বিল কি অনন্তকাল আটকে রাখতে পারেন রাজ্যপাল?
নিউজ ডেস্ক::যে সমস্ত রাজ্যে কেন্দ্রের বিরোধী দল ক্ষমতায় রয়েছে, সেখানে রাজ্য বনাম রাজ্যপাল সংঘাত লেগেই রয়েছে। প্রায়শই দেখা যায়, রাজ্যপাল বিল আটকে রাখেন। এই বিষয়েই তেলেঙ্গানা সরকার সুপ্রিম কোর্টে একটি আবেদন করেছিল। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গুরুত্বপূর্ণ রায় দিল শীর্ষ আদালত।
বাংলা-সহ বিভিন্ন রাজ্যে দেখা গিয়েছে রাজ্যপালের সঙ্গে সংঘাত লেগে রয়েছে। তেলেঙ্গানাতেও রাজ্যপালের সঙ্গে বিল পাস নিয়ে সংঘাত চরমে ওঠে। তেলঙ্গানা সরকার সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়। তার পরিপ্রেক্ষিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে কোনো বিল অনন্তকাল আটকে রাখতে পারবেন না রাজ্যপাল।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, রাজ্য বিধানসভায় কোনো বিল পাস হলে, যত দ্রুত সম্ভব সেই বিল ছেড়ে দিতে হবে। দেশের সংবিধানে তেমনই উল্লেখ রয়েছে বলে জানিয়ে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সংবিধানের সেই কথা স্মরণ করিয়েই তাৎপর্যপূর্ণ বার্তা দিয়েছে শীর্ষ আদালত।
সোমবার তেলেঙ্গানা সরকারের রাজ্যপাল তামিলিসাই সৌন্দর্যরাজন রাজ্য বিধানসভায় পাস হয়ে যাওয়া ১০টি বিল কিছুতেই ছাড়ছেন না বলে অভিযোগ কে চন্দ্রশেখর রাও সরকারের। সেই মামলাতেই তেলেঙ্গানা সরকার রাজ্যপালকে বিল ছেড়ে দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হোক বলে আবেদন করেছিল।
শেষপর্যন্ত রাজ্যপাল বিল ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় মামলা খারিজ হয়ে যায়। তার আগে শুনানি চলাকালীন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২০০ স্মরণ করিয়ে গিয়ে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় ও পিএস নরসিংহের ডিভিশন বেঞ্চ বলে, বিধানসভায় পাস হওয়া বিলের অনুমোদন, প্রত্যাখ্যান, স্থগিত রাখা এবং কিছু ক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির মত নেওয়ার অধিকার রাজ্যপালের।
প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সেইসঙ্গে বলেন, রাজ্যপালের হাতে সম্পূর্ণ অধিকার থাকলেও রাজ্যপালের সুপারিশ সত্ত্বেও যদি বিলে কোনো সংশোধন না ঘাটনো হয়, তবে বিল ছেড়ে দিতে হয় রাজ্যপালকে। আবার অর্থনীতি সংক্রান্ত বিলের ক্ষেত্রে সেই ক্ষমতা নেই রাজ্যেপালের।
শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, বিধানসভায় কোনো বিল পাস হলে যত দ্রুত সম্ভব তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে রাজ্যপালকে। কিছু সংশোধন থাকলে তা বিবেচনার জন্য পাঠাতে হবে। তারপর যাই হোক না কেন দ্রুত বিল ছাড়তে হবে। তেমনটাই উল্লেখ রয়েছে সংবিধানের ২০০ অনুচ্ছেদে।
তেলেঙ্গানা সরকারের পক্ষে সওয়াল করা আইনজীবী জানান, একাধিক অ-বিজেপিশাসিত রাজ্যে রাজ্যপালকে দিয়ে বিল পাস করাতে সমস্যা হচ্ছে। ফলে নির্বাচিত সরকারকে রাজ্যপালের দিকে তাকিয়ে থাকতে হচ্ছে। ইচ্ছাকৃত সংঘাত তৈরি করা হচ্ছে অবিজেপিশাসিত রাজ্যগুলির সঙ্গে।