বড়দিন ও কেক
নিউজ ডেস্ক: বড়দিন প্রায় চলেই এসেছে দোরগোড়ায়। ধর্ম- বর্ণ- জাতিভেদ সব কিছুই ভুলে মানুষ প্রতি বছরই ক্রিসমাস পালনে মেতে ওঠে। আর ক্রিসমাস মানেই ছোট – বড় সকলের মনের মধ্যে ছবির মত ভেসে ওঠে সান্তাক্লজ , ক্রিসমাস ট্রির সঙ্গে ক্রিস্টমাসের স্পেশাল ফ্রুট কেক। যা না খেলে ক্রিসমাসটাই সম্পূর্ণ হয় না।
ক্রিসমাস উপলক্ষে যেমন শহর সেজে ওঠে সান্তাক্লজ , ক্রিসমাস ট্রির , বল , স্টার এবং আলোর রোশনাইতে , তেমনি শহর জুড়ে বসে কেকের হাট। বিশেষত , ধর্মতলা এসপ্লানেড চত্বর যেন কেকের গন্ধে মো মো করছে। মানুষ প্রতি বছরের মত এই বছরও স্বাভাবিক ভাবেই করোনাকে উপেক্ষা করে ভিড় জামাচ্ছে কেকের দোকানগুলোতে। তবে ক্রিসমাস বা বড়দিন উপলক্ষে কেনই বা এত কেকের চাহিদা মানুষের মধ্যে, আসুন দেখে নেওয়া যাক বিষয়টি –
মূলত ২৫ শে ডিসেম্বর আমরা পালন করি যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন উপলক্ষে। তাই খিস্টান ধর্মের গুরু যীশু খ্রিস্টের জন্মদিন হিসেবে খিস্টধর্মের মানুষ কেক খেয়ে থাকতেন। কিন্তু এখনকার যুগে মানুষ সব ভুলে হাতে হাত মিলিয়ে একে অপরের সঙ্গে উৎসবে মেতে উঠেছে।
ইতিহাস অনুসারে , ৩৩৬ সালে রোমান সম্রাট কনস্টানটাইনের শাসনকালে প্রথম বড়দিন পালন করা হয়। তবে কেক খওয়ার রীতি শুরু হয় তার অনেক পরে। ক্রিসমাসে কেক বানানো বা অতিথিদের কেক খওয়ানো সমস্তটাই ইংরেজদের দ্বারা তৈরি। ক্রিসমাস যখন থেকে পালন করা হয় তখন কেকের পরিবর্তে ছিল প্লাম পরিজ খওয়ার রীতি। কারণ তখন ক্রিসমাসের আগের দিন উপবাস করে থাকতে হত। পরের দিন অর্থাৎ ক্রিসমাসের দিন যখন উপোষ ভঙ্গ করা হত তখন তাঁরা প্লাম পরিজ খেয়ে উপোষ ভঙ্গ করতেন। একটা সময়ের পরে ওই প্লাম পরিজের মধ্যে নানা রকম শুকনো ফল ও মধু মিশিয়ে পুডিংএর আকার দেওয়া হয়। তারপর ১৬ শতক নাগাত ওই পুডিং –এর মধ্যে মাখন , ময়দা , ডিম যোগ করা হয়। সেই থেকেই প্লাম কেক বানানো সহজ হয়ে যায়। পরবর্তীকালে এই কেকই ক্রিসমাস কেক হিসেবে পরিচিতি লাভ করে।
যদিও ব্রিটিশরা ক্রিসমাস কেকের মধ্যে কিশমিশ ও রামে ভেজানো কারেন্টস দিয়ে থাকে। প্রাশ্চাত্যের এক একটি দেশে এক একটি নামে পরিচিত এই ক্রিসমাস কেক। স্কটিশ ক্রিসমাস কেক হুইস্কি ডান্ডি নামে পরিচিত। ফ্রান্স ও লেবানানে ‘বুশ ডি নোয়েল’ নামে পরিচিত।জার্মানিতে স্টোলেন নামে এবং ইংল্যান্ডে চকলেট লগ ও ইউল লগ নামে পরিচিত।
সুতরাং বোঝাই যাচ্ছে ক্রিসমাসে কেকের ভূমিকা কতটা। কেক ছাড়া ক্রিসমাস একেবারেই অসম্পূর্ণ ।