বনেদি বাড়ির দুর্গাপূজোয় অষ্টমী ও নবমীর ভোগ
নিউজ ডেস্ক: কলকাতার বনেদি বাড়ির দুর্গাপূজোর একটা আলাদা আভিজাত্য আছে। প্রচুর মানুষ ভিড় জমায় বনেদি বাড়ির সাবেকী দুর্গাপূজো দেখতে। এক একটা বনেদি বাড়ির পুজো প্রায় ২৫০ থেকে ৩০০ বছরের পুরোনো। জেনারেশনের পর জেনারেশন ধরে পুজো হয়ে আসছে। বনেদি বাড়ির দুর্গাপূজোর মূল আকর্ষণ হল অষ্টমী এবং নবমীর মহাভোগ। বিভিন্ন বনেদি বাড়ির ভোগের রীতিনীতি বিভিন্ন ধরনের। ব্রাহ্মণ বাড়ির ভোগের নিয়ম একরকম তো অব্রাহ্মণ বাড়ির ভোগের নিয়ম আর এক রকম।
শোভাবাজার রাজবাড়ির দুর্গাপূজো বিখ্যাত। দূর থেকে প্রচুর দর্শনার্থীরা আসে এই শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো দেখতে। এই দেববাড়ি অর্থাৎ শোভাবাজার রাজবাড়ির পুজো অনেক পুরোনো। এই বাড়িতে অষ্টমী এবং নবমীতে মায়ের ভোগ হয় সম্পূর্ণ নিরামিষ। অব্রাহ্মণ হওয়ার জন্য দেব পরিবার অন্ন ভোগ দিতে পারে না। তাই সাজিয়ে দেওয়া হয় কাঁচা চাল। এই চালের উপর কলা, চিনি আর ক্ষীরের মণ্ড সুন্দর করে সাজিয়ে দেওয়া হয়সঙ্গে থাকে বড় লাড্ডু, মিষ্টি, খাজা, গজা আর নিমকি। শোভাবাজার রাজবাড়িতে প্রতিবছর দুর্গাপুজোর সময় আজও মা নাকি ‘মিঠাই’ খেতে আসেন। এছাড়াও রাধাবল্লভী, দরবেশ, খাজা, গজা, পান্তুয়া, জিলিপি-র মতো শুকনো মিষ্টি দিয়ে নৈবেদ্য সাজানো হয়।
দক্ষিণ কলকাতার মুখার্জি বাড়িতে অষ্টমী ও নবমীর দিন দেবীকে অন্নভোগ ও পুজোর চার দিন লবণ ছাড়া ব্যঞ্জন ভোগ এখন দেওয়া হয়। নানা প্রকার মিষ্টি ও পায়েসের সঙ্গে পুজোর চারদিনই থাকে খিচুড়ি ভোগের আয়োজন করা হয়ে থাকে। নবমীর দিন পাঁচ রকমের তরকারি, চাটনি, পায়েস ভোগ দেওয়ার রেওয়াজ মেনে চলেছে বসাক পরিবার। অষ্টমীর সন্ধ্যায় আরতির পর নারকেল কোরা, চিড়ে আর খই মিলিয়ে এক সুস্বাদু মিষ্টি তৈরি করে ভোগের থালায় সাজিয়ে দেওয়া হয়। নবমীর দিন তৈরি হয় মহাভোগ। মহাভোগে থাকে পাঁচ রকমের ভাজা, পাঁচ রকমের তরকারি, অন্নভোগ, খিচুড়ি, হলুদ পোলাও, চাটনি, পায়েস, মিষ্টি ইত্যাদি।