সাগরদিঘি জয়ের পরে শাসকদলকে বাংলা ছাড়া করার ডাক অধীরের
নিউজ ডেস্ক::সাগরদিঘির উপনির্বাচনে বাম-কংগ্রেস প্রার্থী বায়রন বিশ্বাসের জয় প্রায় নিশ্চিত হয়ে গিয়েছে, ১৬ রাউন্ডের মধ্যে ১৪ রাউন্ড গণনার শেষে বায়রন বিশ্বাস এগিয়ে রয়েছেন ২২ হাজারের বেশি ভোটে। সকাল থেকে প্রত্যেকটি রাউন্ড এগিয়েছে আর প্রায় সব ক্ষেত্রেই ব্যবধান বাড়িয়েছেন বায়রন। আর তাতেই বলিয়ান হয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর দল তৃণমূলকে নিশানা করলেন। আর সাগরদিঘিতে সাফল্যের পিছনে বামেদের অবদান স্মরণ করলেন নিজের মতো করেই। বললেন, পঞ্চায়েত নির্বাচন যদি নিরপেক্ষভাবে হয়, তাহলে বাংলায় তৃণমূলকে খুঁজে পাওয়া যাবে না ।
তৃণমূলের মোকাবিলায় রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের জোট রাজনীতির শুরু ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচন থেকেই। তবে বাম কিংবা কংগ্রেসের তরফ থেকে সেই জোটকে কোনও সময় স্বীকার করা হয়েছে, আবার করা হয়নি। আসন সমঝোতা বলেও ব্যাখ্যা করা হয়েছে। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনেও এই পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। বলা ভাল জোট কথাটা বলা হয়নি, কেননা সেখানে সাফল্য আসেনি। আর সাগরদিঘিতে বাম-কংগ্রেসের প্রচেষ্টা সফল হওয়ার পরে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি বামেদের ধন্যবাদ জানানোর পাশাপাশি বলছেন, রাজ্যে বাম-কংগ্রেসের জোট সেই ২০১৬ সাল থেকে। আর তা ভবিষ্যতেও চলবে। এদিন বামেদের সঙ্গে জোট প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী বলেছেন, সিপিআইএম মাধখান থেকে সরে গিয়েছিল, বলেছিল জোটের দরকার নেই। কিন্তু কংগ্রেস সরে আসেনি।
অধীর চৌধুরী এদিন বাম নেতৃত্বকে ধন্যবাদ জানাতে গিয়ে বলেছেন, নির্বাচন শুরুর আগে তিনি প্রবীণ সিপিআইএম নেতা বিমান বসুকে অনুরোধ করেছিলেন। সেই অনুরোধে সাড়া নিয়ে বামেরা কংগ্রেস প্রার্থীকে সমর্থন করেছে। অন্যদিকে সিপিআইএম রাজ্য সম্পাদক মহঃ সেলিম নিজে সাগরদিঘিতে গিয়ে সভা করেছেন। ডিওয়াইএফআই রাজ্য সম্পাদক মীনাক্ষী মুখোপাধ্যায়কে বোন বলে সম্বোধন করে, প্রচারে যাওয়ার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। তিনি বলেছেন, সিপিআইএম-এর বড় বড় নেতারা সাগরদিঘিতে প্রচারে গিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই বায়রন বিশ্বাসের জয়ের পিছনে কংগ্রেসের পাশাপাশি বামেদের ব্যাপক সমর্থনের কথা তিনি স্বীকার করে নিয়েছেন।
অধীর চৌধুরীর কাছে এই জয়, বিরাট জয়। ২০১১-র নির্বাচনেও মুর্শিদাবাদে কংগ্রেস অটুট ছিল। তার পরবর্তী সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শুভেন্দু অধিকারীকে দিয়ে কংগ্রেসের সংগঠনে ভাঙন ধরান। ২০২১-এর নির্বাচনে নিজের জেলায় শূন্য হয়ে যান অধীর চৌধুরী। তাঁর অস্তিত্ব নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। তবে এবারের ভোট প্রচারে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর মন্তব্য, তৃণমূলকে হারাতে সব ব্যবস্থা তিনি করেছেন, আর ভোটের পরে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে অধীর চৌধুরী বাহবা জানানোর সময়ই অনেকেই বলেছিলেন এবার সাগরদিঘির ফল অন্যরকম কিছু হতে পারে।
অধীর চৌধুরী এদিন দাবি করেছেন, তৃণমূলের একটা বড় অংশ তাঁদেরকে সমর্থন করেছেন।
এদিন প্রথম দিকের কয়েকটি রাউন্ডে পরপর জয়ের পরেই অধীর চৌধুরী কার্যত নিশ্চিত হয়ে যান তাদের প্রার্থী জিততে চলেছে। সেই সময় তিনি বলেন, এই নির্বাচন প্রমাণ করল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরাজেয় নয়। তাঁকেও যে হারানো যায়, এই নির্বাচন তা প্রমাণ করল বলেও মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, টিএমসিকে বধিবে যে, মুর্শিদাবাদে বাড়িছে সে। বাংলায় চোরতন্ত্রকে উচ্ছেদ করে গণতন্ত্রকে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করবেন বলেও জানান তিনি।তিনি বলেন, এই ভোটেই প্রমাণ কংগ্রেস হারিয়ে যায়নি। কংগ্রেস হারাতে পারে, তাড়াতে পারে।