ত্রিপুরা রাজনীতির আবর্তে টিপ্রামোথা!
নিউজ ডেস্ক::একক দক্ষতায় এবার ত্রিপুরার বিধানসভা নির্বাচনে লড়েছে প্রদ্যোৎকিশোর মাণিক্য দেববর্মার টিপ্রামোথা। তিনি সাফ জানিয়ে দিলেন, ভোটের ফল প্রকাশের আগে কারও সঙ্গে কোনও বৈঠক হবে না। টিপ্রামোথাকে কাছে পেতে যেমন বাম-কংগ্রেস জোট আগ্রহী, তেমনই বিজেপি চাইছে টিপ্রামোথাকে নিজেদের জোটে।
ত্রিপুরার নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ হতে এখনও বাকি। একইসঙ্গে তিন রাজ্যের ভোটের ফল প্রকাশ হবে। কিন্তু আগে থেকেই বিজেপি চাইছে টিপ্রামোথাকে কাছে পেতে। তবে কি বিজেপি ধরেই নিয়েছে এবার একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাওয়া সম্ভব নয়। আর টিপ্রামোথা যে উপজাতি এলাকায় ভালো ফল করছে, সে ব্যাপারেও কি নিশ্চিত বিজেপি।
ত্রিপুরা রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তৈরি হয়েছিল, ফের টিপ্রামোথা প্রধান প্রদ্যোৎকিশোর মাণিক্য দেববর্মার সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন অমিত শাহ। যদিও এই খবর ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন প্রদ্যোৎকিশোর মাণিক্য দেববর্মা নিজেই। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, আগে ফল প্রকাশ হোক, তারপর তিনি ভাববেন।
উপজাতি এলাকায় এবার যে ট্রিপামোথা ভালো ফল করবে, তা বোঝাই গিয়েছিল। প্রদ্যোৎকিশোর মাণিক্য দেববর্মার প্রচারে যেভাবে মনুষের ঢল নেমেছিল, তারপর বিজেপি যেভাবে তাঁকে আক্রমণ শানাচ্ছিল, তাতে স্পষ্ট ত্রিপুরার পার্বত্য এলাকায় টিপ্রামোথা প্রধানকে ঘিরেই আবর্ত হয়েছে রাজ্য রাজনীতি।
টিপ্রামোথাকে নিয়ে কংগ্রেস ও সিপিএম তথা বামেরা ছিল চুপ। রাজনৈতিক মহল মনে করে, ভিতরে ভিতরে তাদের মধ্যে সমজোতা হয়েছিল। তার ফলেই কেউ কাউকে সে অর্থে আক্রমণ করেনি। এখন ত্রিপুরা ভোটপর্ব মেটার পর বিজেপি উঠে পড়ে লেগেছে খেলা ঘোরাতে। টিপ্রামোথা এবার ভালো ফল করতে পারে, তা ভেবেই আগে থেকে সেটিং করে রাখতে চাইছেন অমিত শাহ।
টিপ্রামোথা প্রধান কোনও সমালোচনাকেই এবার গায়ে মাখেননি। তিনি জনজাতির বঞ্চনার কথা তুলে ধরেই বাজিমাত করতে চেয়েছেন। অন্তত প্রচার দেখ মনে হয়েছে তিনি অনেকটাই সফল। টিপ্রাল্যান্ড ইস্যুতেই তিনি বাজিমাত করতে পারেন বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
প্রদ্যোৎকিশোর মাণিক্য দেববর্মা আগেই চূড়ান্ত করে দিয়েছেন টিপ্রাল্যান্ড নিয়ে লিখিত প্রতিশ্রুতি না পেলে তিনি জোটে যাবেন না। সেই ইস্যুতেই তিনি এককভাবে লড়াই করেছেন। এখন জনজাতি ভোটকে নিজের দিকে এনে কতটা প্রভাব বাড়িয়ে নিতে পারেন, তা-ই দেখার। টিপ্রামোথা যদি বেশিসংখ্যক আসন পায়, তবে বিজেপি বা বাম-কংগ্রেসেরও চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারে।
ত্রিপুরায় ৬০টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে ২০টি জনজাতি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত। এই ২০টি আসনে মধ্যে ২০১৮ সালে ১০টিতে জয়ী হয়েছিল বিজেপি, ৮টিতে তার সহযোগী আইপিএফটি। অর্থাৎ ১৮টিই গিয়েছিল বিজেপি জোটের ঝুলিতে। মাত্র দুটি আসনে জয়ী হয়েছিল সিপিএম। এবার এখানে টিপ্রামোথার প্রভাব। অধিকাংশ আইপিএফটি নেতা-বিধায়কও যোগ দিয়েছেন টিপ্রামোথায়। ফলে বিজেপি প্রমাদ গুণছে।