বছরে গড়ে ৫০ কেজি খাবার নষ্ট করেন ভারতীয়রা
নিউজ ডেস্ক এক-দুই নয়, প্রায় ৫০ কেজি। হ্যাঁ, ঠিক এই পরিমাণ খাবার স্রেফ ফেলে দেন এ দেশের প্রত্যেক মানুষ। তাও মাত্র এক বছরে। তথ্য দিয়ে এমনটাই দাবি করল গত বছরের ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স রিপোর্ট। যেখানে দেশের বিপুল সংখ্যক মানুষকে এখনও প্রতিদিনের খাদ্য জোগাড় করতেই রীতিমতো সংকটে পড়তে হয়, সেখানে এই বিরাট অপচয়ের ছবি চমকে দিয়েছে সকলকেই।
সমীক্ষার পর রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে রাষ্ট্রসংঘের এনভায়রনমেন্ট প্রোগ্রাম। ভারতে, বিশেষ করে ভারতের শহরাঞ্চলে কী পরিমাণ খাবার অপচয় হয়, তারই একটা স্পষ্ট ছবি উঠে এসেছে ওই রিপোর্টে। আর তাতেই সামনে এসেছে এই তথ্য, যে, ভারতের বাড়িগুলি থেকে এক বছরে এক-একজন মানুষ প্রায় ৫০ কেজি খাবার না খেয়ে ফেলে দেন। আরও সমস্যার কথা হল যে, এই অতিরিক্ত খাবার কেবল নষ্টই হয় না, সেই বর্জ্য থেকে উৎপন্ন হয় পরিবেশ দূষণের জন্য দায়ী গ্রিনহাউস গ্যাস।
কেবল এই রিপোর্টেই নয়, এর আগেও বারবার বিভিন্ন সমীক্ষার সূত্রে উঠে এসেছে এ দেশে খাবার অপচয়ের খতিয়ান। যেমন ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল অর্গানাইজেশনের একটি রিপোর্ট জানিয়েছিল, ভারতে বার্ষিক যে পরিমাণ খাদ্য উৎপন্ন হয়, তার প্রায় ৪০ শতাংশ কেবল নষ্টই হয়। আর সেই অপচয়ের কারণ এক দেশের মধ্যে জারি থাকা ভিন্ন ভিন্ন খাদ্যাভ্যাস, এবং অদক্ষ সাপ্লাই চেনের কারণে যথাসময়ে জায়গামতো খাবার না পৌঁছতে পারা। রাষ্ট্রসংঘের সাম্প্রতিক রিপোর্টটিতে যেমন উপভোক্তার হাত দিয়েই খাবার নষ্ট হওয়ার খতিয়ান তুলে ধরা হয়েছে, তেমন এফএও-র ওই রিপোর্টে বলা হয়েছিল উপভোক্তার হাত পর্যন্ত পৌঁছনোর আগেই খাবার নষ্ট হয়ে যাওয়ার কথা।
তবে এই বিষয়ে সকলেই মোটামুটি একমত, যে, এই সমস্যা মূলত আধুনিক সময় এবং সমাজের সমস্যা। যেখানে ‘ওয়েস্ট নট, ওয়ান্ট নট’, অর্থাৎ অপচয় না করলেই চাহিদা আসবে না, এই নীতির জায়গা থাকছে না। সেই কারণেই, দেশের এক বিরাট অংশের কাছে প্রয়োজনীয় খাবারটুকু না পৌঁছানো সত্ত্বেও কমছে না অপচয়ের পরিমাণ। আর তারই প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে সাম্প্রতিক এই পরিসংখ্যানগুলিতে, বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞ মহল।