বনেদি বাড়ির দুর্গা পূজো বারোয়ারী দূর্গা পূজার মধ্যে তফাৎ

0 0
Read Time:3 Minute, 51 Second

নিউজ ডেস্ক: স্তরে দুর্গাপূজা প্রধানত ধনী পরিবারগুলিতেই আয়োজিত হয়। কলকাতা শহরের পুরনো ধনী পরিবারগুলির দুর্গাপূজা “বনেদি বাড়ির পূজা” নামে পরিচিত। যোড়শ শতক থেকেই বাংলার রাজবাড়ি ও জমিদারবাড়িগুলোয় শরতে দুর্গাপুজোর চল বাড়ে। এ ব্যাপারে কোনও কোনও মতে নদিয়ার দুই রাজার নাম পথিকৃৎ হিসেবে শোনা গেলেও, মূল জায়গা ছিল ছিল মালদা ও দিনাজপুর। কিন্তু সে সবই ছিল নিতান্তই পারিবারিক ব্যাপার। দুর্গাপুজো সামাজিক চেহারা নিতে শুরু করল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের হাত ধরে। ১৭৫৭ সালে পলাশির যুদ্ধে জেতার পর ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির চিফ অফিসার লর্ড ক্লাইভ ঈশ্বরকে ধন্যবাদ দেওয়ার জন্য একটা উৎসব করতে চাইছিলেন। কিন্তু তত দিনে কলকাতার একমাত্র গির্জাটি ধ্বংস করে দিয়েছেন সিরাজ-উদ-দৌল্লা। এই অবস্থায় সাহেবের স্বপ্নপূরণে এগিয়ে আসেন শোভাবাজার রাজবাড়ির রাজা নবকৃষ্ণ দেব। কলকাতার প্রথম দুর্গাপুজোটা শোভাবাজার রাজবাড়িতেই হয়। মেলা টাকা খরচও করা হয় বিনোদনের জন্য। হিন্দু উৎসবে যোগ দেওয়ার ব্যাপারে প্রথমে দ্বিধা থাকলেও নাচার সাহেব শেষ অবধি দেবতাকে ধন্যবাদ জানানোর জন্য রাজবাড়ির দুর্গাকেই বেছে নেন। ভারতে ব্রিটিশ-বিরোধী আন্দোলনের সময় সর্বজনীন পূজা শুরু হয়। সুভাষচন্দ্র বসু প্রমুখ জাতীয়তাবাদী নেতারা বিভিন্ন সর্বজনীন পূজার সঙ্গে যুক্ত থাকতেন।

বারোয়ারির (যা আজ পরিবর্তিত হয়ে সর্বজনীন) ইতিহাসটা অন্য। ১৭৯১, মতান্তরে ১৭৬০ সালে হুগলির গুপ্তিপাড়ায় ১২ জন ব্রাহ্মণ বন্ধু চাঁদা তুলে দুর্গাপুজো করেন, সেই থেকে বারোয়ারি পুজোর চল শুরু। কোনও একটা বাড়ির পুজোয় তাদের অংশ না নিতে দেওয়ায় ক্ষোভে, প্রতিবাদে তাঁরা এ কাজ করেছিলেন বলে জানা যায়। কলকাতায় এ ধরনের পুজো প্রথম করেন কাশিমবাজারের রাজা হরিনাথ ১৮৩২ সালে। সেই বারোয়ারি পুজো সর্বজনীন পুজোয় পরিণত হয় ১৯১০ সালে। বাগবাজারের সনাতন ধর্মোৎসাহিনী সভায় এই পুজোয় বহু মানুষ অংশ নিয়েছিলেন। এখন সর্বজনীন পূজায় “থিম” বা নির্দিষ্ট বিষয়ভিত্তিক মণ্ডপ, প্রতিমা ও আলোকসজ্জার প্রবণতা দেখা যাচ্ছে। থিমগুলির শ্রেষ্ঠত্ব বিচার করে বিভিন্ন সংস্থার পক্ষ থেকে “শারদ সম্মান” নামে বিশেষ পুরস্কারও দেওয়া হয়। এ ছাড়া বেলুড় মঠ সহ রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের বিভিন্ন শাখা কেন্দ্র এবং ভারত সেবাশ্রম সংঘের বিভিন্ন কেন্দ্রে সন্ন্যাসীরা দুর্গাপূজার আয়োজন করেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!