নীরজ চোপড়ার চোট চিন্তায় রাখছে কমনওয়েলথ গেমসে নামা নিয়ে

0 0
Read Time:5 Minute, 52 Second

নিউজ ডেস্ক::টোকিও অলিম্পিকে সোনা জেতার পর বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ঐতিহাসিক রুপো এনে দিয়ে ভারতের পদক জয়ের দীর্ঘ খরা মেটালেন নীরজ চোপড়া।

তবে এই পদক নিশ্চিতের আগে চোট-শঙ্কা উঁকি দিয়েছিল নীরজের মনে। তবে পদক জয়ের পথে কোনও কিছু বাঁধা হতে পারেনি। এবার নীরজ নামবেন কমনওয়েলথ গেমসে। তবে রয়েছে চোট-শঙ্কাও।

আজ ফাইনালের শুরুটা অবশ্য প্রত্যাশিতভাবে হয়নি। প্রথম থ্রো ফাউল। পরের থ্রো ৮২.৩৯ মিটার ও ৮৬.৩৭ মিটারের। ফলে মাঝামাঝি অবধিও পদকের সম্ভাবনা থেকে দূরেই ছিলেন টোকিও অলিম্পিকে জ্যাভলিনে সোনাজয়ী। এদিন চতুর্থ থ্রো-য় নীরজ ৮৮.১৩ মিটার দূরতে জ্যাভলিন ছুড়তে সক্ষম হন। যা নিশ্চিত করে তাঁর পদক। এই ৮৮.১৩ মিটারের বর্শা নিক্ষেপ নীরজের কেরিয়ারে সেরা পারফরম্যান্সের তালিকায় রইল চতুর্থ স্থানে। তবে কামব্যাক যে সহজ ছিল না তা জানিয়েছেন নীরজ।

নীরজ সাংবাদিকদের বলেন, পরিস্থিতি খুব চ্যালেঞ্জিং ছিল। সামনের দিক থেকে হাওয়া আসছিল। একে কঠিন প্রতিযোগীরা রয়েছেন, সেই সঙ্গে আবহাওয়ার এই অবস্থা পরিস্থিতি কঠিন করে দেয়। তবে আমি মনে মনে নিশ্চিত ছিলাম, ভালো থ্রো আসছেই। আমি প্রথম তিনটি ক্ষেত্রেও চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু বড় থ্রো আসেনি। ফলে চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতেও যেভাবে কামব্যাক করেছি তাতে ভালো লাগছে। ১৯ বছর পর বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপ থেকে ভারতকে পদক এনে দিতে পেরে খুশি। এই রুপো নিজের সঙ্গেই রাখব।

চতুর্থ থ্রো রুপো জয় নিশ্চিত করলেও পরের দুটি থ্রো ফাউল হয়। কেন আরও ভালো করতে পারলেন না সেটাও স্পষ্ট করেছেন নীরজ। তিনি বলেন, চতুর্থ থ্রো আরও দূরত্বে যেতে পারতো। কিন্তু জ্যাভলিন ছুড়তেই উরুর কাছে, কুঁচকিতে যন্ত্রণা অনুভব করি। সে কারণে পরের দুটি থ্রোয় নিজের সেরাটা দিতে পারিনি। উরুতে ব্য়ান্ডেজ বেঁধে রেখেছেন শক্ত করে। ঠিক কী হয়েছে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। কাল সকাল অবধি অপেক্ষা করতে হবে। নীরজের আশা, এই চোট তাঁর কমনওয়েলথ গেমসে নামার পথে বাধা তৈরি করবে না।

গতবারের চ্যাম্পিয়ন গ্রেনাডার অ্যান্ডারসন পিটার্স সোনা জিতেছেন ৯০.৫৪ মিটার থ্রোয়ের দৌলতে। প্রথম দুটি রাউন্ড এবং শেষ রাউন্ড, এই তিনবার ৯০ মিটার পার হয়ে যায় তাঁর থ্রোগুলি। অলিম্পিকের রুপোজয়ী চেক প্রজাতন্ত্রের জাকুব ভাদলেখ ব্রোঞ্জ জেতেন, তাঁর থ্রো ৮৮.০৯ মিটারের। নীরজের শুরুটা ভালো না হলেও চতুর্থ থ্রোটির পর তাঁর মুখে ধরা পড়ে চেনা হাসি। নীরজ জানান, অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন হিসেবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে কোনও চাপ অনুভব করেননি। সেরাটা দেওয়াই তাঁর লক্ষ্য ছিল। নিজের সেরা সাফল্যকে ছাপিয়ে যাওয়ার লক্ষ্য নিয়েই তিনি ট্র্যাকে নামেন। নীরজের কথায়, তৃতীয় রাউন্ডের পর চ্যালেঞ্জিং পজিশনে ছিলাম। কিন্তু মনে বিশ্বাস ছিল ভালো করার। চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি সেরা থ্রোটির জন্য। প্রতিবার কোনও অ্যাথলিটই সোনা জিততে পারেন না। কিন্তু নিজের সেরাটা উজাড় করে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হয়। আজকের চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতি থেকে অনেক কিছু শিখেছি। আরও উন্নতি করতে হবে।

প্রত্যয়ী নীরজ বলেন, আগামী বছর বুদাপেস্টে যে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ হবে তাতে সোনা জেতার লক্ষ্যেই নামব। সেখানে পদকের রং বদলাতে চাই। অলিম্পিকের পর অনুশীলন শুরু করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। রিলিজ অ্যাঙ্গেল নিয়ে প্রয়োজনীয় কিছু বিষয় নিশ্চিত করেছি। এ বছর থ্রো-য় ধারাবাহিকতাও রয়েছে। ৯০ মিটারের মাইলস্টোন এখনও স্পর্শ করতে না পারলেও আমি এর কাছাকাছি পৌঁছে গিয়েছি। ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই ৯০ মিটারের হার্ডল টপকাতে চান নীরজ। সামগ্রিকভাবে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপের প্রস্তুতিতে খুশি নীরজ। কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে সোনা জেতায় অভিনন্দন জানান পিটার্সকেও।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!