ভারতে বাড়ছে ‘ওয়েট বাল্ব’ পরিস্থিতি

0 0
Read Time:4 Minute, 27 Second

নিউজ ডেস্কঃ কত ডিগ্রি তাপমাত্রায় মানুষের মৃত্যু হতে পারে? তাপের সঙ্গে যদি আর্দ্রতা মিশে যায়, তাহলে মানব দেহ কতক্ষণ তা সহ্য করতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। এক গবেষণায় উঠে এসেছে নতুন এই তথ্য।

বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, একজন সুস্থ মানুষ যদি একটানা ছয় ঘন্টা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় থাকেন, এছাড়া একশো শতাংশ আর্দ্রতা থাকলে ছয় ঘন্টায় মৃত্যু হতে পারে। আসলে এমন আবহাওয়া শরীর থেকে ঘাম বের হয়, কিন্তু বাষ্প আকারে বের হয় না। এর ফলে হিট স্ট্রোক হয়। অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ অচল হতে শুরু করে, তারপরেই মৃত্যু।

বিখ্যাত এক বিজ্ঞানী বলেছেন মানুষের শরীরের সহনশীলতা খুব বেশি নয়। তিনি ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় মারা যেতে পারেন। একে ওয়েট বাল্ব টেম্পারেচার বলা হয়ে থাকে। দক্ষিণ এশিয়া ও পারস্য উপসাগরে বছরে কয়েক ডজনবার এই ধরনের তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়ে থাকে।

ওই বিজ্ঞানী আরও বলেছেন, ভালো ব্যাপার হল ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা এবং অকশো শতাংশ আর্দ্রতা পৃথিবীর কোথাওও ২ ঘন্টার বেশি স্থায়ী হয় না। সেই তাপমাত্রাই যদি ছয় ঘন্টা থাকত তাহলে অনেক অসুবিধার মধ্যে পড়তে হত।

প্রত্যেকটি মানুষের শরীরের নিজেস্বতা রয়েছে। এর পাশাপাশি সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণও রয়েছে। কেউ পারলে কোনওভাবে নিজেকে বাঁচাতে পারে। যেমন শরীর ঠান্ডা রাখার ব্যবস্থা থাকলে মৃত্যু হবে না।

বিশ্বে উষ্ণায়ন যেভাবে হচ্ছে, তাতে তাপ বা আবহাওয়াজনিত কারণে আরও বেশি মানুষের মারা যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। জুলাই মাসকে মানব ইতিহাসে সব থেকে উষ্ণতম মাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যে কারণে বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন ভবিষ্যতে আরও জায়গায় ওয়েট বাল্বের তাপমাত্রার মতো ঘটনা আরও বেশি হবে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, গত ৪০ বছরে ওয়েট বাল্বের তাপমাত্রার ঘটনা দ্বিগুণের বেশি বেড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এই ধরণের ঘটনা বাড়ছে। আগামী কয়েক দশকে পৃথিবীর তাপমাত্রা ২.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়বে। সেই পরিস্থিতিতে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার সঙ্গে ১০০ শতাংশ আর্দ্রতার পরিবেশ তৈরি হবে।

যদিও ওয়েট বাল্বের কোনও তাপমাত্রা থাকে না। সেটাকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা আর ১০০ শতাংশ আর্দ্রতা ধরকে নেওয়া হয়। তবে সেখানে ৪৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা আর ৫০ শতাংশ আর্দ্রতার মধ্যেও একজন ব্যক্তির মৃত্যু হতে পারে।
এর পরীক্ষা করতে পেনসিলভেনিয়ে স্টেট ইউনিভার্সিটিতে কয়েকজন সুস্থ যুবকের ওপরে তাপমাত্রার ররীক্ষা করা হয়েছিল। দেখা গিয়েছে, শরীরের মূল তাপমাত্রা ৩০.৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসেই খারাপ হতে শুরু করে। এমনই তাপমাত্রার পরিস্থিতি তৈরি হচ্ছে ভারতে।

গত মাসে নেচার জার্নালে দক্ষিণ এশিয়ায় তাপপ্রবাহের ঘটনা ও ওয়েট বাল্বের ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এই তাপমাত্রা ছোট শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে বিপজ্জনক। কেননা বয়স্কদের ঘামের গ্রন্থি কমে যায়। এ কারণে তাঁদের ঝুঁকি বেশি।

Happy
Happy
0 %
Sad
Sad
0 %
Excited
Excited
0 %
Sleepy
Sleepy
0 %
Angry
Angry
0 %
Surprise
Surprise
0 %

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: Content is protected !!