পাহাড়ে জোট গড়তে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে গুরুংকে ফ্রি-হ্যান্ড!
নিউজ ডেস্ক::বিমল গুরুং, একটা সময় পাহাড় ছিল তাঁর হাতের মুঠোয়। তিনি যা বলতেন, সেটাই হত পাহাড়ের ভাষা। কিন্তু সময় বদলেছে, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে গুরুংয়ের শাসনও খর্ব হয়েছে। কিন্তু যখনই লোকসভা নির্বাচন এসেছে, তখনই বারবার গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার শরণ নিয়েছে বিজেপি।
২০০৯ সাল থেকেই সেই ট্র্যাডিশান চলে আসছে। লোকসভা এলেই বিজেপি হাত মেলায় বিমল গুরুংদের সঙ্গে। পাহাড়ি দলগুলির সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলে লোকসভার আসনটি হাসিল করে নেয় বিজেপি। যশবন্ত সিংহ থেকে শুরু করে সুরিন্দর সিং আলুওয়ালিয়া এবং বর্তমান রাজু সিং বিস্তের নির্বাচন সবই গুরুংয়ের কৃপায়।
আর বিমল গুরুংও লোকসভা ভোট এলে গোর্খাল্যান্ডের আশায় বিজেপিকে আপন করে নেয়। তাই রীতি মেনেই ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বিজেপি-গোর্খাল্যান্ড আঁতাতের সূচনা হয়ে গেল পাহাড়ে, এমনটাই মনে করছে রাজনৈতিক মহল। সেই আঙ্গিকেই এদিন গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার ডাকে সাড়া দিয়ে বৈঠকে যোগ দিল বিজেপি।
পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে বিজেপি চাইছে গোর্খাল্যান্ড ইস্যুতে নতুন করে জিগির তুলতে। তাহলেই ফায়দা হবে বিজেপির। আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনে তৃণমূল-বিরোধী জোট গড়ে তোলার প্রয়াসও সেই লক্ষ্যেই। একুশে তৃণমূল-‘বান্ধব’ হয়ে উঠেছিলেন বিমল গুরুং।
তাঁর উদ্দেশ্য ছিল পাহাড়ে জায়গা করে নেওয়া। আর পাহাড়ে জায়গা করে নিয়েই তিনি হাত মেলালেন বিজেপির সঙ্গে। গুরুংয়ের ডাকে সাড়া দিয়ে বিজেপি হাজির সর্বদল বৈঠকে। ফের পাহাড়ে তৃণমূল বিরোধীদের এক করার প্রয়াস শুরু হল।
পাহাড়ে যে তৃণমূল বিরোধী জোট হতে চলেছে, তা নিয়ে বেশ কিছুদিন ধরেই জল্পনা চলছিল। হঠাৎ গোর্খা জনমুক্তি প্রধান বিমল গুরুংয়ের দিল্লি যাত্রা থেকেই জল্পনার সূত্রপাত। তারপর তিনি দিল্লি থেকে ফিরে যেভাবে জন বার্লার সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গিয়েছিলেন, তাতে আরও প্রকট হয়েছিল জোট-জল্পনা।
সেই জল্পনার অবসান ঘটিয়ে পাহাড়ে জোটের বাদ্যি বেজে গেল। তৃণমূলের বিরুদ্ধে জোট গড়ার প্রয়াসে প্রথম পদক্ষেপ নেওয়া হল প্রকাশ্যে। সার্বিকভাবে সফল না হলেও বিমল গুরুং অ্যান্ড কোম্পানি কিঞ্চিৎ সফল। গোর্খা জনমুক্তির ডাকা সর্বদল বৈঠকে হাজির হল বিজেপি। ছিল না বিজেপির জোটসঙ্গী জিএনএলএফ।
হামরো পার্টি ও সিপিআরএমও এই জোটে বৈঠকে শামিল হয়েছিল। এদিনের বৈঠকে বিনয় তামাংকেও দেখা যায়নি। তিনি সম্প্রতি তৃণমূল ছাড়ার পর বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে গোর্খ্যাল্যান্ড আন্দোলনে শামিল হয়েছিলেন। বিমল গুরুং ও অজয় এডওয়ার্ডের সঙ্গে যৌথ মঞ্চে সভাও করেছিলেন।
আসলে অনীত থাপার বিজিপিএম-তৃণমূলের জোটের বিরুদ্ধে পাহাড়ে বিরোধী মঞ্চ তৈরি করাই হল আসল উদ্দেশ্য। সম্প্রতি অনীত থাপার উত্থান হয়েছে পাহাড়ে। বিজিপিএম বা ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা নামে দল গড়েই তৃণমূলের সাহায্য নিয়ে তারা জিটিএ দখল করেছে। হামরো পার্টির কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়েছে দার্জিলিং পুরসভা।