পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত শুভেন্দুর
নিউজ ডেস্ক : পঞ্চায়েত নির্বাচন নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের রায়কে স্বাগত জানালেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। এবার সুপ্রিম কোর্টে ক্যাভিয়েট দাখিল করছেন তিনি।
আজ ঠাকুরনগরে শুভেন্দু বলেন, বিজেপির হয়ে আমি হাইকোর্টে যে আবেদনগুলি করেছিলাম, আইনকে মান্যতা দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ তার সবগুলি গ্রহণ করতে পারেনি। কিন্তু মহামান্য হাইকোর্টের রায় সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচনের পক্ষেই। রাজ্য পুলিশের উপর অনাস্থাও প্রকাশ করেছে আদালত।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, গ্রামবাংলায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মহামান্য আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলাম। ডিভিশন বেঞ্চের বিচারপতিরা আমাদের আবেদনের বেশিরভাগ অংশকে গুরুত্ব দিয়ে হিংসাবিহীন নির্বাচন করার পক্ষেই মানসিকতা দেখিয়েছেন রায়ে। আদালতের বেশ কিছু নির্দেশ ইতিবাচক।
রাজ্যের বিরোধী দলনেতা জানান, আদালত স্পর্শকাতর জেলা ও এলাকাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন বাধ্যতামূলক করেছে। বাহিনী কেন্দ্র দেবে বিনা পয়সায়। সিসিটিভি ফুটেজ, ভিডিওগ্রাফি বাধ্যতামূলক। নির্বাচনে সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা কেন্দ্রীয় সুরক্ষা বলয়ে সুরক্ষিত থাকবেন। কোথাও কোনও কিছুর অভাব থাকলে রাজ্য পুলিশকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের নির্বাচন প্রক্রিয়ায় না নেওয়ার দাবি জানিয়েছিলাম। রাজ্যে ১২ বছরে স্থায়ী নিয়োগ হয়নি। পিএসসি, স্কুল সার্ভিস কমিশন, স্টাফ রিক্রুটমেন্ট বোর্ড, সবেতেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিরো। লক্ষাধিক ক্যাডারকে ঢুকিয়েছেন চুক্তিভিত্তিক পদে। তৃণমূলের আত্মীয়রা চুক্তিভিত্তিক চাকরি করছেন টাকার বিনিময়ে।
শুভেন্দুর দাবি, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী অসহায়তার কথা জানিয়ে আদালতের নজরে এনেছেন যে পর্যাপ্ত সরকারি কর্মচারী নেই ভোট প্রক্রিয়া চালানোর জন্য। সেই কারণে আদালত চুক্তিভিত্তিক কর্মীদের ফোর্থ পোলিং অফিসার হিসেবে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। গ্রাম পঞ্চায়েত গণনার পর বিরোধীদের মেরে বের করে দেওয়া হয়। সে কারণে ত্রিস্তর গণনা একসঙ্গে করতে বলা হয়েছে।
আজকের সর্বদলীয় বৈঠকেও বিভিন্ন রাজনৈতিক দল মনোনয়ন তোলার সময়সীমা বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে। শুভেন্দুর কথায়, পঞ্চায়েত আইনের ৪২ ও ৪৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাজ্য সরকার ভোটের দিনক্ষণ সুপারিশ করে। আদালত তাই বিষয়টি রাজ্য সরকারের উপরেই ছেড়েছে। কমিশনের আইনজীবীই বলেছিলেন প্রত্যাহারের দিন এদিন কমিয়ে মনোনয়ন তোলার সময়সীমা বাড়ানো যেতে পারে।
শুভেন্দু অধিকারী এদিন বলেন, আদালতেরও সীমাবদ্ধতা ছিল। যা রায় মহামান্য আদালত থেকে এসেছে তা আইনের মধ্যে থেকেই। পঞ্চায়েত আইনকে মান্যতা দিয়ে যাতে সুষ্ঠু, অবাধ নির্বাচন সকলের অংশগ্রহণের মাধ্যমে হতে পারে, মৃত্যুহীন ভোট যাতে হয়, কেউ যাতে লুঠপাট না করতে পারে তা নিশ্চিতকরণে এই রায়।
সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় জাহাজ প্রতিমন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরকে পাশে নিয়ে শুভেন্দু বলেন, গুন্ডাদের দিয়ে ঠাকুরবাড়িকে অপবিত্র করা হয়েছে। মতুয়া সমাজকে আক্রান্ত হতে হয়েছে। আজও ক্যানিংয়ে বিডিও অফিসে বিজেপি কর্মীরা আক্রান্ত হয়েছে। ২০ হাজার আসনে যাতে ভোট না হয় তার সব চেষ্টা হচ্ছে।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় যাতে হাইকোর্টের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কোনও নির্দেশ বের করে আনতে না পারেন সেজন্য শীর্ষ আদালতে ক্যাভিয়েট দাখিল করব, মন্তব্য শুভেন্দুর।