কেন বাংলার মানুষে মনে দাগ কাটতে পারছেন বিজেপি, এবার তার সুরাহা করবেন বাংলার এই ভূমিপুত্র।
একুশের ভোটে হারের পর বাংলায় শতাধিক পুরভোটেও পর্যুদস্ত হয়েছে বিজেপি। বঙ্গ বিজেপিতে গোষ্ঠীকোন্দল চূড়ান্ত পর্যায়ে। এই অবস্থায় সুনীল বনশলের কাছে চ্যালেঞ্জ হবে বাংলার বিজেপির বিস্তার ঘটানো। বাংলায় সংগঠন গড়ার পাশাপাশি গোষ্ঠী কোন্দলকে সামাল দিতে হবে শক্ত হাতে। তা না হলে কৈলাশ বিজয়বর্গীয়র মতো অবস্থা হতে পারে তাঁরও।
বঙ্গ বিজেপির গোষ্ঠী কোন্দল নিয়ে বহুবার সতর্ক করেছে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। তারপরও আদি-নব্য দ্বন্দ্ব এবং বর্তমান শাসক গোষ্ঠী বনাম পুরনো শাসক গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব মেটেনি। এখন দেখার সুনীল বনশল সেই প্রতিকূলতাকে জয় করেন কীভাবে। দুর্গাপুরের বেনাচিতিতে তাঁর জন্ম ও বড় হয়ে ওঠা। তাই বাংলাকে তিনি ভালোই চেনেন, বোঝেন বাংলার আবেগ। তারপর সংঘ প্রচারক হয়ে উত্তরপ্রদেশের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করছিলেন। এবার ফিরলেন বাংলায়। চেনা জায়গায় নয়া দায়িত্বে তিনি কতটা মানিয়ে নিতে পারেন, তা-ই দেখার।