হাজারো রোগের একটি সমাধান সূত্র ‘তুলসী পাতা’
নিউজ ডেস্ক: বর্তমানে প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষকেই প্রতিদিন ওষুধ খেতে হয় কোনো না কোনো সমস্যার কারণে। যার ফলে বিরক্ত হয়ে উঠছে জীবন। বিশেষত সুগার বা ডায়বেটিস, সর্দির ধাঁচ, মাথা যন্ত্রণা, মানসিক অবসাদের মতো সমস্যা যা অঙ্গ হয়ে উঠেছে আমাদের জীবনের। যার ফলে ব্যহত হচ্ছে আমাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা। যার জন্য একের পর এক ভালো ডাক্তারে খোঁজ করছি আমরা, এই সব সমস্যার থেকে মুক্তির জন্য। আর ডাক্তারের কাছে যাওয়া মানেই হাতে ধরিয়ে দেন একগাদা ওষুধের নাম লেখা এক প্রেসক্রিপশন।
তাই এবার আমরা ওষুধের ঝুলিকে দূরে সরিয়ে প্রাকৃতিক উপায়ে কিভাবে নিজেকে সুস্থ করে তুলতে পারি, আসুন সেদিকেই চোখ রাখি।
প্রাকৃতিক উপাদান হিসেবে তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে আমরা সবাই কম বেশি জানি। তবে শুধু সেই টুকুই নয়, আরও অনেক ক্ষেত্রেই আমরা তুলসী পাতার মাধ্যমে নিজেকে সুস্থ করে তুলতে পারি।
এবার দেখে নেওয়া যাক, তুলসী পাতাকে কোন কোন উপায়ে ব্যবহার করে কি কি রোগের থেকে মুক্তি পেতে পারি।
তুলসী পাতায় প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট আছে, যা কিডনির কাজ করার ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তোলে। যার ফলে শরীরের ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা বাড়তে পারে না। তার জন্য কিডনিতে পাথর হওয়ার আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়।
প্রতিদিন যদি মধু দিয়ে তুলসী পাতার রস খাওয়া যায় তাহলে, কিডনিতে যদি পাথর হয়ে থাকে তা গলে শরীর থেকে বেড়িয়ে যাবে।
মানসিক চাপ কমানোর ক্ষেত্রে তুলসী পাতার ভূমিকা অপরিসীম। তুলসী পাতার অ্যান্টিস্ট্রেস এজেন্ট মানসিক অবসাদ কমানোর ক্ষেত্রে চমৎকারভাবে কাজ করে থাকে। যে কোনো সুস্থ ব্যক্তি প্রতিদিন দুবার ১২ টি করে তুলসীপাতা যদি নিয়মিত চিবিয়ে খেতে পারেন, তাহলে তিনি কোনো দিন মানসিক অবসাধে আক্রান্ত হবেন না।
সর্দি কাশি ও জ্বরের ক্ষেত্রে তুলসী পাতার বিকল্প হয় না। তুলসী পাতা হল প্রাকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক। তুলসী পাতা শরীরে প্রবেশ করা মাত্রই যে ভাইরাসের জন্য জ্বরটা হয়েছে, সেগুলিকে মারতে থাকে। যার ফলে শরীরের দুর্বলতা ভাব কাটতে থাকে।
প্রতিদিনের কর্ম ব্যস্ত জীবনে মাথা ব্যথা একটা অঙ্গ হয়ে উঠেছে। এবার এই রোজকার মাথা ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে তুলসী পাতা খাওয়া শুরু করুন। সিডাটিভ এবং ডিসইনফেকটেন্ট প্রপার্টিজ থাকার জন্য তুলসী পাতা যে কোনো ধরণের মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে দারুণ উপকার করে। তাই যাঁদের সাইনাস ও মাইগ্রেন জাতীয় সমস্যা আছে, তারা তুলসী পাতাকে সহজেই কাজে লাগিয়ে কষ্ট দূর করতে পারেন।
একটা বড় পাত্রে জলের মধ্যে কয়েকটা তুলসী পাতা দিয়ে সেটাকে ভালো করে ফুটিয়ে নিয়ে, মাথায় টাওয়াল ঢাকা দিয়ে সেই জলের ভাব নিলে মাথার যন্ত্রণা কমে যায়।
তুলসী পাতার আন্টি অক্সিডেন্ট ও আন্টি কারসেনোজেনিক উপাদান ব্রেস্ট ক্যান্সার ও ওরাল ক্যান্সারের বৃদ্ধি বন্ধ করে দেয়। কারণ এই উপাদানগুলো টিউমারের মধ্যে রক্তের চলাচল বন্ধ করে দেয়। তাই প্রতিদিন তুলসী পাতার রস খান।
মুখের দুর্গন্ধ দূর করার জন্য প্রতিদিন সকালে কয়েকটা তুলসী পাতা চিবিয়ে খেয়ে নিন, দেখবেন মুখ থেকে আর বাজে গন্ধ বের হবে না। এছাড়াও দাঁতকে নানা রকম ক্ষতিকারক জীবাণুর হাত থেকে রক্ষা করতেও তুলসী পাতা খুব উপকারী।
ডায়বেটিস নিরাময় করতে তুলসী পাতায় থাকা আন্টি অক্সিডেন্ট ও এসেনশিয়াল ওয়েল খুব ভালো কাজ করে। যা আমাদের অগ্ন্যাশয়ের বিটা সেলকে কাজ করতে সাহায্য করে। যার ফলে শরীরে ইনসুলিনের সংবেদনশীলতা বেড়ে যায়। যার ফলে ব্লাড সুগার ও ডায়বেটিস ভালো হয়ে যায়। তাই প্রতিদিন সকালে তুলসী পাতার রস খান আর নিজেকে সব সময় সুস্থ রাখুন।