শুভেন্দুকে ওস্তাদের মার তৃণমূলের
নিউজ ডেস্ক::বিজেপি যখন গোটা-রাজ্যে পর্যুদস্ত হয়েছে পঞ্চায়েত নির্বাচনে, তখন নন্দীগ্রামে তৃণমূলকে সমানে সমানে টক্কর দিয়ে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতি ছিনিয়ে নিয়েছেন শুভেন্দু অধিকারী। রাজ্যের বিরোধী দলনেতার মুখে হাসি ক্রমেই চওড়া হচ্ছিল পঞ্চায়েত নির্বাচনের ফলাফল সামনে আসার পর থেকেই।
কিন্তু শেষবেলায় জেলা পরিষদের ফল সামনেই আসতেই সেই হাসি মিলিয়ে গেল। ২০২১-এ নন্দীগ্রাম বিধানসভা ভোটে প্রেস্টিজ ফাইটে শেষ ল্যাপে এসে শুভেন্দু অধিকারী মাত দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ১৯৫৬ ভোটে বিতর্কিত জয় পেয়েছিলেন। এবার জেলা পরিষদের ভোটযুদ্ধের নিরিখে নন্দীগ্রামে ১০,৪৫৭ ভোটের ব্যবধান গড়ে তৃণমূল তার জবাব দিল।
মঙ্গলবার পঞ্চায়েত ভোটের ফলে দুটি ব্লকেই প্রাধান্য বিস্তার করেছিল শুভেন্দু অধিকারীর দল। শুভেন্দুর একক নেতৃত্বে নন্দীগ্রাম ১ ও ২ নম্বর ব্লকে একের পর এক পঞ্চায়েত জিতে তৃণমূলের ঘুম কেড়ে নিয়েছিলেন তিনি। এক নম্বরে ৫টি গ্রাম পঞ্চায়েত ও দু-নম্বরে ৪টি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করেছিল বিজেপি।
তৃণমূল সেখানে এক নম্বরে ৫টি ও দু-নম্বরে দুটি গ্রাম পঞ্চায়েত দখল করে. দুনম্বর পঞ্চায়েত সমিতিতেও বিজেপি জয়যুক্ত হয়। এক নম্বর পঞ্চায়েত সমিতি হয় টাই। এই অবস্থায় জেলা পরিষদে এক নম্বরের তিনটি আসনে জয়ী হয় তৃণমূল আর বিজেপি পায় দু-নম্বরের দুটি আসন।
কিন্তু ভোটের ব্যবধানে নন্দীগ্রামে বিধানসভা এলাকায় তৃণমূল ১০৪৫৭ ভোটের লিড পায়। যে নন্দীগ্রামে ১৯৫৬ ভোটে হারতে হয়েছিল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে, সেখানে ১০ হাজারেরও বেশি ব্যবধান গড়ে শুভেন্দু অধিকারীকে পাল্টা দিতে ভোলেননি তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ।
তিনি ফেসবুক পোস্টে বলেন, শুভেন্দুর লোডশেডিং করে ফল পাল্টে ১৯৫৬-র গল্প এবার বাতিল। শুভেন্দুর নন্দীগ্রামে জেলা পরিষদের ভোটপ্রাপ্তি অনুযায়ী দু-দলের ফারাক কষলে দেখা যাচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল ১০৪৫৭ ভোটে এগিয়ে। এই অঙ্কই শুভেন্দুর মুকে হাসি কেড়ে নিল শেষবেলায়।
এবার পঞ্চায়েত নির্বাচনে জেলা পরিষদের ভোটেক নিরিখে নন্দীগ্রামে বিজেপির তেকে ১০ হাজারের বেশি লিড নিয়ে তৃপ্ত কুণাল ঘোষ। তৃণমূলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষকে বিশেষ দায়িত্ব দিয়ে পাঠিয়েছিলেন মমতা ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি সেই আস্থার মর্যাদা রক্ষা করতে পেরেছেন। শুভেন্দুকে সেষমেশ মাত দিয়েছেন তিনি।
যদিও শুভেন্দু অধিকারী বা বিজেপির জেলা নেতৃত্ব এই ভোটকে জনমতের প্রতিফল বলে মানতে নারাজ। শুভেন্দু অধিকারী সাফ জানিয়েছেন, ভোটই হয়নি। ভোট হলে তৃণমূল নিশ্চিহ্ন হয়ে যেত। বিজেপির জেলা নেতৃত্বের পক্ষে দাবি করা হয়েছে, লুঠ করে ভোটে জিতেছে। এটা মানুষের ভোটে জয় নয়। আমাদের প্রার্থী পর্যন্ত দিতে দেওয়া হয়নি।
শুভেন্দু ও বিজেপিকে টেক্কা দিয়ে তৃণমূলকে উল্লেখযোগ্য লিড এনে দেওয়ার পর কুণাল ঘোষ বলেন, বিধানসভা লোডশেডিং করে জিতে কথা কথায় ১৯৫৬-র ঔদ্ধত্য দেখাত শুভেন্দু। নন্দীগ্রামের মানুষ তার যোগ্য জবাব দিয়েছে। হলদি নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে শুভেন্দুর সেই ঔদ্ধত্যকে। ১৯৫৬-র গল্প বাতিল করে ছেড়েছে।