বিশ্বকাপের দীর্ঘতম ম্যাচে ইরানকে ২ গোলে হারালো ইংল্যান্ড
নিউজ ডেস্ক: খেলার গতি-প্রকৃতি বোঝার জন্য এই দীর্ঘ সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ।দ্বিতীয় দিনের সুচিতে ছিল ইরান ও ইংল্যান্ডের খেলা।এই খেলায় প্রথম হাপে ১৪ মিনিট ও দ্বিতীয় হাপে ১০ মিনিট এডেড টাইম দিতে বাধ্য হলেন রেফারি।তাই এটাকে বলা হচ্ছে বিশ্বকাপের দীর্ঘতম খেলা।
সমর্থকদের প্রত্যাশার পারদ বাড়িয়ে দিল ইংল্যান্ড । শেষ অবধি ‘ইটস কামিং হোম’ এর স্বপ্ন পূরণ হবে কিনা জানা নেই। তবে অনবদ্য জয়ে বিশ্বকাপ অভিযান শুরু করল ইংল্যান্ড। বিশ্বকাপকে প্রতিবাদের মঞ্চ হিসেবে বেছে নিয়েছিল ইরান। সরকার বিরোধী প্রতিবাদে জাতীয় সঙ্গীত গাইলেন না ইরান ফুটবলাররা। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নেমে ফুটবলকে হাতিয়ার করে যদিও সেই লড়াই দেখাতে পারল না ইরান। দলের এক নম্বর গোলরক্ষক আলিরেজা কনকাশন পরিবর্ত হিসেবে মাঠ ছাড়তেই যেন আরও অসহায় হয়ে পড়ে ইরান। ইংল্যান্ড শুরুতে যেন জল মাপছিল। প্রথম গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হয় ৩৫ মিনিট পর্যন্ত। তবে আলিরেজা মাঠে থাকলেও ইংল্যান্ডের গোলগুলির ক্ষেত্রে খুব বেশি কিছু করতে পারতেন না। এক বার গোলের মুখ খুলতেই ইংল্যান্ডকে আর রুখতে পারল না ইরান। শেষ অবধি ইংল্যান্ড জিতল ৬-২ এর ব্যবধানে।
যদিও ইরানের বিরুদ্ধে ক্লিন শিট রাখতে পারলো না ইংল্যান্ড।
তবে সমস্ত খেলায় আধিপত্য বজায় রাখলো ইংল্যান্ড।খেলা যথেষ্ট উপভোগ্য হলেও হতাশ করলো ইরান।ইরান শিবিরে প্রথম ধাক্কা দলের এক নম্বর গোলরক্ষকের চোট। ম্যাচের ১৫ মিনিট পেরোতেই হ্যারি কেনের ক্রস। সেটি ধরতে গিয়েই সতীর্থের সঙ্গে ধাক্কা লাগে ইরান গোলরক্ষক আলিরেজার। বেশ কিছুক্ষণ শুশ্রূষা চলে তাঁর। বেশ কিছুক্ষণ পর উঠেও দাঁড়ান। যদিও কনকাশনের আশঙ্কা ছিল। কয়েক মুহূর্ত খেলেই পরিবর্তনের ইঙ্গিত করেন আলিরেজা। বড় মঞ্চে খেলার অভিজ্ঞতা না থাকা হোসেন হোসেইনি পরিবর্ত গোলরক্ষক হিসেবে নামেন। তাতেও অবশ্য গোলের হদিশ পাচ্ছিল না ইংল্যান্ড। সুযোগ একেবারেই পায়নি, তা নয়। ইংল্যান্ডের আক্রমণ কিছুতেই দানা বাঁধছিল না। ভাগ্যও সঙ্গ দেয়নি।তবে পরিণামে জয় পেলো ইংল্যান্ড প্রবল গোলের খিদে আর মনের জোরে।গতি ও টেকনিকেও ইংল্যান্ড ইরান থেকে অনেকটা এগিয়ে ছিল।
ইংল্যান্ড প্রথম গোল ৩৫ মিনিটের মাথায় পেলেও তার আগে অন্তত ৩ টে সুযোগ এসেছিল।কিন্তু কাজে লাগাতে পারেনি ইংল্যান্ডে আক্রমণবাহিনী।প্রথম ৩২ মিনিটের মাথায় গোলের সুযোগ আসলেও তা কাজে লাগাতে পারে নি ইংল্যান্ড।
কায়রন ট্রিপিয়ারের কর্নারে হ্যারি ম্যাগুয়েরের হেড। পোস্টে লেগে ফিরে আসে। তার আগে বুকায়ো সাকার পাস থেকে বক্সে অনবদ্য গোলের সুযোগ পেয়েছিলেন মেসন মাউন্ট। যদিও কাজে লাগাতে পারেননি। অবশেষে গোলের দেখা মিলল ৩৫ মিনিটের মাথায়।
অনবদ্য ক্রীড়া নৈপুণ্যে হলো প্রথম গোল। ৮ মিনিটের ব্যবধানেই স্কোরলাইন ২-০ করেন আর এক তরুণ ফুটবলার বুকায়ো সাকা। প্রথমার্ধে ১৪ মিনিট অ্যাডেড টাইম দেওয়া হয়। সেখানেই ৩-০ করেন রহিম স্টার্লিং। ৩-০ গোলে এগিয়ে বিরতিতে যায় থ্রি-লায়ন্স।
দ্বিতীয়ার্ধে খেলার গতি বাড়িয়ে দেয় ইংল্যাড।আর ইরান যেন ধীরে ধীরে খেলা থেকে হারিয়ে যেতে থাকে।তবে শেষ পর্যন্ত লড়াই দেওয়ার চেষ্টা করেছে।
দ্বিতীয়ার্ধে কিছুটা সময় নিয়ে ফের আক্রমণ। ৬২ মিনিটে নিজের দ্বিতীয় এবং ইংল্যান্ডের চতুর্থ গোল বুকায়ো সাকার। ইরানও মরিয়া চেষ্টা চালায় গোল শোধের। প্রথমার্ধে একটি মাত্র সুযোগ তৈরি করতে পেরেছিল তারা। সুযোগ নষ্ট করেন জাহানবখশ।কিন্তু ৬৫ মিনিটের মাথায় গোল পেলো ইরান। গোল করেন মেহদি তারেমি। একঝাঁক পরিবর্তন করেন ইংল্যান্ড কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। তরতাজা ফুটবলারদের মাঠে নামিয়ে গতি বাড়ানোর লক্ষ্য ছিল। পরিবর্ত হিসেবে নামেন মার্কাস ব়্যাশফোর্ড, ফিল ফডেনরা। দ্বিতীয় জনের সঙ্গে কলকাতার অনবদ্য সম্পর্ক রয়েছে। ২০১৭ সালে অনূর্ধ্ব ১৭ বিশ্বকাপ খেলেছিলেন। কলকাতা থেকে ট্রফি নিয়ে ফিরেছিলেন ফিল ফডেনরা।
ইংল্যান্ডের এই জয়কে বলা যায় তারুণ্যের জয়।ইংল্যান্ডের তারুণ্যের জয় গানে যোগ দেন জ্যাক গ্রিলিশও। নির্ধারিত সময়ের ১ মিনিট আগে ইংল্যান্ডের হয়ে ষষ্ঠ গোল করেন জ্যাক গ্রিলিশ।
সোমবারের খেলা অত্যন্ত উপভোগ্য হলেও ইরান হারলো ইংল্যান্ডের স্কিল ও গতির কাছে।