১ রানে জিতে প্লে-অফে লখনউ
নিউজ ডেস্ক::গুজরাত টাইটান্স, চেন্নাই সুপার কিংসের পর তৃতীয় দল হিসেবে প্লে-অফে পৌঁছে গেল লখনউ সুপার জায়ান্টস। সেই সঙ্গে নিশ্চিত হয়ে গেল প্রথম কোয়ালিফায়ারে মঙ্গলবার গুজরাতের মুখোমুখি হবে চেন্নাই। এলিমিনেটরে লখনউয়ের প্রতিপক্ষ ঠিক হবে আজ।
গত বছর ২ বার কেকেআরকে হারিয়েছিল লখনউ সুপার জায়ান্টস। সঞ্জীব গোয়েঙ্কার দলের কাছে এবার শাহরুখ খান-জুহি চাওলাদের দল পরাস্ত হলো নিজেদের হোম গ্রাউন্ড ইডেনে। ক্রুণাল পাণ্ডিয়ারা জিতলেন মাত্র ১ রানে।
শেষ ২ ওভারে দরকার ছিল ৪১ রান। আমেদাবাদে হার্দিক পাণ্ডিয়ার গুজরাত টাইটান্সকে রিঙ্কু সিং হারিয়ে দিয়েছিলেন শেষ পাঁচ বলে পাঁচটি ছয় মেরে। নবীন উল হক ১৯তম ওভার করতে যান। ২০ রান তুলে রিঙ্কু ২৭ বলে হাফ সেঞ্চুরি পূর্ণ করে ফেলেন। শেষ পাঁচ বলে দরকার ছিল ২০।
২০তম ওভারটি করছিলেন যশ ঠাকুর। প্রথম বলে বৈভব অরোরা ১ রান নেন। দ্বিতীয় বল ওয়াইড। পরের ২টি ডেলিভারিতে রান নিতে পারেননি রিঙ্কু। চতুর্থ বল করতে গিয়ে আবার ওয়াইড। ৩ বলে দরকার ছিল ১৮। ফের ছক্কা মেরে সমীকরণ ২ বলে ১২-তে নিয়ে আসেন রিঙ্কু। পরের দুই বলে চার ও ছয় মারলেন রিঙ্কু। কিন্তু তাতে লখনউয়ের জয় আটকাল না।
৬টি চার ও চারটি ছয়ের সাহায্যে ৩৩ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন রিঙ্কু সিং। বৈভব অরোরা ১ বলে ১ রানে অপরাজিত থাকেন। রবি বিষ্ণোই ৪ ওভারে ২৩ ও যশ ঠাকুর ৩ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ২টি করে উইকেট নেন। ক্রুণাল পাণ্ডিয়া ও কৃষ্ণাপ্পা গৌতম ১টি করে উইকেট দখল করেন।
জয়ের জন্য ১৭৭ রানের টার্গেট তাড়া করতে নেমে আজ রণকৌশল বদলায় কেকেআর। রহমানুল্লাহ গুরবাজ নন, ডানহাতি-বাঁহাতি ওপেনিং কম্বিনেশনের কথা ভেবে ভেঙ্কটেশ আইয়ারকে পাঠানো হয়েছিল জেসন রয়ের সঙ্গে। ঝোড়োগতিতে রান তুলতে থাকেন কেকেআরের ওপেনাররা। প্রথম ৬ ওভারের শেষে নাইটদের স্কোর ছিল ১ উইকেটে ৬১।
৫.৫ ওভারে ৬১ রানে পড়ে প্রথম উইকেট। তিনটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে ১৫ বলে ২৪ রান করেন ভেঙ্কটেশ আইয়ার। নাইটদের ওপেনিং জুটি ভাঙেন কৃষ্ণাপ্পা গৌতম। ৮.৩ ওভারে ৭৮ রানে পড়ে দ্বিতীয় উইকেট। ১০ বলে ৮ রান করে অধিনায়ক নীতীশ রানা প্যাভিলিয়নে ফেরেন। তাঁর উইকেটটি নেন রবি বিষ্ণোই।
