নিয়োগেই নয়, বদলিতেও দুর্নীতি!
নিউজ ডেস্ক: শুধু নিয়োগেই নয়, শিক্ষক বদলিতেও দুর্নীতি হয়েছে রাজ্যে! সোমবার হাইকোর্টে শিক্ষক বদলিতে দুর্নীতি প্রসঙ্গে বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু আশঙ্কা প্রকাশ করলেন। তিনি বলেন, বদলিতেও দুর্নীতি হয়েছে, তাই পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ নিয়ে এবার চিন্তা করতে হবে। এদিন ঝালদা হাইস্কুলের এক শিক্ষক বদলি মামলায় এই মন্তব্য করেন বিচারপতি।
এদিন ঝালদা হাইস্কুলের শিক্ষক বদলি সংক্রান্ত মামলায় জেলা স্কুল পরিদর্শককে ডেকে পাঠান বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু। তাঁর বদলির কারণ নিয়ে বিচারপতির মন্তব্যে উঠে আসে নতুন এক দুর্নীতির কথা। সেইসঙ্গে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে জানান, বদলিতে গোটা জেলার সব স্কুলের অবস্থা খুব খারাপ হয়ে গিয়েছে।
বিচারপতি বলেন, ৬০ শতাংশ শিক্ষকই বদলি নিয়ে অন্য জেলায় চলে গিয়েছেন। ফলে পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়েছে। এই বদলির কোপে বহু স্কুল উচ্চমাধ্যমিক বিভাগ বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছে। এর ফলে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত রক্ষা করা যাচ্ছে না। স্কুল চালানোই মুশকিল হয়ে যাচ্ছে।
উল্লেখ্য, ঝালদা স্কুলে ২১ জন শিক্ষক ছিলেন। ইতিমধ্যেই ৮ জন বদলি নিয়ে চলে গেছেন অন্যত্র। এদিন আদালতে এই তথ্য জানান জেলা স্কুল পরিদর্শক। তারপরই বিচারপতি আশঙ্কা প্রকাশ করেন পড়ুয়াদের ভবিষ্যৎ ও স্কুলের পরিকাঠামো নিয়ে। এই মর্মেই তিনি বলেন, কেন এমন ঘটছে! শিক্ষকরতার চাকরিতে এত অনীহা কেন? ঝালদা স্কুলে ১১৫৩ জন ছাত্র আর শিক্ষক মাত্র ১৩ জন।
এদিন বিচারপতি নির্দেশ দেন, দু-সপ্তাদের মধ্যে পুরুলিয়া জেলা পরিদর্শককে সমগ্র পুরুলিয়া জেলার স্কুলের শিক্ষক ও ছাত্রের আনুপাতির হার কত সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট পেশ করতে হবে হাইকোর্টে। কেন পুরুলিয়ার এমন অবস্থা, সবাই স্থানান্তর চেয়ে বাইরে চলে যাচ্ছে। ফলে শিক্ষা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। শিক্ষকের অভাবে স্কুল বন্ধের মুখে দাঁড়িয়ে আছে। বিচারপতি এদিন মন্তব্য করেন, আমার মনে হয় এঁরা শিক্ষক নয়, এঁদের চাকরি থেকে অবসর নেওয়া উচিত। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে ২০ জানুয়ারি।
এদিনই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে সিবিআই বিস্ফোরক তথ্য জানায় আদালতে। রাজ্যে প্রায় ২১ হাজার পদে নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে বলে রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়। শুধু ব়্যাঙ্ক-জাম্পিংয়ে দুর্নীতি নয়, ওএমআর শিটের কারচুপি করেও নিয়োগ দুর্নীতি হয়েছে। গাজিয়াবাদ থেকে হার্ড ডিস্ক উদ্ধার হওয়ার পর ওএমআর শিটের বিষয়টি সামনে আসে। তাতে নবম-দশমে বেআইনিভাবে চাকরি পাওয়া আরও ৪০ জনের হদিশ মিলেছে বলে জানান নবনিযুক্ত সিট প্রধান অশ্বিনী শেনভি।