উকিলের ফিস দিতেই অনুব্রতর খরচ কোটি কোটি টাকা – তদন্তকারী সংস্থা
নিউজ ডেস্ক::গোরু পাচার কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়া তৃণমূলের বীরভূম জেলার সভাপতি অনুব্রত মন্ডলকে নিয়ে জল ঘোলা হচ্ছে বহুদিন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী দলের দাবি অনুযায়ী দিল্লি যাত্রা আটকাতে হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্ট করেই চলেছেন অনুব্রত মন্ডল। কিন্তু তদন্তকারী সংস্থার দাবি এই বিপুল টাকা উনি পাচ্ছেন কোথা থেকে? ইডির প্রশ্ন,দিল্লিতে ইডি-র হেফাজতে থেকে জেরা এড়াতে আইনজীবীদের পিছনে কত টাকা খরচ করছেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা? তাঁকে এত অর্থ জোগাচ্ছেই বা কে? এই নিয়ে রসিকতাও কম হয় নি। বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের প্রশ্ন, যা জানি অনুব্রত মন্ডল বাজারে মাগুর মাছ বিক্রি করতেন। তাতে কত লাভ? এতো টাকা উনি পাচ্ছেন কথা থেকে?
এবার সেই প্রশ্নই শোনা গেল সিবিআই ও ইডির মুখে। গত নভেম্বর মাসে ইডি আসানসোলের জেলের ভিতরে অনুব্রতকে গ্রেফতার করেছিল। তার পর থেকেই তাঁকে দিল্লিতে নিয়ে আসার তোড়জোড় চলছে। তা এড়াতে অনুব্রত দিল্লি হাই কোর্টে একাধিক মামলা করছেন। কলকাতা হাই কোর্টেরও দ্বারস্থ হয়েছেন। সেখানে তাঁর হয়ে মামলা লড়তে নেমেছেন অভিষেক মনু সিঙ্ঘভি ও কপিল সিব্বল। দু’জনেই সুপ্রিম কোর্টের প্রথম সারির আইনজীবী। ওকালতির ফি-এর হিসাবেও প্রথম সারিতে। মনু সিঙ্ঘভি, সিব্বল ছাড়াও দিল্লির দুই প্রসিদ্ধ অপরাধ মামলার আইনজীবী এন হরিহরণ এবং রমেশ গুপ্তকে অনুব্রতের হয়ে সওয়াল করতে দেখা গিয়েছে। কলকাতায় আবার অনুব্রতের হয়ে প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত, প্রবীণ আইনজীবী সন্দীপন গঙ্গোপাধ্যায়রা মামলা লড়েছেন। ইডির প্রশ্ন,এতে বোঝা যাচ্ছে যে কয়েক কোটি টাকা অনুব্রত মন্ডল শুধু উকিলকেই দিয়েছেন।
প্রথমে রাউস অ্যাভিনিউ কোর্টে ইডি ৬০ দিনের মধ্যে চার্জশিট দায়ের করতে পারেনি বলে অনুব্রত জামিনের আর্জি জানিয়েছিলেন। সেই আর্জি খারিজ করে বিশেষ আদালতের বিচারক রঘুবীর সিংহ বলেছেন, অনুব্রত নিজেই মামলা করে ইডি-র দিল্লিতে জিজ্ঞাসাবাদ পিছিয়ে দেবেন। তার পরে তিনিই ইডি নির্দিষ্ট সময়ে চার্জশিট পেশ করতে পারেনি বলে জামিন চাইবেন! অনুব্রতকে নিজের ‘দুষ্কর্মের সুফল’ তুলতে দেওয়া যায় না। গত শুক্রবারও অনুব্রত কলকাতা ও দিল্লি হাই কোর্টে একই সঙ্গে মামলা করেছেন বলে দিল্লি হাই কোর্টের বিচারপতি দীনেশ কুমার শর্মা মামলা শুনতে চাননি। তিনি অনুব্রতের আইনজীবী অঙ্কুর চাওলাকে ভর্ৎসনা করেন। একই সঙ্গে একাধিক জায়গায় মামলা করার জন্য ১ লক্ষ টাকা জরিমানা করেছে। এখন তদন্তকারী সংস্থা জানতে চান,এই বিস্তর টাকার উৎস কী? এক তদন্তকারী অফিসার বলেন, গোরু পাচারের সব টাকাই অনুব্রতর খরচ হচ্ছে উকিলের পিছনে।