জাঁকজমকহীন উত্তর কলকাতা’র কালীপুজো
নিউজ ডেস্ক (অনামিকা নন্দী): এক বাঁশের খুঁটি খুলে, অন্য খুঁটি বাধার সময় হয়ে গিয়েছে। তবুও সবকিছু কেমন যেন ফ্যাকাশে। নেই উন্মাদনা, নেই কালিপটকা’র আওয়াজ, নেই উল্লাস। এখনো বারাসাত-মধ্যমগ্রামে দেখা যাচ্ছে না, অন্য বারের মত উল্লাস। যেখানকার কালীপুজো বেশ চর্চিত বিষয়, সেই জায়গা আজ আড়ম্বরহীন হয়ে রয়েছে। প্রতিবছর নানা থিমের সমাবেশ ঘটে থাকে উত্তর কলকাতায়। সেখানে আদালতের আদেশ আর করোনা পরিস্থিতি মাটি করে দিয়েছে সমস্ত কিছু। সোশ্যাল মিডিয়ায় বা সংবাদপত্রে শতদল, নবপল্লী সার্বজনীন, পায়োনিয়ার, কেএনসি রেজিমেন্ট, নবপল্লী ব্যায়াম সমিতি’র পুজোর থিম কি! খুঁজতে হবে না এবার।
দক্ষিণ কলকাতার দুর্গাপুজো বিখ্যাত হলে, কালীপূজায় নজর কাড়ে উত্তর কলকাতা। প্রায় ২০টি’র কাছাকাছি বড় পুজো হয় এই উত্তর কলকাতায়। প্রতিমা থেকে মন্ডপ, হোডিংয়ে-ব্যানারে, দুর্দান্ত আলোকসজ্জায় সেজে ওঠে গোটা উত্তর কলকাতা। কিন্তু কোভিড পরিস্থিতিতে বাদ পড়েছে সেই সবটুকুই। চলতি বছরে নামেমাত্র করা হচ্ছে পুজো। নেই কোন আলোকসজ্জার বাহার আর না আছে তেমন কোনো হোডিং-ব্যানারের রকমফের। বারাসাত পৌরসভার প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান এই বিষয়ে বলেছেন, “করোনা পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখেই বড় পূজা কমিটিগুলি এবারে জৌলুসহীণ পূজা করার আবেদন জানিয়েছিলেন। আর তাতে সম্মতি জানিয়েছেন সকলেই।”
যেভাবে নিউ নরমাল দুর্গাপূজার সঙ্গে নিজেদেরকে মানিয়ে নিয়েছে বাঙালি। ঠিক সেইভাবে এই নিউ নরমাল কালীপুজোর সঙ্গেও, নিজেদেরকে মানানোর প্রচেষ্টা করতে হবে বাঙালিকে। বারাসাত-মধ্যমগ্রাম সহ উত্তর কলকাতায় কালীপুজোতে খরচ হয় প্রায় কোটি টাকার কাছাকাছি। পুজো হয় ১৬০-এর কাছাকাছি। সেখানে দায়িত্ব নিয়ে, এই বছরে পূজা কমিটিগুলি ছোট করে পুজো করার নিয়েছে সিদ্ধান্ত। তাই যেখানে বিশ্বকর্মা পুজোর একমাস আগে থাকতে শুরু হয়ে যায় প্যান্ডেল তৈরি। সেখানে পুজোর এক সপ্তাহ আগে হাত লেগেছে মণ্ডপে।
পুজো তো হচ্ছে নিয়ম-রক্ষার খাতিরে। আসছে বছর জৌলুসপূর্ণ পুজো করতে এই বছর নিয়ম-রক্ষার পুজোতে, খুশি পূজা কমিটি সহ এলাকার বাসিন্দারা। তার মধ্যে পড়ে গিয়েছে হাইকোর্টের নিয়মাবলীও। থাকবে না দর্শকদের ভিড়। ফাঁটবে না বাজি। যার সুবাদে খ্যাতি তা পাশে রেখেই, ভাবতে হচ্ছে পরিস্থিতির কথা। থিম’তো দূরহস্ত। এবারে উত্তর কলকাতা সাজবে নিউ নরমালে। নাকি আলোকসজ্জায়!