গুজরাত সরকারকে জবাব দেওয়ায় নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
নিউজ ডেস্ক::সুপ্রিম কোর্ট গুজরাত সরকারকে বিলকিস বানো মামলায় ১১ জন দোষীকে মুক্তির চ্যালেঞ্জ করা আবেদনের জবাব দেওয়ার জন্য দুই সপ্তাহ সময় দিয়েছে। তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রের একটি আবেদনের ভিত্তিতে সুপ্রিম কোর্ট গুজরাত সরকারকে দুই সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। অন্যদিকে, গুজরাত সরকারের আইনজীবী জানিয়েছে, সমস্ত নথি সুপ্রিম কোর্টে পেশ করা হবে। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট সিপিআই-এম নেত্রী সুভাষিনী আলি, সাংবাদিক রেবতী লাউল ও শিক্ষাবিদ রূপরেখা ভর্মার আবেদনের ভিত্তিতে নোটিশ জারি করেছিল। শুক্রবার সুপ্রিম কোর্টে আইনজীবী ঋষি মালহোত্রা বিলকিস বানো মামলায় দোষীদের হয়ে উপস্থিত ছিলেন।
২০০২ সালে গোধরা পরবর্তী বিলকিস বানো মামলায় ১১ জন আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডে দণ্ডিত করা হয়েছিল। আসামিদের চলতি বছর স্বাধীনতা দিবেসর দিন মুক্তি দেওয়া হয়। ২১ জানুয়ারি ২০০৮ সালে মুম্বইয়ের বিশেষ সিবিআই আদালত বিলকিস বানোর পরিবারের সাতজনকে গণধর্ষণ ও হত্যার জন্য যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের নির্দেশ দেয়। পরে বোম্বে হাইকোর্ট তাদের দোষী সাব্যস্ত করে। আসামি ১১ জন ১৫ বছরের বেশি জেলে ছিল। আসামিদের একজন রাধেশ্যাম শাহ সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেন জামিনের। গোধরা জেলার কালেক্টর সুজয় মায়াত্র জানিয়েছেন, আসামিদের সাজা মুকুবের জন্য গুজরাত সরকারকে সুপ্রিম কোর্ট একটি কমিটি গঠনের নির্দেশ দেয়। কয়েক মাস আগে কমিটি ক্ষমার সুপারিশ গুজরাত সরকারকে পাঠায়। এরপরেই আসামিদের মুক্তির আদেশ গুজরাত সরকার দেয় বলে জানা গিয়েছে।
ঘটনার সময় বিলকিস বানো মাত্র ২০ বছরের ছিলেন। তিনি সেই সময় কয়েক মাসের অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। তিনি নৃশংস গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন। আসামিরা যাদের তিনি ছোটবেলা থেকে চিনতেন তাঁরাই বিলকিস বানোকে গণধর্ষণ করে। এছাড়া বিলকিস বানোর পরিবারের সাতজনকে গণধর্ষণ করে খুন করে। বিলকিস বানোর তিন বছরের মেয়েও এই নির্মম হত্যালীলা থেকে বাঁচতে পারেনি। বিলকিস বানুর সংজ্ঞাহীন দেহকে মৃত ভেবে আসামিরা চলে যায়। জ্ঞান ফেরার পর স্থানীয় আদিবাসি মহিলার কাছ থেকে কাপড় চেয়ে পরেন। তিনি থানায় অভিযোগ দায়ের করলে, মহিলা কনস্টেবল কেসটি চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন। ২০০৪ সালে সুপ্রিম কোর্ট গুজরাত থেকে মামলাটি মুম্বইয়ে সরিয়ে আনার নির্দেশ দেয়। অভিযুক্তদের বাঁচানোর জন্য হেড কনস্টেবলের মিথ্যা রেকর্ড তৈরির জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়। প্রমাণের অভাবে ২০ জন অভিযুক্তের মধ্যে সাত জনকে ছেড়ে দেওয়া হয়। বিচার চলাকালীন একজনের মৃত্যু হয়। ১১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের রায় দেয় আদালত।