তদন্তে শুভেন্দুকেও যোগ করার আহ্বান কুণালের
নিউজ ডেস্ক::আবারও টাকা উদ্ধার।
এবার টাকা কংগ্রেস বিধায়কদের গাড়িতে। তা নিয়ে উথাল-পাথাল রাজনীতি। আর এই টাকা উদ্ধারের ঘটনায় নাম জড়াল বিজেপিরও। শুধু অভিযোগ নয়, তদন্তে উঠে এল ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস বিধায়কদের অসম-যোগও। আর হাওড়া থেকে ঝাড়খণ্ড কংগ্রেস বিধায়কদের টাকা-সহ গ্রেফতার করা পর এই মামলায় বিজেপির শুভেন্দু অধিকারীকেও সংযুক্ত করার দাবি জানালেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
এ রাজ্যের তৃণমূল সরকারের গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে উদ্ধার হয়েছিল টাকার পাহাড়। তারপর এই বাংলাতেই ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস বিধায়কদের কাছে থেকে উদ্ধার হল লক্ষ লক্ষ টাকা। গাড়িতে করে সেই টাকা নিয়ে কলকাতা থেকে ঝাড়খণ্ডে যাওয়ার মুখে পাঁচলায় হাওড়া পুলিশের হাতে ধরা পড়েন তাঁরা। তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করে এবং তদন্তসাপেক্ষে জানা যায়, কংগ্রেস বিধায়করা গুয়াহাটি হয়ে এসেছিলেন কলকাতায়।
তাঁরা কলকাতা থেকে ঝাড়খণ্ড অভিমুখে সড়কপথে যাওয়ার সময় কংগ্রেস সাংসদরা টাকা-সহ পাকড়াও হন। স্বভাবতই প্রশ্ন উঠে যায় ওই টাকার উৎস নিয়ে। কংগ্রেস ও তৃণমূল উভয়েরই অভিযোগ ওই টাকা অপারেশন লোটাসের। সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারী দাবি করেছিলেন মহারাষ্ট্রের পর ঝাড়খণ্ড, রাজস্থান এবং বাংলার সরকার ভাঙা হবে। এই পরিপ্রেক্ষিতেই ঝাড়খণ্ডে অপারেশন লোটাস প্রসঙ্গ এসে পড়ে ওই টাকা উদ্ধারের পর।
ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস বিধায়কদের গাড়ি থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা উদ্ধারের পর প্রদেশ সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, অপারেশন লোটাসের টাকা হতে পারে। ঝাড়খণ্ড কংগ্রেসের তরফেও দাবি করা হয়, সব তথ্য আছে সময় হলেই প্রকাশ করা হবে। তারপর তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে কুণাল ঘোষ বলেন, অপারেশন লোটাসের কথা তো বিজেপির পরিষদীয় নেতাই বলেছিলেন। যিনি বলেছিলেন মহারাষ্ট্রের পর কোন কোন রাজ্যের সরকার ভাঙার পরিকল্পনা রয়েছে, তাঁকেও এই মামলায় যোগ করতে হবে।
কুণাল ঘোষ এই মর্মে নাম করেই শুভেন্দু অধিকারীর দিকে আঙুল তুলেছেন। তিনি বলেন, কোথা থেকে টাকা এল, কে টাকাটা দিল, তা তদন্তসাপেক্ষ। তবে ক’দিন আগে দলবদলু শুভেন্দু অধিকারীও তো এই একই কথা বলছিলেন। বলছিলেন সরকার ফেলার কথা। তার সঙ্গে জড়িত ব্যাপার নয় তো টাকা উদ্ধারের ঘটনা। তাঁর দাবি, এই তদন্তে শুভেন্দু অধিকারীকেও যোগ করতে হবে। কারণ তিনিই তো মহারাষ্ট্রে সরকার পতনের পর বলেছিলেন. এরপর ঝাড়খণ্ড।
তৃণমূলের দেবাংশু ভট্টাচার্যও প্রশ্ন তোলেন, কলকাতায় বসে ঝাড়খণ্ডের কংগ্রেস জোট সরকার ভাঙার ডিলিং চলছিল না তো? সেই ডিলিংসের টাকাই কংগ্রেস বিধায়কদের কাছ থেকে মিলতে পারে! কংগ্রেস ও তৃণমূল উভয়ের মুখেই শোনা গিয়েছে, ওই টাকা বিধায়ক কেনাবেচার হতে পারে। উদ্ধার হওয়া ওই টাকা হতে পারে ক্রস ভোটিংয়ের ভেট! কয়েক দিন আগেই দেশের পঞ্চদশ রাষ্ট্রপতি নির্বাচন হয়েছে, সেখানে ঝাড়খণ্ড রাজ্য বিধানসভায় ক্রস ভোটিং হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। আবার সরকার ভাঙতে এক এক বিধায়ককে ১০ কোটি করে টাকা দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।
ঝাড়খণ্ডের তিন বিধায়ক-সহ পাঁচ কংগ্রেস নেতার গাড়ি থেকে টাকা উদ্ধারের পর তাঁদের জেরা করে জানা গিয়েছে তাঁরা কলকাতা থেকে মন্দারমণি যাচ্ছিলেন। তাঁদের গাড়িতে উদ্ধার হয় ৪৯ লক্ষ টাকা। ওই বিপুল পরিমাণ টাকা তাঁরা বস্ত্র কেনার জন্য রেখেছিলেন বলে জানিয়েছেন জেরায়। কিন্তু কেন গাড়িতে করে অত পরিমাণ লিকুইড মানি নিয়ে যাচ্ছিলেন, তা তো বেআইনি, তার কোনও সদুত্তর মেলেনি।