বিজেপির বাজিমাত এক মাস্টারস্ট্রোকেই
নিউজ ডেস্ক::প্রতিকূলতা সত্ত্বেও সঠিক পরিকল্পনায় ফের এক রাজ্যে জয় তুলে নিল বিজেপি। ত্রিপুরায় অ্যান্টি ইনকামবেন্সি ফ্যাক্টর বা প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া উড়িয়ে কোন জাদুবলে জয় পেল বিজেপি, তা নিয়ে শুরু হয়েছে চর্চা। বিজেপির এই পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে সর্বাগ্রে উঠে আসছে যে নীতি, তা হল- মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তন।
ত্রিপুরার পরিবর্তনের সরকারের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া ছিল তীব্র। তা বুঝে আগেভাগেই তাঁকে সরিয়ে স্বচ্ছ ভাবমূর্তির মানিক সাহাকে মুখ্যমন্ত্রী করেছিল বিজেপি। নির্বাচনের মাত্র ৯ মাস আগে এই একটি মাস্টারস্ট্রোক দিয়েই বিজেপি সফল অনেকাংশে।
সম্প্রতি মোদী-রাজ্য গুজরাত ও তারও আগে উত্তরাখণ্ডে মুখ্যমন্ত্রী বদল করে সফল হয়েছে বিজেপি। তারপর ত্রিপুরাতেও মুখ্যমন্ত্রী বদলে বিজেপি সাফল্যের দেখা পেল। আবার সামনে কর্নাটক নির্বাচন, সেখানেও মুখ্যমন্ত্রী বদল করেছে বিজেপি। ফলে বিজেপির এই কৌশল যে বিভিন্ন রাজ্য তাদের সাফল্যের খোঁজ দিচ্ছে, তা বলাই বাহুল্য।
ত্রিপুরার ক্ষেত্রে বিপ্লব দেব মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন দলের অন্দরে নানা গোষ্ঠীবাজি শুরু হয়েছিল। তিনি ব্যর্থ হচ্ছিলেন নিয়ন্ত্রণ করতে। মাঝে মন্ত্রিসভা রদবদল করে খানিকটা বিদ্রোহ ঠেকাতে পারলেও অনেকেই ক্ষুব্ধ ছিলেন মন্ত্রিসভায়। বিশেষ করে যাঁরা সুদীপ রায় বর্মনের সঙ্গে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূল হয়ে বিজেপিতে গিয়েছিলেন, তাঁরা বেঁকে বসেছিলেন।
বিপ্লব দেবের পরিবর্তে মানিক সাহা মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর বিজেপির সেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব একেবারেই উধাও হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া থাকলেও দলের মধ্যে যে অন্তর্কলহ ছিল, তা রুখে বিজেপিকে এক করতে সফল হন মানিক সাহা। সে অর্থে কোনও বিক্ষুব্ধ ছিল না বিপ্লব দেবের অপসারণের ফলে।
বিজেপির এই মাস্টারস্ট্রোক তাদেরকে সঙ্ঘবদ্ধ লড়াই করার পথ দেখিয়েছে। মোট কথা, সঠিক সময়ে মুখ্যমন্ত্রী বদল করে একেবারে যোগ্যতম প্রার্থীকে কুর্সিতে বসিয়ে ফায়দা লুটে নিল বিজেপি। অ্যান্টি ইনকামবেন্সি বা সরকার বিরোধী হাওয়া সফলভাবে রুখে বিজেপি ফের ক্ষমতা দখল করল। বিরোধীরা বিজেপির টিকিও ছুঁতে পারল না।
অথচ এবার বিজেপির অন্দরের কলহ ছাড়াও ত্রিপুরায় প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়া বইছিল তীব্র। বিপ্লব দেবের পরিবর্তে মানিক সাহা মুখ্যমন্ত্রী হতে তাও খানিকটা রদ হয়েছিল। বিজেপি যে বিশ্বাস খোয়াতে শুরু করেছিল তা ফিরে পায় মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহার সৌজন্য। আর বাম-কংগ্রেস শুধু প্রতিষ্ঠানবিরোধী হাওয়ার উপর ভিত্তি করে লড়তে গিয়ে মুখ থুবড়ে পড়ল। সঠিক পরিকল্পনার অভাবে সুবিধাজনক অবস্থায় থেকেও ফায়দা তুলতে পারল না কংগ্রেস ও সিপিএম। লড়াই দিয়েও হার মানতে হল তাদের।