তৃণমূলে রদবদল পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে
নিউজ ডেস্ক : আবারও রদবদল হল তৃণমূলে। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে পিকের উল্টো পথে হাঁটলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি প্রকারান্তরে পর্যবেক্ষক পদ ফিরিয়ে আনলেন। আর ভরসা রাখলেন পুরনোদের উপরই। পঞ্চায়েত ভোটের আগে তিনি জেলা ধরে ধরে দায়িত্ব দিলেন। স্থির করে দিলেন আগামীর পথ।
২০২১-এর নির্বাচনের আগে তৃণমূলের রদবদলে পর্যেবক্ষক পদ তুলে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশান্ত কিশোরের পরামর্শ মতো পর্যবেক্ষক পদ তুলে তিনি কো-অর্ডিনেটর নিয়োগ করেছিলেন। এবার কিন্তু তিনি এবার সংগঠনের দায়িত্ব দিয়ে তাঁর ডান হাত-বাম হাতদের পাঠালেন জেলায় জেলায়।
অর্থাৎ পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমূলে কার্যত ফিরে এল পুরনো পন্থা। রাজ্যের শীর্ষ নেতৃত্বের এক একজন নেতার উপর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দায়িত্ব দিলেন একাধিক জেলার। সংগঠনের দায়িত্ব দিয়ে তাঁদের পাঠানো হচ্ছে জেলায়। পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সংগঠনকে চাঙ্গা করাই হবে তাঁদের কাজ।
শুক্রবার কালীঘাটে তৃণমূলের দলীয় বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বণ্টন করে দেন জেলর দায়িত্ব। বৈঠকের পর সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, পর্যবেক্ষক পদ ফিরছে এটা ঠিক নয়। কারণ এর আগেও বিভিন্ন জেলায় সংগঠনের দায়িত্বে এক এক জন নেতা ছিলেন। যেন অরূপ বিশ্বাস ছিলেন দার্জিলিং ও বর্ধমানের দায়িত্বে। তাঁকে বাড়তি দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে নদিয়ার।
এছাড়া ফিরহাদ হাকিম দেখতেন হাওড়া ও হুগলি জেলা। তাঁকে সেই দায়িত্বে ফিরিয়ে আনা হল। তাপস রায়কে দেওয়া হল দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা। মলয় ঘটককে দেওয়া হল বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া জেলার দায়িত্ব। আর অনুব্রতহীন বীরভূম জেলার দায়িত্ব নিজের হাতে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এছাড়া সংখ্যালঘু সেলের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে গ্রন্থাগার মন্ত্রী সিদ্দিকুল্লা চৌধুরীকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মুর্শিদাবাদ ও মালাদহ জেলার। উত্তর দিনাজপুরের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনকে। বাকি জেলার ক্ষেত্রে স্পেশ্যাল কাউকে দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না। জেলার চেয়ারম্যান ও সভাপতিরাই দেখবেন সংগঠন।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, প্রতি শুক্রবার তিনি জেলাভিত্তিক বৈঠক করবেন। এক একদিনে তিনটি করে জেলা নিয়ে তিনি বসবেন। তাঁর এই বার্তায় তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি নিজের হাতেই রাখতে চাইছেন দলের রাশ। কোনো নেতার উপর তিনি ছাড়ছেন না এই দায়িত্ব। তৃণমূলের জন্মলগ্ন থেকে সংগঠন সামলেছেন মুকুল রায়।
বর্তমানে তৃণমূলের সংগঠন বুঝে নি্চ্ছিলেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই এবার সংগঠনকে নিজের হাতে রাখার বার্তা দিলেন পঞ্চায়েত ভোটের আগে। সাগরদিঘি উপনির্বাচনের হারের পর তাঁর এই সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের একটা বড় অংশ।