ধর্মকথা – গীতার জ্ঞানযোগ

0 0
Read Time:2 Minute, 47 Second

নিউজ ডেস্ক::ধর্মক্ষেত্র কুরুক্ষেত্রে চোখের সামনে নিজের ভাই,আত্মীয় ও গুরুদের দেখে অর্জুন ধনুক ফেলে কৃষ্ণের পায়ে আত্মসমর্পণ করে বলেন,আমার যশ চাই না,খ্যাতি চাই না,রাজ্য চাই না।আমার সামনে যাঁরা আছে তাঁরা আমার পরম আত্মীয়।তাঁদের বিরুদ্ধে আমি অস্ত্র ধারণ করতে পারব না।আমার হাত ও দেহ অবশ হয়ে আসছে।তখন কৃষ্ণ অর্জুনকে যে বাণী শোনান তাই হল শ্রীমৎ ভগবত গীতা।
গীতার চতুর্থ অধ্যায়ে ‘জ্ঞানযোগ’এর কথা আছে।সেখানে কৃষ্ণ অর্জুনকে বলছেন,হে অর্জুন আমার ও তোমার বহুজন্ম অতিক্রম হয়েছে।আমি সেইসব জন্মের কথা স্মরণ করতে পারি কিন্তু তুমি পারো না।কারণ আমি জন্ম ও মৃত্যুর উর্দ্ধে।শুধু যুগে যুগে অধর্মের বিনাশের জন্য আমাকে আবির্ভুত হতে হয়।


কৃষ্ণ বলেন,আসক্তি,ভয় ও ক্রোধ থেকে মুক্ত হয়ে একান্তভাবে আমার আশ্রয়ে এসে বহু মানুষ ‘জ্ঞানযোগ’ লাভ করেছে।সমস্ত কামনা ও বাসনা আমাকে দিয়ে সম্পূর্ণ নির্লিপ্ত হলেই প্রকৃত জ্ঞান অর্জন করা যায়।যে যেভাবে আমার প্রতি আত্মসমর্পন করবে,আমি তাকে সেভাবেই পুরস্কৃত করি।যিনি সকাম কর্মের আরাধনা করেন তিনি কখনো আমাকে প্রভাবিত করতে পারে না।নিষ্কাম কর্মই প্রকৃত কর্ম।সমস্ত কর্ম আমাকে আত্মসমর্পণ করে শুধু তোমার কর্তব্য করে যাও।এটাই জ্ঞানযোগের প্রকৃত সত্য।

অতএব তুমি তোমার কর্তব্য সম্পন্ন করো।এখন প্রশ্ন কর্ম কি?সবই কর্ম।তবে কর্ম ও অকর্মের বিভেদ ভুলে গিয়ে যিনি কর্মে অকর্ম ও অকর্মে কর্ম দর্শন করতে পারেন তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী।যিনি সমস্ত কর্মে কাম সংকল্প রোহিত তিনিই প্রকৃত জ্ঞানী।প্রকৃত জ্ঞানী কখনো কর্মফলের কথা ভাবেন না।সমস্ত কর্মফল আমায় নিবেদন করে শুধু কর্ম করে যাও।এটাই জ্ঞানযোগের মূল তত্ত্ব।
অর্জুন বিস্মিত হয়ে,আত্মমগ্ন হয়ে কৃষ্ণের দিকে তাকিয়ে থাকেন।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!