অরিন্দম শীলের ‘খেলা যখন ‘ – কিছু প্রাসঙ্গিক কথা
নিউজ ডেস্ক: গত ২ ডিসেম্বর ২০২২ অরিন্দম শীল পরিচালিত মিমি-অর্জুন অভিনীত ‘খেলা যখন ‘ রিলিজ করেছে।ইদানিং গতানুগতিক বস্তাপচা বাংলা সিনেমা যে আর দর্শক নিচ্ছে না তা বুঝতে ইন্ডাস্ট্রির একটু দেরি হয়েছে।বরং একটু রহস্যের টাচ থাকলে আর ভালো লোকেশন ও ভালো গান থাকলে বক্স অফিস খাচ্ছে।এই ভাবনা থেকেই ইদানিং আবার থ্রিলারে ফিরে যাচ্ছে বাংলা সিনেমা।এই প্রেক্ষাপটেই প্রকাশ পেল ‘খেলা যখন ‘।
যেকোনো ভালো থ্রিলার নির্ভর করে ওই থ্রিলারের রহস্যের বাঁধন ও রহস্যের উন্মোচনের উপর।সে দিক থেকে অরিন্দম শীল অনেকটাই সফল বলা চলে ।
ছবির গল্প ঊর্মিকে (মিমি চক্রবর্তী) ঘিরে। একটি দুর্ঘটনার পর কোমায় চলে যায় সে। আট মাস থাকে হাসপাতালে। যখন চিকিৎসকরা তার বাঁচার আশা প্রায় ছেড়েই দেয়, তখন জ্ঞান ফেরে ঊর্মির। কিন্তু স্মৃতি ফেরে না। চারপাশের মানুষদের তার অচেনা লাগে। এমনকি, দুর্ঘটনায় হারানো ছেলের মুখও যেন আবছা।
অনেক স্মৃতি হঠাৎ হঠাৎ ফিরে আসে। কিন্তু আশপাশের লোকজনেরও হাবভাব এমনই গোলমেলে যে, তার মাথা আরও গুলিয়ে যায়। ঊর্মি মনে করতে পারে না, সে আসলে কে। যা মনে পড়ে, তা বাকিদের কথার সঙ্গে মেলাতে পারে না। এরই মাঝে এক অচেনা ব্যক্তি হঠাৎ এসে বলে তার ছেলে বেঁচে আছে। এখন থেকেই রহস্য নতুন দিকে এগিয়ে যায়।চিত্রনাট্য দ্রুত ক্লাইমেক্সের দিকে এগোতে থাকে।কিন্তু সিনেমার ‘রাইসিং একশান’ ঠিক তটটা জমার বাঁধার আগেই চলে এসেছে ক্লাইম্যাক্স।
হঠাৎই অনেক তথ্য দর্শকের সামনে তুলে ধরা হয়। বুঝে ওঠার আগেই ছবি শেষ হয়ে যায়। তাই মনে হয়, আরও একটু সময় ধরে উত্তরগুলি পেলে বোধ হয় ভাল হত। বিশেষ করে, গল্পে যখন এতগুলি চরিত্র। সকলের বিষয়েই ভাল করে জানতে ইচ্ছা হবে দর্শকের।ফলে ‘ফলিং একশান’ বলতে চিত্র জগৎ যা বোঝে তাও ঠিক মতো দর্শক পেলো না।
কোমা থেকে ফিরে স্মৃতি হারিয়ে ফেলেছে ঊর্মি। তাই এই গল্প তার নিজের অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়ার লড়াইও বটে। সেই পথটি যতটা সময় ধরে, সংবেদনশীলতার সঙ্গে দেখানো উচিত, তা-ই করেছেন পরিচালক। কিন্তু তাতে থ্রিলারের গতির সঙ্গে আপস করেননি। ছবির মেকিং যে কোনও আন্তর্জাতিক থ্রিলারের মতোই। ক্যামেরা, লাইট, আবহসঙ্গীত— সবই যত্ন নিয়ে করা। ওয়াইড অ্যাঙ্গেলে শুট করা কিছু ফ্রেম এতটাই সুন্দর যে, দর্শক গল্প ভুলে তাকিয়ে থাকবেন। চিত্রনাট্যের পরতে পরতে সাসপেন্স আছে।কিন্তু সব মিলিয়ে একটা থ্রিলারের রস সম্পূর্ণ উন্মোচিত হলো না বলেই মনে হয়।