দেবী দুর্গার এক রূপ অসুরবিনাশী, আরেক রূপ মমতাময়ী মাতার
নিউজ ডেস্ক::বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের কাছে দেবী দুর্গা পরম ভক্তিময়। তাঁর এক রূপ অসুরবিনাশী, আরেক রূপ মমতাময়ী মাতার। তিনি অশুভর প্রতীক অসুরদের দলপতি মহিষাসুরকে বধ করে দেবকুলকে রক্ষা করেছিলেন। আমাদের বিশ্বাস, এর মধ্য দিয়ে অন্যায়-অশুভর বিপরীতে ন্যায় ও শুভশক্তির জয় হয়েছিল। তিনি কেবল সৌন্দর্য-মমতা-সৃজনের আধারই নন, অসহায় ও নিপীড়িতের আশ্রয় দানকারী বলেও গণ্য হন।
মাতৃ আরাধনা তখনই স্বার্থক হয়ে উঠবে, যখন ঘরে ঘরে দূর্গার মত মেয়েদের প্রকাশ ঘটবে। সেটা কি হয়েছে? বছর বছর ঢাক-ঢোল বাজিয়ে দূর্গতিনাশিনীর আরাধনা করেও কেন আমাদের দূর্গতি দূর হচ্ছে না। শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন,
‘পূঁজা পার্বন তুই যতই করিস,
ফুল, তুলসী, গঙ্গা জলে
অনুশীলনী কৌশল ছাড়া,
ফল পাবে না কোন কালে।’
তাই, দূর্গা পূজা কেবল মাত্র পুস্পবিল্বপত্রের এবং ঢাক-ঢোলের পূজা নয়। এ পূজা মানবতার এক বিরাট মিলন উৎসব। মাতৃ আরাধনায় রত যারা তাদের উদ্দেশ্যে করে শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন-
‘মা সবারই মা,
কাউকে ছেড়ে দিয়ে নয়,
কাউকে বাদ দিয়ে নয়,
কাউকে পরিত্যাগ করে নয়।’
এই হলো মায়ের স্বভাব প্রকৃতি।
তিনি যেন জীবজগতের একত্ববিধানের এক স্বরূপ। সব সন্তান যেমন মায়ের নাড়িছেঁড়া ধন, তেমনি সেই সন্তানরা যদি আবার মায়ে তৃপ্তি ও স্বস্তি বিধান করতে আগ্রহান্বিত হয়, তাকে ভালোবেসে, তার সেবা করে, তখন সেই সন্তানরাও আবার পারস্পরিক সম্প্রীতি নিয়ে মিলেমিশে থাকতে পারে। তাদের মধ্যে বিক্ষোভ বা বিচ্ছেদ মাথা চাড়া দিতে পারে না।
এমন ভাবে থাকলেই পূজার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয়। সবাইকে নিয়ে উদ্বর্দ্ধনার পথে এগিয়ে চলা। প্রতিমাকে পুতুল মনে করে পূজা করলে পূজার উদ্দেশ্য সিদ্ধ হয় না। দেবতাকে মাটি বা পাথরের পুতুল ভাবতে ভাবতে আমাদের অন্তরটাও ওই রকম মাটি বা পাথর হয়ে ওঠে।