১৯৯৯-এর ভারত বনাম পাকিস্তানের যুদ্ধ সম্পর্কে কিছু তথ্য

0 0
Read Time:5 Minute, 33 Second

নিউজ ডেস্ক ::

পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ‘অপারেশন বিজয়’-এ সফল হওয়ার পর থেকেই কার্গিল বিজয়. দিবস উদযাপন করে ভারত শ্রদ্ধা জানিয়ে আসছে ভারতের বীরশহিদ সশস্ত্র বাহিনীদের। তৎকালীন জম্মু-কাশ্মীর বর্তমানে লাদাখের কার্গিল পাহাড়া তিন মাসের যুদ্ধের অবসানে অপারেশন বিজয় সফল হয়েছিল এই দিনেই।

১৯৯৯ সালে কার্গিল বিজয় দিবস উদযাপনের পর পাকিস্তান জানিয়েছিলেন তারা ভারতের সঙ্গে সংঘর্ষে লিপর্ত হতে চায়নি। তারা এই যুদ্ধের জন্য কাশ্মীরি বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দোষারোপ করতে থাকে। কিন্তু পরে তারা এই সংঘর্ষে লিপ্ত হওয়া যোদ্ধাদের পুরস্কার করে।

কার্গিল পর্বতে প্রায় তিন মাস সংগ্রামের পর ভারতীয় সেনাবাহিনী বিজয় ঘোষণা করে ভারতের তেরঙা পতাকা উত্তোলন করে। ১৯৭১ সালের ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের পরে ফের একবার পাকিস্তানকে উচিত শিক্ষা দেয় ভারত। এর মধ্যে দুটি দেশ খুব কমই সরাসরি যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল।

তবে পাকিস্তান বরাবরই সৈন্যদল নিয়ে ভারতের সীমান্তে অস্থিরতা ছড়াতে তাকে। সিয়াচেন হিমবাহ নিয়ন্ত্রণ করতে তারা দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ছিল। তার ফলে ১৯৯০-এর দশকে সামরিক সংঘাত শুরু হয়েছিল দুই দলের মধ্যে। ১৯৯৮ সালে দুই দেশ পারমাণবিক পরীক্ষা করার পর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।
১৯৯৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে লাহোর ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করে একটি সমাধান সূত্র বের করলেও শেষ রক্ষা হয়নি। পাকিস্তানি সামরিক বাহিনী লাদাখ এবং কাশ্মীরের মধ্যে সংযোগ বিচ্ছিন্ন করতে নিয়ন্ত্রণ রেখার ভারতীয় অংশে প্রবেশের মরিয়া চেষ্টা করে। তাদের উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সিয়াচেন হিমবাহ থেকে সরে যেতে বাধ্য করা।

ভারতও তার যোগ্য জবাব দিতে দেরি করেনি। প্রায় ২ লক্ষ ভারতীয় সৈন্য প্রস্তুত করে পাকিস্তান সেনাদের প্রতিরোধ করে। আর এই মিশনটির নাম ছিল ‘অপারেশন বিজয়’। যুদ্ধের শুরুতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একটি সুবিধা ছিল কারণ তারা উচ্চতর জায়গায় ছিল। ফলে তারা সহজেই ভারতীয়দের হত্যা করতে সমর্থ হচ্ছিল।

পাকিস্তান প্রথমের দিকে দুটি ভারতীয় বিমান ভূপাতিত করে এবং আরেকটি বিধ্বস্ত হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটন নিয়ন্ত্রণ রেখা থেকে সেনা প্রত্যাহারের দাবি করলে পাকিস্তান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কাছে মধ্যস্থতা চেয়েছিল। এরপর ভারত জবাব দিতে শুরু করে।

পাকিস্তান পিছু হটতে বাধ্য হয় এবং ভারতীয় সেনারা পাহাড় জয় করে। ২৬ ভারত তাদের কাজ শেষ করে। অপারেশন বিজয় সাকসেসফুল হয়। যুদ্ধে মোট ৫২৭ ভারতীয় সৈন্য নিহত হন। পাকিস্তানি ক্যাম্পের ৭০০ জন নিহত হন বলে জানা গিয়েছে। ভারতের কার্গিল যুদ্ধ জয়ের পর হাসিল করার পর থেকে এই দিনটি প্রতি বছর সারা দেশে পালিত হচ্ছে কার্গিল বিজয় দিবস হিসেবে।
কার্গিল যুদ্ধ ছিল ভারতের ইতিহাসের একটি টার্নিং পয়েন্ট। কারণ ভারত পাকিস্তানের মতো জঙ্গি পরাশক্তির বিরুদ্ধে তাদের অবস্থান ধরে রাখতে পেরেছিল। ভারতের সামরিক সক্ষমতার প্রমাণও পেয়েছিল বিশ্ব। ভারত তাদের সামরিক বাহিনীর আধুনিকীকরণের গুরুত্ব ও প্রযুক্তিগত অগ্রগতির পরিচয় রেখেছিল বিশ্বের কাছে।

কার্গিল বিজয় দিবসের তাৎপর্যকে অবমূল্যায়ন করা যায় না কারণ এটি আমাদের সাহসী সৈন্যদের সমস্ত আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। এটি সেই সমস্ত সাহসী আত্মাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর দিন, যারা আমাদের জাতির জন্য তাঁদের জীবন দিয়েছেন। আমরা আমাদের সীমানাকে শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে পারি, তার পরিচায়কও এই দিনটি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!