মমতা জনপ্রতিনিধি ও তৃণমূল কর্মীদের দিলেন নতুন নির্দেশিকা
নিউজ ডেস্ক::ধর্মতলায় ২১ জুলাই শহিদ স্মরণের মঞ্চ থেকে দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কী বার্তা দেন সেটাই শোনার জন্য সকলে উন্মুখ হয়ে থাকেন।
রাজনৈতিক দলকে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে এগিয়ে চলাই স্বাভাবিক নিয়ম। বাংলায় তৃতীয় মা-মাটি-মানুষ সরকার প্রতিষ্ঠার পর দলনেত্রী একদিকে যেমন আন্দোলনমুখী রাখতে চাইছেন দলীয় কর্মীদের, তেমনই বিনম্রতার পাঠও দিলেন আজকের মঞ্চ থেকে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, এদিনের সমাবেশের পরে বেশ কিছু দলীয় কর্মসূচি রয়েছে। বিভিন্ন স্তরে নতুন কমিটি গঠন হবে। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে তাঁদের নিয়েই কাজ করতে হবে। ২৮ অগাস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবস।
৯ অগাস্ট ভারত ছাড়ো আন্দোলন রয়েছে। ওইদিন বিশ্ব আদিবাসী দিবস। মহরমও রয়েছে। দলনেত্রী বলেন, সংঘাত এড়িয়েই কর্মসূচি পালন করতে হবে। বিশ্ব আদিবাসী দিবসের অনুষ্ঠান সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে করে ফেলতে হবে। ১৪ অগাস্ট ফ্রিডম অ্যাট মিডনাইট ব্লকে ব্লকে পালনের নির্দেশও দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আয়োজন করতে হবে স্বাধীনতা ও দেশাত্মবোধক অনুষ্ঠান। স্বাধীনতা দিবসে ঘরে ঘরে পতাকা লাগানোরও নির্দেশ দিয়েছেন। ইউনেস্কো বাংলার দুর্গাপুজোকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজের স্বীকৃতি দিয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, অগাস্টের ২২ তারিখ পুজো আয়োজন নিয়ে মিটিং হবে। পুজো এবার ভালো করে করতে হবে। ১ সেপ্টেম্বর এই উপলক্ষে ব্লকে ব্লকে অনুষ্ঠান করতে হবে। ৫ সেপ্টেম্বর শিক্ষক দিবসে শিক্ষকদের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের ডাকও দিয়েছেন দলনেত্রী।
এদিন আরও একবার সমাবেশের মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, কর্মীরাই দলের সম্পদ। সাইকেলে চেপে তাঁদের ঘুরতে হবে। মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে কাজ করতে হবে। বিধায়করা পায়ে হেঁটে ঘুরবেন। সাংসদরা রিকশয় এলাকায় ঘুরবেন। কর্মীদের চায়ের দোকানে আড্ডা দেওয়ার পরামর্শও দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে একইসঙ্গে জানিয়ে দেন, চায়ের দোকানে দোকানদারের কাছে চায়ের দাম মেটাতে হবে সংশ্লিষ্ট নেতা-কর্মীদেরই। তিনি আরও বলেন, এবারের ২১ জুলাই আয়োজনে জোর করে চাঁদা তোলা সংক্রান্ত দুটি অভিযোগ তাঁর কাছে এসেছে। দলনেত্রী সাফ বলেন, এ সব চলবে না। যদি কাউকে টানা নিতে দেখেন তাহলে তাঁকে ধরে পুলিশের হাতে তুলে দিতে হবে। কেউ সমস্যায় রয়েছেন, খেতে পাচ্ছেন না, এমন দেখলেই আমাকে সরাসরি জানাবেন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, বৃষ্টি সত্ত্বেও সভাস্থলে উপস্থিত সকলে ছাতা নিয়েও নিজেদের জায়গায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। তৃণমূল কর্মীরা জনগণের পাহারাদার। বিত্তবান নয়, বিবেকবান হতে হবে সকলকে। বিবেক না থাকলে জীবন যে অর্থহীন সে কথা মনে করিয়ে দিয়ে দলনেত্রী বলেন, বিবেকবান হতে হবে। শরীরচর্চা করবেন নিয়মিত। প্রতিদিন সকালে মাকে প্রণাম করবেন। সকলের প্রতি সম্মান প্রদর্শনের বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, এখান থেকে বাড়ি ফিরে মানুষকে বোঝাতে হবে কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনা প্রসঙ্গে। তৃণমূল কংগ্রেস থাকলে ফ্রিতে রেশন, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, কৃষকবন্ধু, পেনশন, ভাতা, জয় জোহার, ঐক্যশ্রী, সবুজসাথী সহ পাবেন। বিজেপি সব বন্ধ করে দিচ্ছে। চাকরি ছাঁটাই হচ্ছে। দরিদ্র মানুষের জন্য কিছু নেই। হরণ করেছে।
দলনেত্রী বলেন, ব্যক্তির থেকে দল বড়। নিজেকে বড় করতে সংবাদমাধ্যমে মুখ খোলা নয়। এদিনের সমাবেশ মঞ্চ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, গ্রামে ফিরে গিয়ে স্লোগান দেবেন বিজেপি হঠাও, সিপিএম হঠাও। গ্যাসের দাম, পেট্রোলের দাম বাড়ছে কেন জবাব দাও। রেলে লোক ছাঁটাই, টি বোর্ড থেকে কোল ইন্ডিয়া, এয়ার ইন্ডিয়া বন্ধ করা হচ্ছে কেন জবাব দাও। বেকার যুবক-যুবতীদের চাকরি না দিয়ে আর্মি দখল করা হচ্ছে কেন বিজেপি সরকার জবাব দাও।