মোদী-শাহের রাজ্যে পাল্লা ভারী কার!
নিউজ ডেস্ক::মোদী-শাহের রাজ্যে এবার অগ্নিপরীক্ষায় বিজেপি। এ বছরের শেষেই নির্বাচন। বিজেপি কি সরকার ধরে রাখতে পারবে? নাকি আড়াই দশক পর হাতছাড়া হবে গুজরাট। প্রবল সরকারি বিরোধী হাওয়া চলছে। আগও ছিল, তা ওভারকাম করে সরকার ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছে বিজেপি। এবার পারবে কি না, তার আভাস মিলল অভ্যন্তরীণ সমীক্ষায়।
মোদী-শাহের গড়ে এবার বিজেপির কাছে বড় ফ্যাক্টর হয়ে উঠেছে আম আদমি পার্টি। তাই তাঁদের নিয়ে আলাদা করে ভাবতে হচ্ছে বিজেপিকে। পাঞ্জাবে সরকার গড়ার পর মোদী-রাজ্যের দিকে হাত বাড়িয়েছে অরবিন্দ কেজরিওয়ালের আম আদমি পার্টি। তবে এখানে প্রধানত লড়াই হবে বিজেপি বনাম কংগ্রেসের। আর তাঁদের লড়াইয়ে কী-ফ্যাক্টর হয়ে উঠতে পারে আম আদমি পার্টি।
বিজেপির অভ্যন্তরীণ যে সমীক্ষা রিপোর্টে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে জমা পড়েছে তা দেখে মাথায় হাত পড়েছে মোদী-শাহের। এখন এই প্রতিকূলতা কাটানোর উপায় খুঁজছেন তাঁরা। দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে এক্স ফ্যাক্টর হয়ে ওঠা অরবিন্দ কেজরিওয়াল ও তাঁর পার্টিকে নিয়ে পৃথক ভাবনা-চিন্তা করছে বর্তমান শাসক দল।
বিজেপিশাসিত রাজ্যের মুখ্যমন্রীহয়দের বৈঠকের আগে গুজরাত যে রিপোর্ট কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে এসেছে, তাতে সিঁদুরে মেঘ দেখতে পারছেন অমিত শাহ, জেপি নাড্ডারা। এবার বিজেপির অভ্যন্তরীণ রিপোর্টে গুজরাত হাতছাড়া হওয়ার সমূহ সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। বিভিন্ন বেসরকারি সমীক্ষা রিপোর্টেও তার আভাস মিলেছে।
গুজরাত বিধানসভা ১৮২ আসনবিশিষ্ট। চলতি বছরের শেষে বিধানসভা নির্বাচনের আগে তাই সাজো সাজো রব। কোন পক্ষ কতটা তৈরি, কে কত আসন পেতে পারে, তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে ভোট কাউন্টডাউন। এবার বিজেপি ও কংগ্রেসের ঝুলিতে কত আসন যেতে পারে, আম আদমি পার্টিই বা কটি আসন পেতে পারে, তা নিয়ে স্পষ্ট আভাস দিয়েছে বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা রিপোর্ট।
২০১৭ সালে ১৮২ আসন বিশিষ্ট গুজরাতে ৯৯টি আসনে জিতে ক্ষমতায় আসে বিজেপি। কংগ্রেস পায় ৭৭টি আসন। বাকি ৬টি আসন ভাগ করে নেয় নির্দল, বিএসপি ও এনসিপি। কঠিন পরিস্থিতিতে বিজেপি কংগ্রেসের বাধা টপকে ২০১৭ সালে সরকার টিকিটে রাখতে সক্ষম হয়। কিন্তু এবার আরও কঠিন হতে চলেছে লড়াই। তার মধ্যে এবার আসরে নেমেছে আম আদমি পার্টি। অবশ্য বিশেষজ্ঞ মহল মনে করছে, তাতে বিজেপিরই লাভ হবে।
রাজ্যের একটি বেসরকারি সংস্থা ও বিজেপির অভ্যন্তরীণ সমীক্ষা রিপোর্টে জানা গিয়েছে, এবার ভোটে বিজেপি গতবারের তুলনায় ৯ থেকে ১০টি আসন কম পেতে পারে। উল্টোদিকে কংগ্রেসের আসন সংখ্যা বাড়তে পারে ৪-৫টি। আর আম আদমি পার্টি পেতে পারে তিনটি আসন। ফলে এবার বিজেপিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে গেলে যে আরও কাঠখড় পোড়াতে হবে, তা নিশ্চিত।
গুজরাতে একটা কথা আছে, আমেদাবাদ যার, গুজরাত তার। সেই আমেদাবাদে বিজেপি পেতে পারে ১১টি আসন আর কংগ্রেস পেতে পারে ৯টি আসন। এখানে একটু হেরফের হলেই সমূহ বিপদ। বিজেপির শক্ত ঘাঁটি গান্ধীনগরে আবার কংগ্রেস পেতে পারে তিনটি আসন আর বিজেপি ২টি আসন। আদিবাসী অধ্যুষিত জেলায় বিজেপি জবরদস্ত ধাক্কা খেতে পারে। ফলে এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া তাঁদের কাছে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।
আম আদমি পার্টি সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল কী করেন, তার উপর অনেকটাই নির্ভর করবে গুজরাতের ভাগ্য। তিনিই ফারাক তৈরি করে দিতে পারেন বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে। বিজেপি বিশ্বাস করতে শুরু করেছে, আম আদমি পার্টি রাজ্যে পা রাখলে সুবিধা হবে তাঁদেরি। কেনন আম আদমি পার্টি বা আপ কংগ্রেসের ভোটব্যাঙ্কে তাবা বসাবে। তাতে বিজেপির জয়ের পথ প্রশস্ত হবে। মাশুল গুণতে হবে কংগ্রেসকে। তাই অরবিন্দ কেজরিওয়াল গুজরাতে এলে তাঁকে খুল্লামখুল্লা আক্রমণ না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। মানুষের দৃষ্টি তাঁর দিকে ঘুরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বিজেপির তরফে। ভোট বিভাজনের রাস্তায় হেঁটে ফায়দা তোলাই বিজেপির আপাত লক্ষ্য।