পঞ্চায়েতের আগেই সমীকরণ বদলাচ্ছে পাহাড়ের
নিউজ ডেস্ক::পাহাড়ের রাজনীতিতে ব্রাত্য হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। পাহাড় অশান্ত করার দায়ে রাজ্যের তৃণমূল সরকারের চাপে তাঁকে সরে যেতে হয়েছিল দার্জিলিং থেকে। তারপর একুশের নির্বাচনের আগে ফের তাঁর উদয় হয়। বিজেপির প্রতি বিদ্বেষ পোশণ করে তিনি তৃণমূলের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন।
পাহাড়ের রাজনীতিতে তখন বিমল গুরুং থেকে শুরু করে অনীত থাপা, বিনয় তামাং- সবাই তৃণমূলের বন্ধু। কিন্তু দার্জিলিং পুরসভা ও জিটিএ ভোটের পর থেকে পাহাড়ে রাজনীতিতে বদল আসতে থাকে। বিমল গুরুংরা ফের সরে যেতে তাকেন তৃণমূলের পাশ থেকে। এমনকী বিনয় তামাংও তৃণমূল ছেড়ে দেন।
এখন পাহাড় রাজনীতিতে তৃণমূলের পাশে রয়েছেন শুধু অনীত থাপা। পাহাড়ে এই মুহূর্তে সবথেকে শক্তিশালী দল অনীত থাপার ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা বা বিজিপিএম। এই বিজিপিএম সঙ্গে তৃণমূল জোট করে বর্তমানে পাহাড়ের প্রশাসনে রয়েছে। দার্জিলিং পুরসভাও এখন বিজিপিএম-তৃণমূল জোটের দখলে।
একদিকে যখন বিজিপিএম-তৃণমূল জোট পাহাড়ের ক্ষমতায় বিরাজ করছে, তাদের বিরোধিতায় বিজেপির সঙ্গে হাত মেলাতে শুরু করেছেন বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা ও অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি। অন্যান্য পাহাড়ি দলকে একত্রিত করে তারা তৃণমূল-বিজিপিএমকে জোরদার লড়াই দিতে চাইছে আসন্ন পঞ্চায়েত ভোটে।
পাহাড়ে পঞ্চায়েত নির্বাচন হচ্ছে ২০ বছর পর। স্বভাবতই খুশির হাওয়া পাহাড়বাসীর মনে। এই অবস্থায় রাজনৈতিক দলগুলিও নতুন উদ্দীপনা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে চাইছে। সবাই নিজেদের মতো প্রস্তুতি নিচ্ছে এই নির্বাচনী লড়াইয়ের জন্য। বাংলায় পঞ্চায়েত নির্বাচন ঘোষণা হতেই পাহাড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মহাজোট গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
পাহাড়ে তৃণমূল বিরোধী মহোজোট গড়তে নেতৃত্ব দিচ্ছে বিজেপি। সে জন্য ফের তারা বিমল গুরুংয়ের হাত ধরতে চাইছে। আর বিমল গুরুং চাইছে নিজেদের হারিয়ে ফেলা জমি পুনরুদ্ধারে বিজেপিকে আশ্রয় করতে। আবার হামরো পার্টির অজয় এডওয়ার্ডও বিজেপিএম ও তৃণমূলকে জবাব দিতে চায়। কারণ দল ভাঙিয়ে দার্জিলিং পুরসভা দখল করছে বিজিপিএম।
সম্প্রতি বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্ত বৈঠক করেছেন বিমল গুরুংয়ের সঙ্গে। অজয় এডওয়ার্ডও হামরো পার্টিও ছিলেন জোটসঙ্গী। আবার বিজেপির সঙ্গে রয়েছে জিএনএলএফ-সহ একাধিক পাহাড়ি দল। ফলে পাহাড়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে মহাজোট গড়ে উঠতে পারে। শনিবার বিজেপি সাংসদ রাজু বিস্তের বাসভবনে দফায় দফায় বৈঠক চলে।
গোর্খা জনমুক্তি প্রধান বিমল গুরুং ও হামরো পার্টির প্রধান অজয় এডওয়ার্ডের সঙ্গে বৈঠকের পর দার্জিলিংয়ের সাংসদ রাজু বিস্ত আবার বৈঠক করেন তাদের জোটসঙ্গী জিএনএলএফ, সিপিআরএম, অখিল ভারতীয় গোর্খা লিগ-সহ পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলির সঙ্গে।