মমতাকে বিরাট চ্যালেঞ্জ শুভেন্দুর
নিউজ ডেস্ক::পঞ্চায়েত নির্বাচন সব জেলাতেই হবে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে। কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দিয়েছে। একে ঐতিহাসিক বলে আখ্যায়িত করলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী।
তিনি বলেন, এই রায়ের ফলে মৃত্যুমিছিল থামা উচিত। গ্রামবাংলায় গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা হবে এই আশা রেখেই রায়কে স্বাগত জানাচ্ছি। সুপ্রিম কোর্ট থেকে যাতে রাজ্য সরকার বা রাজ্য নির্বাচন কমিশন একতরফা রায় বের করতে না পারে সেজন্য ক্যাভিয়েট দাখিল করব।
শুভেন্দুর কথায়, আজও সন্ত্রাস চালিয়ে অনেক জায়গায় বিরোধীদের মনোনয়ন দাখিল করতে দেওয়া হয়নি। তৃণমূল কংগ্রেস ১২ থেকে ১৪ হাজার বুথে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতবে। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হিন্দু-মুসলিম, সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু নির্বিশেষে ওই বুথগুলিতেই অন্তত ৫০০ ভোটে পরাস্ত হবেন লোকসভা নির্বাচনে।
শুভেন্দু অধিকারী বলেন, প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ প্রথমে নির্বাচন কমিশন ও রাজ্য সরকারের উপর ভরসা রেখেছিল। সে কারণে স্পর্শকাতর এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতিরা। কিন্তু তারপরও ‘চটিচাটা দুর্নীতিগ্রস্ত’ রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে পরামর্শ করে রায়ের উদারতাকে বিচার ব্যবস্থার দুর্বলতা হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন।
রাজ্য নির্বাচন কমিশনার গতকাল যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছিলেন তার প্রবল সমালোচনা করেছেন শুভেন্দু অধিকারী। তিনি বলেন, চোপড়া ও ভাঙড়ে বেশ কয়েকজন আজ মারা গিয়েছেন। মৃতের সংখ্যা নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয়। অনেকে গুরুতর আহত। বিজেপি কার্যকর্তাদের ডায়মন্ডহারবার বিডিও অফিসে বেধড়ক মারা হয়েছে। তাঁরা হাসপাতালে ভর্তি।
শুভেন্দু বলেন, কলকাতা হাইকোর্টের রায়ে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন হলে ও আইনশৃঙ্খলা ঠিক করার কাজে তৎপরতার সঙ্গে বাহিনী নেমে পড়লে যে মৃত্যুমিছিল, রক্তস্নাত অধ্যায়ের সূচনা হয়েছিল তা থেমে যাওয়া উচিত। ৭ থেকে ৮ জেলার ৩০ থেকে ৪০টি জায়গায় সাধারণ মানুষের জীবন-সম্পত্তি যাতে সুরক্ষিত রাখার কাজে দ্রুত নামতে হবে বাহিনীকে।
রাজনৈতিক দলগুলির গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষার কাজও বাহিনী শুরু করতে পারবে বলে আশাবাদী বিরোধী দলনেতা। তিনি বলেন, গণতন্ত্র রক্ষার লড়াই চলবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্গাপুরে কর্পোরেশন নির্বাচনে ভোট লুঠের পর দুর্গাপুর পূর্ব ও পশ্চিমে আর জিততে পারেননি। বহু জায়গায় বিরোধীদের এবার মনোনয়ন জমা দিতে দেয়নি তৃণমূল।
হাইকোর্টের রায়ের পরও পুলিশ এসকর্ট করে বিরোধী প্রার্থীদের মনোনয়ন জমা দিতে নিয়ে যাওয়ার সময় গাড়ি আটকানো ও ভাঙচুর চালানো হয়েছে। আদালত অবমাননার জন্য ফের হাইকোর্টে যাব। তৃণমূলের সঙ্গে সংখ্যালঘুরাও অনেকে নেই। কেউই নেই। পুলিশকে দিয়ে ওরা সন্ত্রাস চালাচ্ছে। তৃণমূলকে যাঁরা প্রকাশ্যে ভোট দিয়েছিলেন, তাঁরাই এখন বিদ্রোহ করে গুলিবিদ্ধ।
শুভেন্দু বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো মিথ্যাবাদী দুটো নেই। অন্য কোনও রাজ্যের আমলা বা পুলিশকর্তারা দুর্নীতিতে এত অভিযুক্ত নন। ১২ বছরে কতবার স্বরাষ্ট্র দফতর নিয়ে বিধানসভায় প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী? অপরাধীদের ছেড়ে রাখাতেই এত অশান্তি। সাংবাদিকদের আটকে রাখছেন অ্যাডিশনাল এসপি! ভাঙড়ে জেলা পরিষদের ভোটে শওকতের সঙ্গে দেখা হবে কেন্দ্রীয় বাহিনীর।
শুভেন্দুর হিসেব, তৃণমূল ১২ থেকে ১৪ হাজার সিটে আনকনটেস্টেড জিতবে। নন্দীগ্রামে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বুথগুলিতে জিতেছিলেন সেখানে তৃণমূল জিততে পারবে না। ওখানকার মানুষজন ঠিক করে রেখেছেন। আমি সাগরদিঘির ভোটে বলেছিলাম তৃণমূল জিতবে না। ত্রিপুরায় তৃণমূল নোটার নীচে থাকবে, সেটাও মিলেছে। নন্দীগ্রামে জিতে কথা রেখেছি। অনেক বুথেই তৃণমূলের শেষের শুরু হলো এবার।