১০ ওভারের শেষ বলে জেসন রয়কে বোল্ড করে দেন লখনউ অধিনায়ক ক্রুণাল পাণ্ডিয়া। সাতটি চার ও একটি ছয়ের সাহায্যে ২৮ বলে ৪৫ রান করে রয়। তিনি আউট হলে কেকেআরের স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে ৮২। চারে নামা রহমানুল্লাহ গুরবাজ সুবিধা করতে পারেননি। ১৫ বলে ১০ রান করে তিনি যশ ঠাকুরের শিকার।
১৩.৪ ওভারে ১০৮ রানে নাইটদের চতুর্থ উইকেটের পতন ঘটে। এরপর রিঙ্কু সিং দলের রান এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন আন্দ্রে রাসেলকে সঙ্গী করে। শেষ ৫ ওভারে প্রয়োজন দাঁড়ায় ৬৩ রান। ষোড়শ ওভারে রবি বিষ্ণোইয়ের তৃতীয় বলে ছক্কা মারার পরের ডেলিভারিতেই বোল্ড হয়ে যান আন্দ্রে রাসেল (৯ বলে ৭)। এতে নাইটদের স্কোর দাঁড়ায় ৫ উইকেটে ১২০।
চার ওভারে দরকার ছিল ৫৬। ১৭তম ওভারে নবীন উল হক মাত্র ৫ রান দেন। সমীকরণ দাঁড়ায় ১৮ বলে ৫১ রান দরকার। ১৮.৪ ওভারে শার্দুল ঠাকুর (৭ বলে ৩)-কে ফেরান যশ ঠাকুর। ষষ্ঠ উইকেটটি পড়ে ১৩৪ রানে। এই ওভারের শেষ বলে সুনীল নারিন (২ বলে ১)। ১৩৭ রানে সপ্তম উইকেট পড়ে। ২ ওভারে প্রয়োজন দাঁড়ায় ৪১ রান।
৬টি চার ও চারটি ছয়ের সাহায্যে ৩৩ বলে ৬৭ রানে অপরাজিত থাকেন রিঙ্কু সিং। বৈভব অরোরা ১ বলে ১ রানে অপরাজিত থাকেন। রবি বিষ্ণোই ৪ ওভারে ২৩ ও যশ ঠাকুর ৩ ওভারে ৩১ রান দিয়ে ২টি করে উইকেট নেন। ক্রুণাল পাণ্ডিয়া ও কৃষ্ণাপ্পা গৌতম ১টি করে উইকেট দখল করেন।
এর আগে, টস জিতে লখনউ সুপার জায়ান্টসকে ব্যাট করতে পাঠিয়েছিল কেকেআর। নিকোলাস পুরাণের ৩০ বলে ৫৮, কুইন্টন ডি ককের ২৭ বলে ২৮, প্রেরক মাঁকড়ের ২০ বলে ২৬ ও আয়ুষ বাদোনির ২১ বলে ২৫ রানে ভর করে লখনউ তোলে ৮ উইকেটে ১৭৬। কৃষ্ণাপ্পা গৌতম ৪ বলে ১১ রানে অপরাজিত থাকেন।
সুনীল নারিন, বৈভব অরোরা ও শার্দুল ঠাকুর তিনটি করে উইকেট নেন। নেট রান রেটে আরসিবিকে পিছনে ফেলতে কেকেআরকে এই ম্যাচ জিততে হতো ৪৭ বলে, যা অসম্ভবই ছিল। আবার চেন্নাই সুপার কিংসকে সরিয়ে পয়েন্ট তালিকার দ্বিতীয় স্থানের দখল নিতে লখনউকে ম্যাচ জিততে হতো ৯৭ রানে। সেটাও হয়নি। ফলে তিনেই রইলেন ক্রুণালরা।
১৪ ম্যাচে ১৭ পয়েন্ট নিয়ে প্লে-অফ নিশ্চিত করে ফেলল লখনউ। ফলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স ও আরসিবি নিজেদের শেষ ম্যাচে জিতলে ১৬ পয়েন্ট করে হবে তাদের। সেক্ষেত্রে নেট রান রেটের নিরিখে শেষ চারে চলে যাওয়ার ব্যাপারে এগিয়ে আরসিবি। অবশ্য বেঙ্গালুরুতে বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেস্তে গেলে এবং মুম্বই জিতলে রোহিতরা চলে যাবেন প্লে-অফে।