ছট পুজো
নিউজ ডেস্ক(পূবালী অধিকারী): ছট একটি প্রাচীন হিন্দু বৈদিক উৎসব। এই উৎসবে মূলত মূর্তি পূজা হয়না। ছট পুজো বলতে সূর্য দেবতা এবং তার স্ত্রীদেরকে দেবতা জ্ঞানে পূজা করা হয়।এই উৎসবটি মূলত বিহারী, নেপালিরা পালন করে থাকে। এই উৎসবটি প্রধানত ভারতের বিহার, ঝাড়খন্ড, উত্তরপ্রদেশ,মধ্যপ্রদেশ অঞ্চলে পালন হয়। তবে বর্তমানে এই অঞ্চলগুলো ছাড়া ভারতবর্ষের অনেক জায়গায় ছট পূজা করা হয়ে থাকে। তবে বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে অনেকেই এই পূজায় অংশগ্রহণ করেন। ছট পূজা প্রায় রাজসূয় যজ্ঞের মত। এই পূজার রীতি অনুযায়ী সকালে এবং সন্ধ্যায় সূর্যের রশ্মি কে পুজো দেওয়া হয়। রীতিমতো কঠোর নিয়ম কানন পালনের মধ্য দিয়ে। এছাড়াও এই পুজোয় উপবাস করে,স্নান করে দেবতার কাছে পরিবারের মঙ্গলার্থে পুজো করা হয়। কেউ কেউ আবার ছট পূজা উপলক্ষে দন্ডি কাটে। বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে এই পুজো জাতি ধর্ম নির্বিশেষে সব সম্প্রদায়ের মানুষের পালন করে থাকে তাদের পরিবারের মঙ্গলার্থে। বিশেষ করে এই বছর একটি বিষয়ে খুবই লক্ষ্য করা গেছে, বিহারীদের পাশাপাশি বাঙালিরাও এবছর ছট পূজার মেতেছেন। তারাও ছট পুজো করে পরিবারের সকল সদস্যের সুস্বাস্থ্য,সম্পদ এবং শান্তি প্রার্থনা করেছে।
তবে অন্য বছরের মতো এ বছর ছট পুজো পালন করা হয়নি। দুর্গাপুজো, কালীপুজোর মতো করোনার প্রভাব এবছর ছট পুজোতেও পড়েছে। বলা যায় এবছর আড়ম্বরহীন ভাবেই ছট পুজো করা হয়েছে।
তার ওপর আদালতের নির্দেশ ছিল আগেই। শহরের দুটি প্রধান জলাশয় রবীন্দ্রসরবর এবং সুভাষ সরোবরে ছট পুজোর কোন আয়োজন করা যাবে না। এই দুটি সরোবরকে মূলত শহরের ফুসফুস বলা হয়ে থাকে। পরিবেশ প্রেমীরা মনে করেছেন করোনা পরিস্থিতিতে যদি এই দুটি সরোবরে ছট পুজো করতে অনুমতি দেওয়া হয় তাহলে পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যেতে পারে। কিন্তু তা বলে তো আর ছট পুজো আটকে থাকবে না। পুজো হবে এবং পুজো হয়েছেও। সবদিক বিবেচনা করে কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে এবার তৈরি করা হয়েছিল কৃত্রিম জলাশয়। শহর জুড়ে প্রায় দেড় হাজার কৃত্রিম জলাশয় তৈরি করা হয়েছে এবার ছট পূজার জন্য। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী প্রশাসন করা হাতে দুটো সরোবর কে দূষিত হওয়ার হাত থেকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির নির্দেশে কলকাতা পুলিশ যথেষ্ট দক্ষতার সঙ্গে বিষয়টি দেখভাল করেছে। অবশ্য প্রশাসনের নির্দেশে বেশিরভাগ মানুষ মেনেছেন কোভিড সংক্রান্ত নির্দেশবলী। আয়োজকদের মধ্যে সকলেই জানাচ্ছে এই অতিমারি পরিস্থিতিতে স্বাস্থ্যবিধি যেমন মানতে হবে তেমনি মানতে হবে হাইকোর্টের নির্দেশও।