ধর্মান্তকরণ নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে কেন্দ্রীয় সরকারের হলফনামা
নিউজ ডেস্ক::স্বামী বিবেকানন্দ শিকাগো বক্তৃতায় বলেছিলেন, পৃথিবীর সব ধর্মের উৎস ভারতের সনাতন ধর্ম অর্থাৎ বেদান্ত ধর্ম বা হিন্দু ধর্ম থেকে।তিনি বলেন,আমরা সব ধর্মকে মানি এবং শ্রদ্ধা করি। আমরা বিশ্বাস করি সব ধর্মের মধ্য দিয়েই পৌঁছানো যায় পরম ঈশ্বরের কাছে।সেই বিবেকানন্দের ভারত এখন এক ধর্মীয় সঙ্কটের মুখোমুখি।ধর্মান্তকরণ এখন একটা জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রাক স্বাধীন ভারতে ইউরোপীয় পাদ্রীরা বহুবছর বহু মানুষকে কখনো লোভ দেখিয়ে,কখনো ভয় দেখিয়ে ধর্মান্তকরণ করেছেন।তার ২০০/৩০০ বছর আগের থেকেই মুঘল ও পাঠানেরা ভারতে ধর্মান্তকরনে সচেষ্ট হয়।উগ্র তুর্কিরা তো হিন্দু ও বৌদ্ধ মঠ-মন্দির ভেঙে দেয়।
এই ভয়ঙ্কর ধর্মান্তকরনের ইতিহাস আমাদের চোখের সামনে আছে।
সেই বিষয় আবার একটা জ্বলন্ত সমস্যা হিসাবে উপস্থির হয়েছে ভারতের মতো একটা ‘ধর্ম নিরপেক্ষ’ রাষ্ট্রে।তার ফলে গত কয়েক বছর ধরেই ধর্মান্তর বিরোধী আইন প্রণয়নের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার সচেষ্ট।ইতিমধ্যে উত্তর প্রদেশে রাজ্য সরকার এই আইন বলবৎ করেছে।এমনকি সেখানে একজনকে শাস্তি দেওয়া হয়েছে।এক হিন্দু নাবালিকাকে বিবাহের কথা বলে ধর্মান্তর করা হয়েছিল।
এবার কেন্দ্রীয় সরকার সুপ্রিম কোর্টে হলফনামা দিয়ে বলেছেন,সমাজের পিছিয়ে পড়া গরিব মানুষদের বাঁচাতে এখনই সুপ্রিম কোর্ট এই ধর্মান্তর আইন বন্ধ করতে সমস্ত রাজ্যকে নির্দেশ দিক।
আর্থ-সামাজিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া সমাজের দুর্বল অংশকে লোভ দেখিয়ে বা ভয় দেখিয়ে ধর্মান্তরের চেষ্টাকে বন্ধ করার আবেদন আছে সেই হলফনামায়।হলফনামায় সরকার স্পষ্ট বলেছেন , “ধর্মীয় স্বাধীনতা মানে কাউকে জোর করে বা প্রতারণা করে ধর্মান্তরিত করা নয়।”
সোমবার সুপ্রিম কোর্টে সরকারি আইনজীবী অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায় বলেন,প্রতারণামূলক ধর্মান্তর রুখতে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে কড়া নির্দেশ দিক সুপ্রিম কোর্ট। তাঁর অভিযোগ, ভীতি প্রদর্শন, হুমকি, প্রতারণা করতে উপহার দেওয়া এবং আর্থিক সুবিধার মাধ্যমে প্রলুব্ধ করার মতো নানা উপায়ে ধর্মান্তর করা হচ্ছে।
তাঁর মতে, কোনও নির্দিষ্ট রাজ্য নয়, দেশজুড়েই এই সমস্যা ক্রমে মাথাচাড়া দিচ্ছে। একে অবিলম্বে মোকাবিলা করা দরকার। এমনটা চলতে থাকলে দেশ থেকে হিন্দুদের অস্তিত্ব মুছে যেতে পারে।
সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতির কাছে এই হলফনামা ভারতের একটা উল্লেখযোগ্য বিষয়।কারণ এর আগে ‘ধর্মান্তকরণ’ নিয়ে এভাবে দিল্লির উচ্চ আদালতে কখনো যাওয়া হয় নি।