মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে দূর্গাপুজোর উল্লেখ আছে

0 0
Read Time:4 Minute, 5 Second

নিউজ ডেস্ক::কবে, কখন, কোথায় প্রথম দুর্গাপূজো শুরু হয়েছিল–তা সঠিকভাবে কিছু জানা যায় না। এ বিষয়ে নানা মুনির নানা মত রয়েছে।। তবে ইতিহাসের পাতা ঘেঁটে ভারতের দ্রাবিড় সভ্যতায় মাতৃতান্ত্রিক দ্রাবিড় জাতির মধ্যে মাতৃদেবীর পূজার প্রচলন ছিল বলে জানা যায়।। সিন্ধু সভ্যতায় দেবীমাতার, ত্রিমস্তক দেবতা, পশুপতি শিবের পূজার প্রচলন ছিল। দূর্গা শিবের অর্ধাঙ্গিনী হিসাবে অথবা দেবী মাতা হিসাবে পূজা করা হতে পারে। তবে সঠিক কোনও তথ্য পাওয়া যায় না।

তবে মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যে দূর্গাপুজোর উল্লেখ আছে।।১১শ শতকে মৈথিলী কবি বিদ্যাপতির দূর্গাভক্তিতরঙ্গিনী’তে দুর্গা-বন্দনা পাওয়া যায়। ১৬১০ সালে কলকাতার বারিশার রায়চৌধুরী পরিবার প্রথম দূর্গাপুজার আয়োজন করেছিল বলে উল্লেখ পাওয়া যায়।।পলাশীর যুদ্ধে জয়লাভের জন্য ১৭৫৭ সালে কলকাতার শোভা বাজার রাজবাড়িতে রাজা নবকৃষ্ণদেব লর্ড ক্লাইভের সন্মানে দূর্গাপূজার মাধ্যমে বিজয় উৎসবের আযোজন করেছিলেন ।বৃটিশ বাংলায় এই পূজা ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পায়। ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে দূর্গাপুজো স্বাধীনতার প্রতীক হিসাবে জাগ্রত হয়। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে এই পূজা ঐতিহ্যবাহী বারোয়ারী হিসাবে জনপ্রিয়তা লাভ করে। আর স্বাধীনতার পর এই পূজা পৃথিবীর অন্যতম প্রধান উৎসবের মর্যাদা পায়।

বাংলায় দেবী দুর্গার যে মূর্তিটি সচরাচর দেখা যায় সেটি পরিবারসমন্বিতা বা সপরিবার দুর্গার মূর্তি। এই মূর্তির মধ্যস্থলে দেবী দুর্গা সিংহবাহিনী ও মহিষাসুরমর্দিনী; তাঁর ডানপাশে উপরে দেবী লক্ষ্মী ও নিচে গণেশ; বামপাশে উপরে দেবী সরস্বতী ও নিচে কার্তিকেয়। কলকাতায় সাবর্ণ রায়চৌধুরী পরিবার ১৬১০ সালে এই সপরিবার দুর্গার প্রচলন করেন ।

ছিল সম্রাট সমুদ্রগুপ্তের আদলে যুদ্ধের দেবতা রূপে । এছাড়াও বাঁকুড়া জেলার বিষ্ণুপুর-সংলগ্ন অঞ্চলে দেবী দুর্গা এক বিশেষ মূর্তি দেখা যায়। সেখানে দেবীর ডানপাশে উপরে গণেশ ও নিচে লক্ষ্মী, বামে উপরে কার্তিকেয় ও নিচে সরস্বতী এবং কাঠামোর উপরে নন্দী-ভৃঙ্গীসহ বৃষভবাহন শিব ও দুইপাশে দেবীর দুই সখী জয়া ও বিজয়া অবস্থান করেন। কলকাতার কোনও কোনও বাড়িতে দুর্গোৎসবে লক্ষ্মী ও গণেশকে সরস্বতী ও কার্তিকেয়ের সঙ্গে স্থান বিনিময় করতে দেখা যায়। আবার কোথাও কোথায় দুর্গাকে শিবের কোলে বসে থাকতেও দেখা যায়। এগুলি ছাড়াও বাংলার বিভিন্ন অঞ্চলে দেবী দুর্গার বিভিন্ন রকমের স্বতন্ত্র মূর্তিও চোখে পড়ে। তবে দুর্গার রূপকল্পনা বা কাঠামোবিন্যাসে যতই বৈচিত্র থাকুক, বাংলায় দুর্গোৎসবে প্রায় সর্বত্রই দেবী দুর্গা সপরিবারে পূজিতা হন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!